বিশ্বখ্যাত আরবি ক্যালিগ্রাফারের ইন্তেকাল

বিশ্বখ্যাত আরবি ক্যালিগ্রাফার আব্বাস শাকির জুদি আল-বাগদাদি (৭৫) ইন্তেকাল করেছেন। মঙ্গলবার (২ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

ইরাকভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-সুমারিয়া নিউজ চ্যানেল সূত্রে জানা যায়, আব্বাস আল-বাগদাদি ইরাকের মুদ্রা, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সনদ ও নথিপত্রের নকশা করেছেন। মুসলিম বিশ্বে তিনি আরবি অক্ষরের প্রকৌশলী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

ক্যালিগ্রাফার আব্বাস আল-বাগদাদি ১৯৪৯ সালে ইরাকের বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেন। ইসলামী অলঙ্করণ ও আরবি ক্যালিগ্রাফিতে তার দীর্ঘ পদচারণ রয়েছে। ১৯৮৮ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি আরবি লিপিশিল্পীদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ সালে তাকে ‘মাসহাফে সাদ্দাম’খ্যাত পবিত্র কোরআনের অনুলিপি তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়। তখন তিনি নিজ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় পুরো কোরআনের অনুলিপি তৈরি করেন। পরবর্তী সময়ে ইরাক সরকার কর্তৃক তা প্রকাশিত হয়।

জাহাঙ্গীরের বিষয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না আ.লীগ: মায়া

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না আওয়ামী লীগ।

মঙ্গলবার দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমন্বয় টিমের বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ২৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতির নির্বাচনের আগে এ নির্বাচন দেশবাসীর জন্য আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ হওয়ার জন্য আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গাজীপুরের ভোটার সংখ্যা প্রায় ১২ লাখের কাছাকাছি, ৯টি থানা, ৪৮০ টি কেন্দ্র, ৫৭ ওয়ার্ড। একটা বিশাল এলাকা। নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ করতে গেলে বিশাল কর্মীবাহিনী দরকার। তাই আমরা গাজীপুরে সর্বস্তরের জনগণ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতার পক্ষের সব মানুষকে আমরা ঐক্যবদ্ধ করে এই নির্বাচনে জয়লাভ করতে চাই। ভোটের মধ্য দিয়ে আমরা জয়লাভ করতে চাই৷ সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ, আগুন সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে কেউ যেন নির্বাচনে ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য আমাদের কর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আওয়ামী লীগের সমন্বয় টিমের প্রধান সমন্বয়ক আরও বলেন, নির্বাচন পরিচালনার জন্য সেখানে আমাদের একটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকবে। সেখান থেকে আমরা এটা নির্বাচন পরিচালনা করব৷ নির্বাচন পরিচালনার জন্য থানা ভিত্তিক আমাদের কমিটি হবে। সেন্টার ভিত্তিকও কমিটি হবে। এবার স্তরে স্তরে আমরা কমিটিগুলো সাজাবো। ৪৮০ কেন্দ্রের মধ্যে বেশিরভাগ কমিটি হয়ে গেছে। আগামী ৯ তারিখের আগে নির্বাচনের সব কাজ আমরা শেষ করতে পারব বলে আশা করছি। প্রত্যেকে যেন ভোট দিতে পারে সেই ব্যবস্থা আমরা করতে চাই। আশা করি আমাদের নৌকার বিজয় হবে।

কলুষিত বিচার বিভাগ

লিখেছেন কামরুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য থেকে
আইনের শাসন আর এর নানাদিক নিয়ে কথা বলতে গেলে গা কেমন করে যেন গুলিয়ে আসতে থাকে। যেই দেশে এমন এক নায়ক দ্বারা শাসিত তাদের নিয়ে কথা বলতেও আমার রুচিতে বাঁধে। দেশের বিচার বিভাগ নিয়ে আজকে কথা বলবো।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক তাহেরের মেয়ে ১৬ বছর পর বাবার হত্যার বিচার পেয়েছেন। তার আইনজীবী হওয়ার গল্প সবার মুখে মুখে ফিরছে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, যেই মামলার প্রাথমিক বিচারে দুই বছরের মধ্যে শেষ হয়ে গেল, সেই মামলার চূড়ান্ত রায় আসতে কেন ১৪ বছর লাগলো?
আদালতের রায় বলছে অধ্যাপক তাহেরকে হত্যা করার তাঁরই সহকর্মী মহিউদ্দীন। ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ৩ তারিখ তাঁর মরদেহ উদ্ধার হয়। এক সপ্তাহের মধ্যে পুলিশ তদন্ত করে ডঃ মহিউদ্দীনসহ সকল অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষককে গ্রেপ্তার করতে সরকারের সবুজ সংকেত লাগে। ডঃ মহিউদ্দীন তৎকালীন সরকারের সমর্থক হলেও পার পাননি। দ্রুততম সময়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয় সরকারের অনুমতি পেয়েই। চার্জশিটও দেয়া হয়।
২০০৮ সালের মে মাসে মামলার রায় হয়। প্রধান আসামীদের যাবজ্জীবন হয়, শিবিরের এক নেতা সালেহী, “প্রগতিশীল” শক্তি বারবার যার ফাঁসি চাচ্ছিল, দেখা গেল যে সে খালাস পেয়ে গেল।
এরপর আসলো আওয়ামী লীগের সরকার, ২০০৯ সালে। এরপর প্রায় পাঁচ বছর পর ২০১৩ সালে হাইকোর্টের রায় এল। সেই রায় গেল আপীল বিভাগে। আপীল বিভাগ চূড়ান্ত রায় দিল তারও নয় বছর পর ২০২২ সালে।
এই হচ্ছে আওয়ামী লীগের বিচার বিভাগ। একটা মামলা, যেটার প্রাথমিক বিচার দুই বছরে করা গিয়েছিল, বিএনপি এবং পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। সেই বিচার শেষ করতে এদের লাগলো ১৪ বছর।
এখন এদের মিডিয়া ১৬ বছর পর বিচার পাওয়ার কথা প্রচার করছে, অথচ প্রশ্ন করছে না যে একটা মামলা শেষ করতে কেন আওয়ামী আদালতের ১৪ বছর লাগলো।
প্রশ্নটার আংশিক উত্তর আমরা জানি। এই দেশের আদালত ও বিচার ব্যবস্থাকে চব্বিশ ঘণ্টা এই সরকার ব্যস্ত রাখে দেশের বিরোধী দলকে শায়েস্তা করতে আর বিভিন্ন সরকারি অন্যায়কে আদালতের কাঁধে বন্দুক রেখে সমাধা করতে। তাই সাধারণ মানুষের মামলা এভাবে যুগের পর যুগ পড়ে থাকলেও কারও কোন ভ্রুক্ষেপ থাকে না।
আমরা তাই বারবার বলে আসছি দেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার কথা। দেশে যদি গণতন্ত্র থাকে, তাহলে লক্ষ লক্ষ মানুষকে বিচারের জন্য এভাবে যুগের পর যুগ বসে থাকতে হবে না। জনগণের সরকার সবার দ্রুত বিচার পাওয়ার অধিকার নিশ্চিত করতে পারবে।
আওয়ামী লীগের মত দল যতদিন ক্ষমতায় থাকবে, এরা ততদিন বিচারব্যবস্থাকে কলুষিত করবে।

সুবর্ণার জন্য চিন্তার লিস্ট

কামরুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য থেকে
সুবর্না মুস্তাফা যে একজন সংসদ সদস্য এটাই আমি জানতে পেরেছি অনেক বছর পরে। এ এক আজব সংসদ আমাদের। নিশি ভোটের নির্বাচনের সাংসদ। জানা হয়না কিছুই।
সুবর্ণা মোস্তফা সংসদে জিজ্ঞেস করেছেন, ‘বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে একজন নারী টিপ পরতে পারবে না।’ ওনার বক্তব্য সমর্থনযোগ্য। কেউ টিপ পরুক বা হিজাব পরুক, সরকারের সেইটা নিয়ে মাথাব্যাথার কোন কারণ নাই।
এই প্রসঙ্গে আমি আরও কিছু প্রশ্ন রেখে যাচ্ছি যেগুলো সুবর্ণা মোস্তফা সংসদে দাঁড়িয়ে করতে পারেন-
০১) বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে মাত্র তিন বছরে এক হাজার মানুষকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী খুন করবে?
০২) বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে ছয়শোর বেশি নাগরিককে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী গুম করবে?
০৩) বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে দেশ থেকে আওয়ামী লীগের লোকজন ছয় লক্ষ কোটি টাকা পাচার করবে?
০৪) বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে দেশের মানুষকে বেশি দামে তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ, চাল-ডালসহ সকল খাবার বেশি দামে কিনতে সরকার বাধ্য করবে?
০৫) বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে একজন কিশোরকে আওয়ামী লীগের নাম বিকৃত করায় দশ বছরের জেল দেয়া যাবে?
০৬) বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে দিনের ভোট রাতে করা যাবে?
০৭) বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে সরকারি কর্মকর্তা সরকারের কোন সমালোচনামূলক পোস্ট শেয়ার করলে তাকে চাকরিচ্যূত করা যাবে?
০৮) বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যা মামলায় বছরের পর বছর নিঃসঙ্গ অবস্থায় কারাবন্দী রাখা যাবে?
০৯) বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে জয়ের প্রজেক্টের নামে দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা লুটপাট করা যাবে?
১০) বাংলাদেশের কোন সংবিধানে, কোন আইনে লেখা আছে যে দেশের মানুষ যখন খেতে না পেয়ে রাস্তায় ঘুরছে তখন কোটি কোটি খরচ করে এআর রহমানের কনসার্ট আয়োজন করতে হবে?
১১) সবচেয়ে বড় কথা, কোন সংবিধানের কোন আইন অনুযায়ী আপনারা নাইটকুইন এমপি হয়েছেন?
এগুলো চিন্তা করে দেখতে পারেন কিন্তু সুবর্ণা মোস্তফা।

আওয়ামীলীগ নেতারা মূর্খ

কামরুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য থেকে
আওয়ামী মূর্খতার আসলে কোন সীমা কিংবা পরিসীমা নাই। এদের যা ইচ্ছে এরা তা বলে। এদের যা ইচ্ছে এরা তা করে। এবং মজার ব্যাপার হচ্ছে এরা এদের মূর্খতা ঢাকার সামান্যতম চেষ্টাও আবার করে না।
আপনি যদি আওয়ামী লীগার হয়ে থাকেন, আপনার তিনটা পিএইচডি থাকলেও আপনি একজন মূর্খ- এই সত্যটা বারবার প্রমাণ করাটা আওয়ামী লীগ নেতাদের অভ্যাসে পরিণত হয়ে গেছে।
আওয়ামী লীগ দুইটা একতরফা এবং জোরজবরদস্তির নির্বাচন করে মানুষকে বুঝ দেয়ার চেষ্টা করতেছে যে ১৯৯৬ সালে বিএনপিও একতরফা নির্বাচন করছিল, তাই তাদের সব নির্বাচন সংক্রান্ত অপরাধগুলা হালাল।
এই ব্যাপারে তারা The New York Times-এর একটা খবর ব্যবহার করতেছে Bangladesh Facing an Election Crisis শিরোণামের। এখন দেখি সেই খবরে কী কী বলা হইছে-
‘Mrs. Zia and (…) Sheik Hasina Wazed, have failed to settle a dispute that has been marked by streets protests, general strikes, bombings and perhaps a score of deaths since an opposition walkout from Parliament in March 1994.’
অর্থাৎ ১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগ, তাদের সেই সময়ের মিত্র জামাতে ইসলামী আর জাতীয় পার্টির ১৪০ জনের বেশি এমপি নিয়ে সংসদ থেকে পদত্যাগ করে হরতাল-বোমাবাজি করে যে সংকট শুরু করছিল তা সমাধান করা যায় নাই।
আপনারা জানেন, শেখ হাসিনার বাবা শেখ মুজিব যে সংবিধান বানায়ে গেছে, সেই সংবিধানে আছে যে সংবিধান পরিবর্তন করতে হইলে দুই-তৃতীয়াংশ এমপির সমর্থন লাগে। শেখ হাসিনা তখন জামাত আর জাতীয় পার্টিকে নিয়ে সংসদ থেকে বের হয়ে যাওয়ায় তখন দুই-তৃতীয়াংশ এমপিই সংসদে ছিল না, তাই হাসিনার মন মত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বিল পাশ করাতে একটা নতুন নির্বাচন করে সংসদের দুইশো এমপির সমর্থন দরকার ছিল।
বেগম জিয়া তখন উদারতার সাথে হাসিনা এবং তার মিত্রদের তৈরি সমস্যা সমাধানের জন্য সেই নির্বাচন করতে বাধ্য হইছিলেন। নাহলে তো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিলই পাশ করানো যেত না।
বেগম জিয়া কতটা উদার ছিলেন তার প্রমাণ আছে এই রিপোর্টেই-
‘Mrs. Zia has offered to step down before the polls, but has insisted that executive power in the election period rest with the figurehead President, Abdur Rahman Biswas.’
অর্থাৎ একটা ভালো নির্বাচনের জন্য বেগম খালেদা জিয়া রাষ্ট্রপতির হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতেও চাইছিলেন। কিন্তু শেখ হাসিনার দাবী ছিল, ‘elections be held under a neutral “caretaker” government’, আওয়ামী লীগের প্রোপাগান্ডার সেই পেপার কাটিং-এ এইটা স্পষ্ট লেখা আছে।
বেগম জিয়ার উদারতার জবাবে আওয়ামী লীগের অক্সফোর্ড পাশ এক নেতা কী বলছে দেখেন সেই প্রতিবেদন থেকে- “What you will see will not be a whimper — it will be a series of bangs,” said Abu Hassan Chowdhury, an Oxford-educated lawyer who is a close aide to Sheik Hasina.
অর্থাৎ আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করবে না, তারা একের পর এক বোমাবাজি করবে।
আওয়ামী লীগের চামচাদের বলবো, আপনারা একটা কিছু শেয়ার করার আগে ভিতরে কী আছে একটু পড়ে নিলে ভালো হয়। দেশের সব মানুষ তো আপনাদের মত দশটাকায় কমেন্ট করা মূর্খ না।
পুরো প্রতিবেদন পাবেন এখানে- https://www.nytimes.com/…/bangladesh-facing-an-election…

শেখ হাসিনার ক্রমাগত মিথ্যে তথ্য

কামরুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য থেকে
শেখ হাসিনার ক্রমাগত মিথাচার আমাদের হতবাক করে। এই মহিলা আসলে জানেইনা সত্য কোনটা। এবার সে একজন খালাশ পাওয়া ব্যক্তিকে ধরে এনে অপরাধী বানিয়ে দিয়েছে। অবশ্য খালাশ পাওয়া অপরাধী তো অনেক কিছু, যেখানে অপরাধ করেনি এমন ব্যাক্তিদেরই ফাঁসী হয়।
শেখ হাসিনা কিছুদিন আগে ছাত্রলীগের অনুষ্ঠানে প্রমাণ দিয়েছেন তার ইতিহাসের দৌড় কত দূর। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে কোন সেক্টরের কমান্ডার কে ছিলেন, এইটুকু ব্যাসিক ধারণায় যে হাসিনার নাই, এমন আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব, যারা মুক্তিযুদ্ধের নয় মাস ভারতে পালায়ে ছিল তাদেরও যে কারও নাই, এইটা প্রমাণিত সত্য।
তবে মুক্তিযুদ্ধের পরের ইতিহাসও যে এরা ঠিকমত জানে না এইটাও এখন বোঝা যাচ্ছে। জাতির নাতি কয়দিন আগে বলছে বেগম জিয়া নাকি জেল থেকে হত্যা মামলার আসামীকে বের করে রাষ্ট্রদূত বানাইছে। এরপর থেকে আওয়ামী ছাগলের পালও সেই কথা এমনভাবে বারবার বলতেছে যেন সেইটা সত্য হয়ে যায়।
এদিকে সত্য কথা হচ্ছে যে মেজর (অব:) খায়রুজ্জামানের কথা বলা হচ্ছে তাকে বহু আগেই জেল হত্যা মামলার দায় থেকে খালাস দেয়া হইছিল এবং তার কোন সম্পৃক্ততা পাওয়া যায় নাই সেই হত্যার সাথে। এই ব্যাপারে জেল হত্যা মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়েই বলা আছে। এমনকি ২০১৫ সালে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তাদের আজ্ঞাবহ সুপ্রিম কোর্ট থেকে যে জেল হত্যা মামলার রায় দেয়া হইছিল, সেইখানেও তো তাকে দায়ী করা হয় নাই। সরকারপক্ষ, মানে আওয়ামী লীগ সরকারের রাষ্ট্রীয় আইনজীবীরা হাজার চেষ্টা করেও নিম্ন আদালতে খালাস পাওয়া মেজর (অব:) খায়রুজ্জামানকে হাইকোর্ট বা সুপ্রিম কোর্ট থেকে অপরাধী প্রমাণ করতে পারে নাই।
এখন আওয়ামী লীগ এবং জাতির নাতি কী চায়? খালাস পাওয়া মানুষকে বিদেশ থেকে ধরে এনে ফাঁসিতে লটকায়ে দিতে হবে?
আমি বুঝতেছি আওয়ামী বিচারব্যবস্থা এইভাবেই কাজ করে, কিন্তু অন্য সরকারের বিচারব্যবস্থা তো আওয়ামী লীগের কথামত কাজ করবে না, তাঁদের নিজেদের স্বাধীনতা অনুসারেই কাজ করবে।
তাই মিথ্যা মামলায় খালাস পাওয়া খায়রুজ্জামানকে রাষ্ট্রদূত করাকে কোনভাবেই জেল থেকে বের করে রাষ্ট্রদূত বানানো বলা যায় না। এখন এই যুক্তি দিলে তো বলতে হয়, মইন ইউ আহমেদ শেখ হাসিনাকে জেল থেকে বের করে প্রধানমন্ত্রী বানাইছে, কারণ হাসিনার বিরুদ্ধেও পল্টন হত্যা মামলা হইছিল। খায়রুজ্জামান তো আদালত থেকে খালাস পেয়ে তারপর চাকরিতে পুনর্বহাল হয়েছিলেন, কিন্তু শেখ হাসিনা তো হত্যা মামলার আসামি হিসেবে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী হয়ে গেছিলেন।
এইটুকু ব্যাসিক যেই পার্টির নেতা-কর্মী, এমনকি মন্ত্রীরাও বোঝে না, তাদের হাতে পড়লে এই দেশের বিচারব্যবস্থার কী হাল হওয়ার কথা, সেইটা সহজেই বোঝা যায়।
মামলার রায় দেখতে চাইলে- https://bdnews24.com/…/supreme-court-publishes-full…
See translation
May be an image of text
830
15 comments
53 shares
Like

Comment
Share

শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়ার মর্ধ্যে পার্থক্য

কামরুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য থেকে
অনেকেই আমাদের দেশের রাজনৈতিক নেতা নেত্রীদের মধ্যে নাকি পার্থক্য খুঁজে পান না। সবাইকেই নাকি একই লাগে। এই কথাটা শুনেই আসলে মনে হয় এদের বিবেচনাবোধের অবস্থা ভয়াবহ।
বেগম খালেদা জিয়া আর শেখ হাসিনার মধ্যে পার্থক্য কী যারা জানতে চান, তাঁদেরকে বলবো শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনাবলির দিকে একটু খেয়াল করতে।
২০০২ সালে ঢাকা বিশবিদ্যালয়ের ভিসি বীর মুক্তিযোদ্ধা আনোয়াররুল্লাহ চৌধুরী, যিনি ১৯৭১ সালে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষক সরকারের দালালি করছিল কিংবা চুপচাপ সময় কাটিয়ে দিচ্ছিল ক্যাম্পাসে তখন অস্ত্র নিয়ে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করেছিলেন, শিক্ষার্থীদের উপর হামলার কোন নির্দেশ না দিলেও শুধু ভিসি হিসেবে শামসুন্নাহার হলে পুলিশ ঢোকার অনুমতি দেয়ার অপরাধে পদত্যাগ করেছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হওয়ার ৫ দিনের মাথায় বেগম খালেদা জিয়া তাঁকে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বেগম জিয়া যেহেতু একজন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তাই তিনি যখনই দেখেছেন কোন দায়িত্বশীল ব্যক্তি জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে, তখনই সেখানে ব্যবস্থা নিয়েছেন।
অন্যদিকে শেখ হাসিনাকে দেখেন। এই হাসিনা বুয়েটের ভিসির পক্ষে ২০১২ সালে সাফাই গেয়েছে, যে ছাত্রলীগের নেতাদের বিনা পরীক্ষায় পাস করিয়ে দিত। এমনকি তখন বুয়েটের ছাত্রীদের ব্যাপারে প্রচন্ড মিসোজিনিস্ট বক্তব্যও দিয়েছিল হাসিনা। হাসিনার বদৌলতে বুয়েটের সেই ভিসিকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়নি।
হাসিনার আশীর্বাদে শাহজালালে শিক্ষার্থীদের উপর গুলি করার নির্দেশ দেয়া ভিসি এখনো ক্ষমতা আঁকড়ে আছে। এদিকে হাসিনা কী করেছে দেখেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের এই আন্দোলনের পক্ষে যে প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা সমর্থন দিচ্ছিল, তাদেরকে পুলিশ দিয়ে তুলে নিয়ে গেছে বাসা থেকে।
এই হচ্ছে বেগম খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনার মধ্যে পার্থক্য। ভালো করে বুঝে নিয়েন।

আল জাজিরা সম্পর্কিত প্রবন্ধ প্রকাশের অভিযোগে রাষ্ট্রদোহীতার মামলায় অভিযুক্ত ২৮ঃকঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আহবান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়কে

আল-জাজিরা ও মুশতাক আহমদ এর কারাগারে মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রতিক্রিয়া দেশে-বিদেশে  এখনো চলমান। এ-দুটো বিষয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মন্তব্য আহবান করে অনলাইন সংবাদপত্রিকা দৈনিক নবযুগ ফেব্রুয়ারীর ২৭ তারিখে। ২২শে মার্চ  ‘আল জাজিরার তথ্যচিত্র, কারাগারে মুশতাকের মৃত্যু ও প্রবাসীদের ভাবনা’ প্রকাশ করে দৈনিক নবযুগ যেখানে অশ্রাব্য ভাষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিচার বিভাগের বিচারকদের বিশেষ করে সাইবার ট্রাইনবুন্যালের বিচারককে আক্রমণ করা হয় এবং হত্যার হুমকি দেয়া হয়। সবচেয়ে আতঙ্ক-জাগানিয়া ব্যাপার ছিল এই লেখায় অনেকেই মত প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশে বহির্বিশ্বের বহিরাক্রমণ করা উচিত আওয়ামী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করবার জন্যে যা নিশ্চিতভাবেই রাষ্ট্রের স্বাধীনতা খর্ব করবে এবং রাষ্ট্রদোহীতার দোষে এরা প্রত্যেকেই দোষী।
 
 

এই পর্যবেক্ষণের সাথে সম্পূর্ণভাবে সহমতকারী এডভোকেট মোঃ রবিউল আলম জুয়েল, যিনি বঙ্গবন্ধু আইন ছাত্র পরিষদ এর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, বাদী হয়ে গত ২৮ মার্চ রাজধানীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে  রাষ্ট্রদোহীতা ও অন্যান্য অভিযোগে ফৌজধারী আইনের আওতায়  দৈনিক নবযুগ-এর প্রকাশক, সম্পদাক ও উক্ত প্রবন্ধে প্রমুখ মন্তব্যকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আপেল সাহেব বলেন – ‘এধরণের প্রকাশিত বক্তব্য বাংলাদেশের জন্যে খুবই ক্ষতিকর। বাংলাদেশীদের বিভিন্ন ইস্যুতে অভিযোগ থাকতেই পারে। কোনো সরকার-ই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। কিন্তু বহিরাক্রমণের জন্যে আন্তর্জাতিক মহলকে এভাবে উন্মুক্তভাবে তদবির করা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা অসীম নয়। এটি একটি কোয়ালিফায়েড অধিকার। রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব এইক্ষেত্রে সবসময় অগ্রাধিকার পাবে। আমি মনে করি এটী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মামলা এবং আমরা আনন্দিত যে বিজ্ঞ আদলাত এই মামলা গুরুত্ব অনুধাবন করে এটি আমলে নিয়েছেন এবং আমরা এখন ডিসি অফিসের সহযোগিতায় এই মামলার তদন্ত পর্যায়ে যাবো আশা করছি।’

আদালত সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করে এবং প্রাসঙ্গিক অভিযোগ পর্যালোচনা করে অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটান  ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হাসিবুল হক মামলাটি আমলে নেন (সি.আর. – ১২০/২০২১) এবং  বাদীপক্ষকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়কে অন্তর্ভুক্ত করে অভিযোগ পুনর্গঠন ও জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন।  

  দৈনিক নবযুগ এর সম্পাদক ইসরাত রশিদ সংক্ষিপ্ত জবাবে জানান – ‘আমরা একটি মন্তব্য জরিপ চালিয়েছি এবং এই মন্তব্য জরিপে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দৃষ্টিভঙ্গী উঠে এসেছে। নিজের দেশের নাগরিকদের মন্তব্য আওয়ামী সরকার ও এর সমর্থকদের ভালো না-ই লাগতে পারে, কিন্তু এর মানে তো এ নয় যে – সরকার ও বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয়ে মানুষ তাদের নিজেদের চিন্তা মুক্তভাবে তুলে ধরতে পারবেনা! বাংলাদেশে মুক্তচিন্তার স্বাধীনতা তীব্রভাবে সঙ্কুচিত এবং এই ধরণের মামলা সুস্থ ও অবাধ সাংবাদিকতার পরিপন্থী!’  

এটি পরিলক্ষিত যে এই প্রবন্ধে বেশ কিছু বিএনপি-জামায়াত এর নেতা-কর্মী-সমর্থকদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে মন্তব্য-জরিপে এবং আওয়ামী লীগ বা সরকার-সমর্থিত কোনো মন্তব্য দেখা যায়নি।  আদালত ফাইলের নথি ঘেটে দেখা যায়  মামলার বিবাদীরা হলেন – শিপলু কুমার বর্মণ, ইসরাত রশিদ (সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), আলী আমিন (প্রকাশক, দৈনিক নবযুগ), জনি জোসেফ ডি কস্তা (সহ-সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), নুরুল হুদা (সিনিয়র সহ সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), মুকিত চৌধুরী, মোঃ ইমরান হোসাইন, বিপ্লব পাল, নূর মিয়া, আহসানুল হুদা সরকার, মোঃ জাকির হোসাইন, মিজানুর রহমান, উম্মা কুলসুম নার্গিস বানু, আহসানুল কবির, নুরুল ফারুক শাকের, মো; বিন রাজিম, মোঃ রুকন মিয়া, মোঃ আশিফ হোসাইন, মোঃ মাসুম সাজ্জাদ, মোঃ আরাথ হোসেন রনি, মোঃ শহীদুল ইসলাম জায়গীরদার, মোঃ ওবায়দুর রহমান খান, মোঃ আল-আমিন কায়সার, মোঃ সাব্বির হোসাইন প্রমুখ।

মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়-এর জবাব প্রাপ্তির পর। 

৪৭ বছর ধরে বিনা পয়সায় রান্না করেন

বিয়েবাড়ি। বড় বড় হাঁড়ি, কড়াইয়ে রান্না চাপানো হয়েছে। বড় হাতা নিয়ে মাংস নাড়ছেন রাঁধুনি। বিয়েবাড়িতে এমন আয়োজন সবারই চোখে পড়বে। বিয়ের আসরে শত শত মানুষের জন্য ভালো রান্নার ভার যাঁর কাঁধে থাকে, তাঁকে হতে হয় চৌকস। এমনই একজন রাঁধুনি জামালপুরের মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন। তিনি শখের রাঁধুনি। শিক্ষকতা করতেন। এখন অবসরে। যেকোনো অনুষ্ঠানে যান স্যুট-বুট পরে। এরপর কাপড় পাল্টে নেমে যান রান্নার কাজে। ১৯৭৩ সাল থেকে তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রান্না শুরু করেছিলেন। এমনকি নিজের বিয়ের অনুষ্ঠানের রান্নাও নিজেই করেছিলেন তিনি। এখনো বিনা পারিশ্রমিকেই করে যাচ্ছেন তাঁর এ ভালোবাসার কাজ।

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন পরিচিত তোহা নামেও। শিক্ষক হিসেবে পরিচয়ের পাশাপাশি তাঁর রান্নার সুনামও জামালপুরের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। ১৯৭৩ সাল থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রান্না করেন তিনি। রান্নার সময় হিন্দু বা মুসলমানের ভেদাভেদ করেন না তিনি। এ পর্যন্ত বিনা পারিশ্রমিকে হিন্দু পরিবারের বিয়েসহ বহু অনুষ্ঠানে রান্না করেছেন। শখে রান্না করলেও রান্নাটাকে তিনি শিল্প এবং রান্নার মধ্য দিয়েই তিনি জনসেবা করছেন বলে মনে করেন।

কোমর বেঁধে রান্নায় নেমে পড়েছেন রাঁধুনি জামালপুরের মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন

কোমর বেঁধে রান্নায় নেমে পড়েছেন রাঁধুনি জামালপুরের মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন
ছবি: মানসুরা হোসাইন

জামালপুর সদরের নরুন্দি উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৯৮৩ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত মোয়াজ্জেম হোসেন শিক্ষকতা করেন। ১৯৮৬ সালে নিজের বিয়ে, পরে দুই ছেলেমেয়ের বিয়ের রান্নাও নিজেই করেছেন মোয়াজ্জেম হোসেন। জামালপুরে সম্প্রতি একটি পারিবারিক অনুষ্ঠানে রান্না করতে গিয়েছিলেন মোয়াজ্জেম হোসেন। সেখানেই কথা হয় তাঁর সঙ্গে।

মোয়াজ্জেম হোসেন বললেন, ‘আমার বিয়ের সময় সবাই বলল, তুই ছাড়া কে আর রান্না করবে? খাসির কোর্মা, গরুর রেজালা, মুরগির রোস্ট রান্না করলাম। দই নিজেই বানাই। বউয়ের বাপের বাড়ির লোকজন রান্না খেয়ে মহা খুশি। তাঁরা তো আর আগে জানতেন না মেয়ের জামাই রান্নাও পারে।’

১৯৭৩ সালে রান্নার শুরু সম্পর্কে মোয়াজ্জেম হোসেন জানালেন, ‘শাহ মোহাম্মদ মোদক নামে পরিচিত একজনের বিয়েতে বাবুর্চির আসার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে বাবুর্চি না আসায় সবাই বিপাকে পড়ে যান। তখন তিনি রান্না করবেন বলে নিজেই জানিয়েছিলেন। সেই শুরু। বর্তমানে ৬৬ বছর বয়সেও থেমে নেই রান্নার কাজ।’

মোয়াজ্জেম হোসেনের মেয়ে মাহবুবা আক্তার বললেন, ‘বাবাকে ১ হাজার ২০০ মানুষের রান্নার লিস্ট দেখিয়ে নিলেন। বাজারের লিস্ট করা থেকে শুরু করে সবই বাবা নিজে তদারক করেন। বাবা যে স্কুলে শিক্ষকতা করতেন, সেই স্কুলেই আমি পড়েছি।

বাবার রান্নার প্রশংসা করতেন সবাই। বাবার রান্নার কাজ ভালো লাগে। তবে বয়স হওয়ার কারণে রান্না করতে গেলেই অসুস্থ হয়ে যান। কয়েক দিন আগেও সেন্সলেস হয়ে যান। তাই আমরা এখন আপত্তি করি।’

শখের বশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রান্না করেন মোয়াজ্জেম হোসেন

শখের বশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রান্না করেন মোয়াজ্জেম হোসেন
ছবি : সংগৃহীত

মোয়াজ্জেম হোসেনের একটি ব্যাগ তৈরিই থাকে। ব্যাগে রোস্ট ভাজার জন্য ঝাঁঝরি, পানি ও তেল মাপার জন্য একটি গ্লাস, খাবার নাড়া দেওয়ার জন্য বড় একটি হাতা নিয়ে যান। নিজেই এগুলো বানিয়ে নিয়েছেন। রান্নার জন্য গেলে সারা দিনের জন্য যেতে হয়। রান্না শেষে খাবার বেড়ে দেওয়ার দায়িত্বও পালন করতে হয়। খাবার কম পড়ল কি না, তা দেখার জন্য সবার খাওয়া শেষ হলে ছুটি পান তিনি।

স্ত্রী হোসনে আরা বেগম ভালো রান্না করেন, তাই বাড়ির রান্নাঘরে তেমন একটা ঢুকতে হয় না মোয়াজ্জেম হোসেনকে। ছেলেমেয়েরা রান্নার বিষয়টিতে তেমন উৎসাহী নন। তবে ছেলের বউয়ের রান্না ভালো বলে জানালেন মোয়াজ্জেম হোসেন।

মোয়াজ্জেম হোসেন এখনো একাই চার মণ, পাঁচ মণ মাংস রান্না করে ফেলেন। রান্নায় সহকারী থাকে, তবে অন্যদের চেয়ে নিজে কাজ করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন। জানালেন, গ্রামাঞ্চলের বিয়েতে সাধারণত গরুর মাংস, পোলাও, কোর্মা, জর্দা, মুরগির রোস্ট, মুরগির কোর্মা বেশি রান্না হয়।

রান্নার পাশাপাশি খেলাধুলা করতেন মোয়াজ্জেম হোসেন। সভা-সমিতি, মসজিদের সেবা,আচার–অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়াসহ দিনের বেশির ভাগ সময়ই তাঁকে ব্যস্ত থাকতে হয়। সন্ধ্যার পরে গান গাইতে পছন্দ করেন, তবে সুর-তাল-লয় নিয়ে তেমন একটা চিন্তা করেন না। এসবের পাশাপাশি বাংলা, বিহার ও ওডিশার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলার নাটকের ডায়ালগসহ বিভিন্ন নাটকের ডায়ালগ মুখস্থ। চাচার পরিচালিত নাটকসহ পাঁচ থেকে ছয়টি নাটকে অভিনয়ও করেছেন তিনি।

যেকোনো অনুষ্ঠানে মোয়াজ্জেম হোসেন যান স্যুট-বুট পরে। পরে তিনি রান্নার জন্য পাল্টে নেন কাপড়

যেকোনো অনুষ্ঠানে মোয়াজ্জেম হোসেন যান স্যুট-বুট পরে। পরে তিনি রান্নার জন্য পাল্টে নেন কাপড়

মোয়াজ্জেম হোসেন বললেন, ‘রান্নাটা একটা শিল্প। জনগণের কল্যাণে কাজে লাগাতে সবারই রান্নাটা শেখা দরকার। কিন্তু সেভাবে কেউ এগিয়ে আসে না। নিজের ছেলেমেয়েদেরও এ বিষয়ে উৎসাহী করতে পারলাম না। গ্রামের বিয়েতে শহর থেকে বাবুর্চি আনতে হলে চার থেকে পাঁচ হাজার টাকা লাগে। কোনো কোনো পরিবারের জন্য এ টাকা ব্যয় করা কঠিন হয়ে যায়। দরিদ্র পরিবারে কারও বিয়ের কথা শুনলে রান্নার কাজটা নিজের আগ্রহেই করি। রান্না করে টাকা নিলে জীবনে বহুত টাকা কামাইতে পারতাম। তা করি নাই। এটাকেই আমি মানবসেবা মনে করি।’

এ পর্যন্ত রান্না করতে গিয়ে একবারই রান্না নষ্ট হয়েছিল বলে জানালেন মোয়াজ্জেম হোসেন। বললেন, আগে বড় কড়াইয়ে রান্নার চল ছিল। রান্না শেষে কড়াইয়ের হাতলের মধ্যে বাঁশ ঢুকিয়ে কড়াই চুলা থেকে নামাতে হতো। রান্নার শেষ পর্যায়ে হুট করে তুমুল বৃষ্টি নামে। বাঁশ আনতে আনতে রান্নাটাই নষ্ট হয়ে যায়।

রান্না ভালো হয়েছে, এ প্রশংসাবাণী বেশি শুনেছেন মোয়াজ্জেম হোসেন। বললেন, ‘রান্না ভালো হলে আমিও মনে তৃপ্তি পাই। একেকটা অনুষ্ঠানে ৩০০–৫০০ জন মানুষ খায়। ব্যতিক্রম তো থাকেই। কারও কাছে হয়তো রান্নাটা ভালো লাগে না। তবে গড়ে রান্নাটা ভালো হয়েছে বলেই বেশির ভাগ মানুষ জানান।’

করোনার প্রণোদনায় শ্রমিকের কতটুকু লাভ?

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজের তথ্যমতে, নিকট অতীতে তৈরি পোশাকশিল্প খাতের প্রায় ৩ লাখ ২৪ হাজার শ্রমিক চাকরি হারিয়েছেন। সমসাময়িক কালে এই খাতের প্রায় ২০০০ কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। অবশ্য বন্ধ হওয়া কারখানাগুলোর বেশির ভাগই উপচুক্তি বা সাব-কন্ট্রাক্ট নির্ভর উৎপাদনে নিয়োজিত ছিল।

বিগত ২০২০ সালের মার্চ মাসে করোনা শুরু এবং তৎপরবর্তী সময়ে সরাসরি ছাঁটাই হয়েছেন প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক। তাঁরা নিকট অতীতে বন্ধ হয়ে যাওয়া প্রায় ৯০টি কারখানায় নিয়োজিত ছিলেন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ আরও বলছে, করোনাকালে ৫৬ শতাংশ তৈরি পোশাকশ্রমিক নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনতে দেনার সম্মুখীন হয়েছেন এবং তাঁদের ৭২ শতাংশ শ্রমিকই চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে পারেননি।

বাংলাদেশ গার্মেন্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইএ) তথ্যমতে, বর্তমানে বাংলাদেশে প্রায় ৫ হাজার কারখানায় প্রায় ৪০ লাখ মানুষ কাজ করছেন। মহামারির শুরুতে মালিক পক্ষসহ অন্যদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার কালবিলম্ব না করে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা তহবিল ঘোষণা করে। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে তা আরও বর্ধিত করে।

মালিকেরা ন্যূনতম এবং সহজ শর্তে ঘোষিত তহবিল থেকে ঋণ নেন মূলত কারখানাশ্রমিকদের মজুরি পরিশোধের কথা বলে। করোনা মহামারি শুরুর প্রাক্কালে জনমত এরূপ প্রণোদনার পক্ষেই ছিল ধরে নেওয়া যায়। কেননা সে সময় মনে করা হয়েছিল, করোনার প্রভাব অন্যান্য খাতের মতো পোশাক খাতেও দীর্ঘমেয়াদি হতে পারে। শুরুতে অন্যান্য খাতের মতো তৈরি পোশাক কারখানায়ও ছুটি ঘোষণা করা হয়। যদিও খুব অল্প সময়ের মধ্যেই এসব কারখানা পর্যায়ক্রমে খুলে দেওয়া হয়। আমরা দেখেছি, সে সময় কীভাবে শ্রমিকেরা দূরদূরান্ত থেকে হেঁটে, ভ্যান-রিকশায় চড়ে অমানুষিক পরিশ্রম করে রাজধানীতে ফেরত এসেছিলেন। সে সময় কারখানা মালিক পক্ষ এ জন্য বেশ সমালোচনারও মুখোমুখি হয়েছিল।

পরবর্তী সময়ে দেখা গেছে, মালিক পক্ষ প্রণোদনা তহবিল বাড়ানো, ঋণ পরিশোধের মেয়াদ বৃদ্ধি প্রভৃতি সুবিধার জন্য পুনরায় সরকারের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে। সরকার বিশাল শ্রমিক গোষ্ঠীর স্বার্থের কথা ভেবে অনেক ক্ষেত্রেই নমনীয় থেকেছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, প্রণোদনায় ছাড় করা তহবিলের পুরোটা ব্যবহৃত হয়নি।

প্রশ্ন হলো, শ্রমিক স্বার্থে সরকারের ত্বরিত মজুরি তহবিল গঠন ও প্রণোদনা সহায়তার অন্য কোনো দক্ষ বিকল্প ছিল কি না? আপৎকালীন বিবেচনায় তড়িঘড়ি মজুরি তহবিল গঠনে সরকার ভূমিকা নিয়েছিল বৃহত্তর শ্রমিক স্বার্থের কথা ভেবেই। সত্যিই যদি মাসের পর মাস কারখানা বন্ধ থাকত, তাহলে ছদ্ম বেকারত্বের কশাঘাতে এমনিতেই টালমাটাল অর্থনীতিতে আরও গভীর ক্ষত সৃষ্টি হতো। শঙ্কা বিবেচনায় তাই আপৎকালীন প্রণোদনা তহবিলের উপযোগিতা ছিল।

এটাও ঠিক, ২০২০ সালে পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় তৈরি পোশাক রপ্তানি ১০ শতাংশের বেশি কমে গেছে। রপ্তানি কমার জন্য অবশ্য অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ব্যবস্থা মোটেই দায়ী নয়। সে ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজার বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজার সংকোচনই দায়ী। বাংলাদেশের মতো অন্যান্য শীর্ষ তৈরি পোশাক রপ্তানিকারক যেমন চীন, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়াসহ প্রভূত দেশেও আলোচ্য খাতে রপ্তানি কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে।

সে যা-ই হোক, কথা হচ্ছে প্রণোদনা তহবিল গঠন ও তার কার্যকর ব্যবহারের পরও শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি প্রাপ্তি এবং জীবনমান ধরে রাখতে ব্যর্থতার কারণ কী? এর কারণ বিশ্লেষণে অর্থশাস্ত্রের বিভিন্ন তত্ত্ব স্মরণ করা যেতে পারে। প্রথমত, উৎপাদনের মৌলিক দুই উপাদান তথা মালিকের মূলধন এবং শ্রমিকের শ্রম সর্বদা অপরিহার্য কিন্তু সাংঘর্ষিক। মূলধন, মালিকের মুনাফা এবং শ্রমিকের মজুরি তাই সদা বিপরীতমুখী আচরণ করে। মালিক পক্ষ মুনাফা বাড়াতে জোর দিলে শ্রমিকের মজুরি কমাতে হয়। আবার উল্টো দিকে শ্রমিকের মজুরি বাড়াতে গেলে মালিকের মুনাফায় টান পড়ে। সে ক্ষেত্রে বণ্টনের সিদ্ধান্ত মালিক কর্তৃক গৃহীত হয় বিধায় শ্রমিকের উপযুক্ত মজুরি নানাভাবে উপেক্ষিত হয়।

 

অর্থনীতির ক্ল্যাসিক্যাল তত্ত্বে শ্রমিকের মজুরি শ্রমের চাহিদা ও জোগানের ওপর নির্ভরশীল। শ্রমের চাহিদা স্থবির অর্থনীতিতে অভ্যন্তরীণ মোট সম্পদের ওপর এবং মুক্ত অর্থনীতিতে দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক মোট উৎপাদন চাহিদার ওপর নির্ভর করে। অন্যদিকে শ্রমের জোগান দেশজ গড় মজুরির ওপর নির্ভরশীল। স্মরণ করা যায়, করোনার সময়ে দেশজ এবং আন্তর্জাতিক উভয় বাজারের উৎপাদন সংকোচনের কারণে শ্রমিকের চাহিদা উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পায়। সে ক্ষেত্রে যেকোনো মজুরিতে কাজ করতে ইচ্ছুক শ্রমিক অধিকতর জোগান অবস্থানের কারণে ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।

দ্বিতীয়ত, অর্থনীতির ক্ল্যাসিক্যাল মজুরি-তহবিল তত্ত্বমতে কোনো দেশের মজুরি কাঠামো ওই দেশের মোট দেশজ উৎপাদন, জনসংখ্যা, অর্থনীতির সামষ্টিক পরিস্থিতি এমনকি স্থান ও কালনির্ভর। সে ক্ষেত্রে অর্থনীতির বিভিন্ন স্তরে মজুরির কাঠামোর ভিন্নতা বাঞ্ছনীয়। যেমন কৃষি, ভোগ্য ও সেবাপণ্য উৎপাদনকারী শিল্প প্রভৃতিতে শ্রমিকের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, ঝুঁকির ক্ষেত্রে প্রভূত ভিন্নতা রয়েছে।

ব্যবসা-বাণিজ্যের স্থিতিশীলতা, মূলধন ও বিনিয়োগ নানা কারণে শ্রমিকের জোগান পরিবর্তন হতে পারে। সে ক্ষেত্রে মজুরি তহবিল বৃদ্ধি পেলেও কোনো বিশেষ গোষ্ঠী-শ্রমিকের মজুরি না-ও বাড়তে পারে। আবার মজুরি তহবিল নির্দিষ্ট থাকায় অর্থনীতিতে মোট শ্রমিকের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে গড় মজুরি কমে যেতে পারে। আপাতদৃষ্টে বাংলাদেশে করোনাকালীন মজুরি তহবিলে জরুরি প্রণোদনা প্যাকেজ তাই বিশেষত তৈরি পোশাকশ্রমিকদের গড় মজুরি বৃদ্ধি তো করেইনি বরং শ্রমবাজারের অতি প্রতিযোগিতায় অধিকাংশ সুফল পেয়েছে মালিকপক্ষ।

তৃতীয়ত, সম্যক মুদ্রানীতি ব্যবহারের মাধ্যমে সরকার চাইলে আর্থিক মজুরি হ্রাস না করেও মালিকেরা শ্রমিকদের গড় মজুরি প্রদান করতে পারতেন। সে ক্ষেত্রে মুদ্রার জোগান বৃদ্ধি করাই ছিল কাম্য। সুদের হার হ্রাস করে ভোগ ও বিনিয়োগের সুযোগ ব্যয় বৃদ্ধি করা যেত। সে রকম পরিস্থিতিতে অনেক ক্ষেত্রে মালিক পক্ষও তাদের গচ্ছিত সম্পদ পুনর্বিনিয়োগে বাধ্য হতো। তাতে কর্মসংস্থান দীর্ঘ মেয়াদে না কমে বরং বাড়তে পারত।

চতুর্থত, ফিসক্যাল নীতি অনুসরণ করেও মধ্য এবং দীর্ঘ মেয়াদে উদ্ভূত পরিস্থিতির সমাধান সম্ভবপর ছিল। সে ক্ষেত্রে কর হার কমানো এবং বাজেট ঘাটতি বাড়ানো যায়। চাইলে সরকারি ব্যয়ও বৃদ্ধি করা যেত। তখন বেসরকারি ভোগ ও বিনিয়োগ দুইই বৃদ্ধি পেত। তাতে করে দেশে সামষ্টিক চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে কর্মসংস্থানে নেতিবাচক প্রভাব পড়ত না। তখন প্রকৃত চাহিদা বৃদ্ধির কারণে একদিকে যেমন আর্থিক মজুরিও কমবে না, অন্যদিকে উৎপাদন ও ভোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে সামষ্টিক অর্থনীতিরও কোনো ব্যত্যয় হতো না।

পরিশেষে বলতে হয়, কল্যাণকামী অর্থনীতিতে জনসাধারণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য সুষম বণ্টনের মাধ্যমে তাদের প্রকৃত আয় বৃদ্ধি এবং পর্যাপ্ত ভোগ্য ও সেবাপণ্যের উৎপাদন ও তার উপস্থিতি নিশ্চিত করা বোঝায়। সে উদ্দেশ্য পূরণে সরকারের নীতি গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা রয়েছে। শুধু দেখতে হবে নীতিটি বা নীতিসমূহ ফলপ্রসূ হয়েছে কি না। নানামুখী প্রণোদনা সহায়তা ও নীতি গ্রহণের পরও শ্রমিক ছাঁটাই ও কর্মসংস্থান হারানো এসব প্রশ্নকে তাই আরও উসকে দেয়।

করোনা মহামারি সময়ে বাংলাদেশে সরকার ঘোষিত প্রণোদনা সহায়তা প্যাকেজের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। যে মহৎ উদ্দেশ্যে তথা তৈরি পোশাকশ্রমিকদের জীবনমান ধরে রাখা এবং শিল্পকারখানার স্বাভাবিক উৎপাদন অব্যাহত রাখার জন্য এই প্রণোদনা সহায়তা, তার সম্যক ব্যবহার হয়েছে কি না, শ্রমিকেরা তার যথেষ্ট সুফল পেয়েছেন কি না, তার কার্যকারিতা নিরূপণ আলোচনা ও যৌক্তিক বিশ্লেষণের দাবি রাখে।