সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক বিএনপি: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক অপশক্তির প্রধান পৃষ্ঠপোষক হচ্ছে বিএনপি। সাম্প্রদায়িকতাকে সমূলে বিনাশ করতে হলে এই সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে যারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়, সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে যারা রাজনীতি করে তাদের চিরতরে বর্জন করতে হবে।

শুক্রবার দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে ২০০৩ সালে বাঁশখালীর সাধনপুরে সংখ্যালঘু পরিবারের ১১ জনকে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় বেঁচে যাওয়া তিনজনের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর ৪৫ লাখ টাকার চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন- বাঁশখালী আসনের সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান।

এরপর দুপুরে তথ্যমন্ত্রী মহানগরীর ঝুঁকিপূর্ণ পাহাড় সংরক্ষণে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে অবৈধ দখলদারমুক্ত পাহাড়ি ভূমিতে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপি সরকার গঠনের পর সমগ্র দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর তাণ্ডব চালিয়েছিল। সেই তাণ্ডবের প্রেক্ষিতে সারা দেশ থেকে পালিয়ে আসা ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জন্য ঢাকায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আশ্রয় কেন্দ্র খুলতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা কোটালিপাড়া থেকে শুরু করে বরিশালের বানারিপাড়া, মাগুরাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হয়েছে।

তিনি বলেন, নৌকায় ভোট দেওয়ার অপরাধে বাড়ি দখল করে রাতারাতি সেই বাড়ির মধ্যে পুকুর খনন করা হয়েছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের হাজার হাজার মানুষকে ঘরবাড়ি থেকে বিতাড়িত করা হয়েছে। তাদের অপরাধ ছিল তারা অসাম্প্রদায়িক দল আওয়ামী লীগকে ভোট দেয়। বাঁশখালীতেও একই অপরাধে তৎকালীন সংসদ সদস্যের নিকটাত্মীয় বিএনপি নেতা আমিন চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে অগ্নিকাণ্ড ও নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। সেদিন সংসদ সদস্যের দায়িত্বে যিনি ছিলেন তিনি এই দায়িত্ব এড়াতে পারেন না। রাষ্ট্রকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান এ দেশে থাকতে পারে না, সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে সমূলে বিনাশ করতে হবে, তাহলে রাষ্ট্র এগিয়ে যাবে। সাম্প্রদায়িকতার কারণে পাকিস্তান রাষ্ট্র আজকে এগোতে পারছে না। যেখানেই সাম্প্রদায়িকতা আছে সেখানেই রাষ্ট্র এগোতে পারে না।

তথ্যমন্ত্রী আরও বলেন, আপনারা জানেন কারা সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে রাজনীতি করে। যারা রাষ্ট্রটাই চায়নি। জামায়াতে ইসলাম বিএনপির প্রধান সহযোগী। তাদের যে ২২ দলের রাজনৈতিক জোট, সেখানে বহু দল আছে যাদের নেতারা আফগানিস্তান গিয়েছিল।

মন্ত্রী বলেন, আদালতের মারপ্যাঁচ ও বিএনপির অনীহাসহ সবকিছু মিলিয়ে আমরা সরকার গঠনের পরও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হতে ৪০ বছরের মতো সময় লেগেছে। বাঁশখালীর নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচারের ক্ষেত্রেও এত দীর্ঘসূত্রিতা কাম্য নয়।

প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে মাদার অব হিউমিনিটি উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, যেখানেই মানবতা লঙ্ঘিত হয়েছে সরকারে থাকেন বা না থাকেন তিনি সেখানে ছুটে গেছেন। মিয়ানমারের শরণার্থীদের জন্য বাংলাদেশের দুয়ার খুলে দিয়েছেন। রোহিঙ্গা রিফিউজিদের খাদ্য, চিকিৎসাসহ সমস্ত সুযোগ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রীকে ও বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অশালীন, অভব্য এবং প্রাণঘাতী হুমকিস্বরূপ লেখা ও মন্তব্য ছাঁপানোর জের ধরে ডিজিটাল আইনে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক

বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-কে নিয়ে দৈনিক নবযুগ নামক একটি অনলাইন পত্রিকায় কটূক্তি ও হত্যার হুমকি প্রদানের দায়ে গত ৩রা অক্টোবর লক্ষীপুরের চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (আমলী) আদালতের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ বেলায়েত হোসেন (ক্ষমতাপ্রাপ্ত)  ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর অধীনে মামলা গ্রহণ করে আমলে নিয়ে আদেশ জারী করা হয়। আওয়ামী লীগ এর তৃণমূল পর্যায়ের কর্মী ও সমর্থক মোঃ হৃদয় কাজী বাদী হয়ে গত ২৩শে সেপ্টেম্বর ২০২১ এ মামলাটি দায়ের করেন (মামলার নংঃ সি.আর. ৪৭৭/২০২১) যার শুনানী হয় ৩রা অক্টোবরে। উক্ত মামলাতে লেখক, প্রকাশক ও সকল বক্তব্য প্রদানকারীকে আসামী করে মোট ৪৭ জনের বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।

অভিযুক্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন – ইসরাত রশিদ (৩৬, সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), জনি জোসেফ ডি কস্তা(৩২, সহ-সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), নুরুল হুদা(২৯, সিনিয়র সহ-সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ),  নূর মুহাম্মাদ (সিনিয়র উপদেষ্টা, দৈনিক নবযুগ), আলী আমিন (৩৯, প্রকাশক, দৈনিক নবযুগ), পীরজাদা তানভীর আহমেদ (২৪),  মোহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম জায়গীরদার(৩৬), মোঃ আব্দুল রাজ্জাক (২৭), মোঃ মাসুম সাজ্জাদ (৩২), আরিফুল হক আরিফ (২৬), মোঃ জাকির হোসাইন (২৯),  মোঃ রাজিম হোসাইন (৩০), শিপলু কুমার বর্মন (৪২),  মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, আবু সাঈদ (২৫), মোঃ আল-আমিন কায়সার (৩১),  এম.ডি মারাজ মিয়া (২৭), এম.ডি শাইম (২০),  আহসানুল কবির (৩৫), এমডি তোফায়েল হোসাইন, মোঃ শহীদুল ইসলাম (৩৮), সামিউজ্জামান সিদ্দীক (৪০), এম.ডি সাব্বির হোসাইন (৪০, সম্পাদক, পোর্টাল বাংলাদেশ), এম.ডি জহিরুল ইসলাম (৩৩), আল মাহফুজ (২৪), এম.ডি ওবায়দুর রহমান খান, মোঃ আরাথ হোসেন রনি (২৯), উম্মা কুলসুম নার্গিস বানু (৩৯), নুরুল ফারুক শাকের (৩৫), মোহাম্মাদ নিজামুল হক (৪৬), মোহাম্মদ ফাহিদুল আলম, মোঃ মিজানুর রাহামান, এমডি কানজিদ হাসান সহ আরো অনেকে।

এ মামলার বিষয়ে বাদীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আমাদের এ প্রতিবেদককে জানান, “এই মামলার আসামীরা প্রত্যেকে দীর্ঘদিন যাবত অনলাইনে সরকার তথা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র ও প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা দৈনিক নবযুগ নামক একটি অনলাইন পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন ছাঁপায় মার্চ ২০২১-এ। সেখানে তারা যাবতীয় কুৎসিত বানোয়াট এবং অসত্য কথা লিখেছিল কিছু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে যে ব্যাপারে আমি কথা বলতে চাইনা এবং যার প্রেক্ষিতে বোধহয় তাদের বিরূদ্ধে যথোপযুক্ত একটা মামলাও হয়েছিল। সে মামলার ব্যাপারে সঠিক আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়ে এই পত্রিকা আরো একটি লেখা ছাঁপে বেশ কিছু মন্তব্যসহকারে মে-মাসে যেখানে সাধারণ মানুষ ও সংবাদমাধ্যমের বাকস্বাধীনতা রোধ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয় আগের মামলার জের ধরে। মামলা কোর্টে মোকাবিলা না করে গণমাধ্যমে বিচারালয় বসিয়ে দিয়েছে। আর সে লিখাগুলোতে এবং মন্তব্যে সরাসরি আমাদের মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে এবং আমাদের জাতির ঋণ যে পরিবারের কাছে – সে শেখ পরিবারকে নিয়ে যাচ্ছেতাই কথাবার্তা লিখা হয়েছে, প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে। এই প্রতিবেদনে আমাদের সকলের প্রাণপ্রিয়, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গবন্ধু কন্যা, দেশনেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের কটূক্তি ও মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেছে।”

তিনি আরো বলেন, “তারা শুধু কটূক্তিই করেনি, বরং দেশনেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ও তাঁর সমগ্র পরিবারকে উচ্ছেদ করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছে। যা খুবই ভয়ঙ্কর, আমাদের বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের একটা অংশ ও এতে করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এসকল লেখকেরা দেশের বিরুদ্ধে নিরন্তর ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এবং এটি এক ধরনের মহামারি আকার ধারণ করার আগেই বন্ধ করে দিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা উচিত। এজন্যই বিষয়টিতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই মামলাটি করেছি।”

আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলাটি দায়ের হওয়ার পর বিজ্ঞ আদালত কমলনগর থানার ওসিকে ৩০ দিন সময় দিয়েছেন মামলার তদন্ত রিপোর্ট জমা দেয়ার জন্যে।  আগামী ২০শে ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানীর তারিখ ধার্য করা হয়েছে।

কমলনগর থানার সাথে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের প্রতিবেদককে জানান, “অভিযোগ আসার পর থেকেই আমরা দ্রুততার সাথে কাজ করছি। আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরপরই আমরা একটি ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ তদন্ত সম্পন্ন করতে সক্ষম হবো। আমাদের কাছে বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্ট আসলে গণমাধ্যমের মাধ্যমে সবাইকে এ বিষয়ে অবহিত করতে পারবো।”

এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে আমাদের এ প্রতিবেদক যোগাযোগ করে তাদের বক্তব্য তুলে ধরার চেষ্টা করলে তাদের কারো সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।

আল জাজিরা সম্পর্কিত প্রবন্ধ প্রকাশের অভিযোগে রাষ্ট্রদোহীতার মামলায় অভিযুক্ত ২৮ঃকঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আহবান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়কে

আল-জাজিরা ও মুশতাক আহমদ এর কারাগারে মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রতিক্রিয়া দেশে-বিদেশে  এখনো চলমান। এ-দুটো বিষয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মন্তব্য আহবান করে অনলাইন সংবাদপত্রিকা দৈনিক নবযুগ ফেব্রুয়ারীর ২৭ তারিখে। ২২শে মার্চ  ‘আল জাজিরার তথ্যচিত্র, কারাগারে মুশতাকের মৃত্যু ও প্রবাসীদের ভাবনা’ প্রকাশ করে দৈনিক নবযুগ যেখানে অশ্রাব্য ভাষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিচার বিভাগের বিচারকদের বিশেষ করে সাইবার ট্রাইনবুন্যালের বিচারককে আক্রমণ করা হয় এবং হত্যার হুমকি দেয়া হয়। সবচেয়ে আতঙ্ক-জাগানিয়া ব্যাপার ছিল এই লেখায় অনেকেই মত প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশে বহির্বিশ্বের বহিরাক্রমণ করা উচিত আওয়ামী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করবার জন্যে যা নিশ্চিতভাবেই রাষ্ট্রের স্বাধীনতা খর্ব করবে এবং রাষ্ট্রদোহীতার দোষে এরা প্রত্যেকেই দোষী।
 
 

এই পর্যবেক্ষণের সাথে সম্পূর্ণভাবে সহমতকারী এডভোকেট মোঃ রবিউল আলম জুয়েল, যিনি বঙ্গবন্ধু আইন ছাত্র পরিষদ এর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, বাদী হয়ে গত ২৮ মার্চ রাজধানীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে  রাষ্ট্রদোহীতা ও অন্যান্য অভিযোগে ফৌজধারী আইনের আওতায়  দৈনিক নবযুগ-এর প্রকাশক, সম্পদাক ও উক্ত প্রবন্ধে প্রমুখ মন্তব্যকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আপেল সাহেব বলেন – ‘এধরণের প্রকাশিত বক্তব্য বাংলাদেশের জন্যে খুবই ক্ষতিকর। বাংলাদেশীদের বিভিন্ন ইস্যুতে অভিযোগ থাকতেই পারে। কোনো সরকার-ই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। কিন্তু বহিরাক্রমণের জন্যে আন্তর্জাতিক মহলকে এভাবে উন্মুক্তভাবে তদবির করা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা অসীম নয়। এটি একটি কোয়ালিফায়েড অধিকার। রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব এইক্ষেত্রে সবসময় অগ্রাধিকার পাবে। আমি মনে করি এটী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মামলা এবং আমরা আনন্দিত যে বিজ্ঞ আদলাত এই মামলা গুরুত্ব অনুধাবন করে এটি আমলে নিয়েছেন এবং আমরা এখন ডিসি অফিসের সহযোগিতায় এই মামলার তদন্ত পর্যায়ে যাবো আশা করছি।’

আদালত সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করে এবং প্রাসঙ্গিক অভিযোগ পর্যালোচনা করে অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটান  ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হাসিবুল হক মামলাটি আমলে নেন (সি.আর. – ১২০/২০২১) এবং  বাদীপক্ষকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়কে অন্তর্ভুক্ত করে অভিযোগ পুনর্গঠন ও জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন।  

  দৈনিক নবযুগ এর সম্পাদক ইসরাত রশিদ সংক্ষিপ্ত জবাবে জানান – ‘আমরা একটি মন্তব্য জরিপ চালিয়েছি এবং এই মন্তব্য জরিপে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দৃষ্টিভঙ্গী উঠে এসেছে। নিজের দেশের নাগরিকদের মন্তব্য আওয়ামী সরকার ও এর সমর্থকদের ভালো না-ই লাগতে পারে, কিন্তু এর মানে তো এ নয় যে – সরকার ও বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয়ে মানুষ তাদের নিজেদের চিন্তা মুক্তভাবে তুলে ধরতে পারবেনা! বাংলাদেশে মুক্তচিন্তার স্বাধীনতা তীব্রভাবে সঙ্কুচিত এবং এই ধরণের মামলা সুস্থ ও অবাধ সাংবাদিকতার পরিপন্থী!’  

এটি পরিলক্ষিত যে এই প্রবন্ধে বেশ কিছু বিএনপি-জামায়াত এর নেতা-কর্মী-সমর্থকদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে মন্তব্য-জরিপে এবং আওয়ামী লীগ বা সরকার-সমর্থিত কোনো মন্তব্য দেখা যায়নি।  আদালত ফাইলের নথি ঘেটে দেখা যায়  মামলার বিবাদীরা হলেন – শিপলু কুমার বর্মণ, ইসরাত রশিদ (সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), আলী আমিন (প্রকাশক, দৈনিক নবযুগ), জনি জোসেফ ডি কস্তা (সহ-সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), নুরুল হুদা (সিনিয়র সহ সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), মুকিত চৌধুরী, মোঃ ইমরান হোসাইন, বিপ্লব পাল, নূর মিয়া, আহসানুল হুদা সরকার, মোঃ জাকির হোসাইন, মিজানুর রহমান, উম্মা কুলসুম নার্গিস বানু, আহসানুল কবির, নুরুল ফারুক শাকের, মো; বিন রাজিম, মোঃ রুকন মিয়া, মোঃ আশিফ হোসাইন, মোঃ মাসুম সাজ্জাদ, মোঃ আরাথ হোসেন রনি, মোঃ শহীদুল ইসলাম জায়গীরদার, মোঃ ওবায়দুর রহমান খান, মোঃ আল-আমিন কায়সার, মোঃ সাব্বির হোসাইন প্রমুখ।

মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়-এর জবাব প্রাপ্তির পর। 

বাবার কাছে খুন করার শিক্ষা পেয়েছে হাসিনা

মশিউল হুসাইন খান/ যুক্তরাজ্য

যদি আমরা ইতিহাস দেখি তবে দেখতে পাবো বাংলাদেশে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ডের সূচনা হয়েছে শেখ মুজিবের আমলে। তাই তার মেয়ের কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায়। খুনির সন্তান খুনি হবে এমনটা সত্যি না হলেও হাসিনার ক্ষেত্রে এমনটাই হয়েছে।

সম্প্রতি রায়হান নামে এক যুবককে সিলেট বন্দর থানার পুলিশ তুলে নিয়ে সারারাত পিটিয়ে মেরে ফেলেছে। রায়হানের তিনমাসের এক সন্তান আছে এবং সে একজন খুব সাধারণ যুবক। সে রাজনীতি করেনা, দলবাজি করেনা। খুব সাধারণ একজন গৃহী মানুষ যে তার সন্তানের পিতা হওয়ার পরে তার ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতে দেখতে সময় পার করছিলো।

হাসিনার বর্বর পুলিশ সেই স্বপ্নকে চুরমার করে দিলো। কিন্তু পুলিশ এতো সাহস কই পেলো। যখন একটি দেশের রাষ্ট্রনায়ক কোন হত্যার বিচার করে না। হত্যার অনুমতি দেয়। তখন পুলিশের তো এতো সাহস হবেই। ত

রায়হান একটা ফোন কল করার সুযোগ পেয়েছিলো থানায় আটক থাকা অবস্থায়। সে তাকে বাঁচানোর জন্য মাত্র দশ হাজার টাকা বা একশো ইউরোর সমপরিমাণ টাকা নিয়ে আসার জন্য পরিবারের সদস্যদের কাছে আকুল আর্তি জানিয়েছিলো। বাংলাদেশের একটা সাধারণ পরিবারের জন্য একশো ইউরোর সমপরিমাণ টাকা একটা বড় অংকই বটে। তার পরিবার যেভাবেই হোক টাকাটা জোগাড় করেছিলো কিন্তু রায়হান সারা রাতের অব্যাহত পিটুনি সহ্য করতে পারেনি। অত্যাচারের সময় পুলিশ তার হাত-পা ভেঙে দেয়। নখ উপড়ে দেয়। সে মারা যায়।

যদি ইতিহাস ঘাটি, প্রতিনিয়ত এমন ঘটনা ঘটছে।  আমাদের দেশে ক্ষমতায় টিকে থাকতে হাসিনার পুলিশ নৈশ ভোটে হাসিনাকে নির্বাচিত করার মূল কারিগর হিসেবে কাজ করার পরে এমনই বর্বর পুলিশি শাসন জারি করেছে। যাকে ইচ্ছা তুলে নিয়ে যাচ্ছে, ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করছে জমিজমা লিখে নিচ্ছে, যাকে ইচ্ছা মেরে ফেলছে, গুম করছে। কাউকে কোন জবাবদিহি করতে হয়না। শুধু সরকারি দলের লোকেদের অবাধে অপরাধ করতে দিয়ে যেকোন ভিন্নমতের উপরে জিঘাংসা নিয়ে চড়াও হলেই হাসিনা খুশী।

পুলিশ রায়হানের হত্যাকান্ডেকে ধামাচাপা দেয়ার জন্য প্রচার করেছে যে রায়হান ছিলো একজন ছিনতাইকারী এবং ছিনতাই করে ধরা পড়ার পরে তাকে গণপিটুনি দেয়ায় সে নিহত হয়। কিন্তু যেই এলাকায় রায়হান গণপিটুনি খেয়েছে বলে পুলিশ দাবী করেছে সেই এলাকার সব সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ তন্ন তন্ন করে খুঁজেও কোন ছিনতাই বা গণপিটুনির ঘটনা দেখা যায় নাই।

বাংলাদেশে বছরের পর বছর ধরে পুলিশ পেশা সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত পেশা হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। শুধু তাই নয়, বাংলাদেশের মানবাধিকার লংঘনের ঘটনার চ্যাম্পিয়ন বাহিনী হিসেবেও এই বাহিনী তার দুর্নাম কুড়িয়েছে।

চরম দুর্নীতিগ্রস্থ মানবাধিকার লংঘনকারী এই বর্বর পুলিশবাহিনী বাংলাদেশের প্রগতিশীল রুপান্তরের শত্রু। এই পুলিশবাহিনীর সংস্কারও সম্ভব নয়। ফ্যাসিস্ট জামানার অবসানের পরে বাংলাদেশে এই উপনিবেশিক শাসনের উত্তরাধিকার পুলিশবাহিনীকে ডিসব্যান্ড করে স্বাধীন জনগণের পুলিশবাহিনী গড়ে তুলতে হবে।

বাংলাদেশের জনগনের নাগরিক ও মানবিক অধিকারই শুধু হরণ করা নয়। শেখ হাসিনা রিপাবলিকের সকল ইন্সটিটিউশন ধ্বংস করার সাথে সাথে পুলিশ নামের ইন্সটিটিউশনকেও ধ্বংস করেছে। এই ক্ষতির তুলনা নেই।

যে দেশের সরকার অবৈধ। সেই দেশে পুলিশ বাহিনী সরকারকে টিকিয়ে রাখতে তো এমন অসভ্য, অমানুবিক, নিষ্ঠুর আচরন করবেই।

ব্লগার এবং নাস্তিকদের বিচারের দাবিতে দেয়ালে দেয়ালে পোষ্টার এবং মিছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা: হেফাজতে ইসলামসহ আরো কয়েকটি ইসলামী সংগঠন বেশ কিছুদিন ধরেই সরকারকে ব্লগার এবং নাস্তিকদের আইনের আওতায় এনে তাদের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে চাপ দিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইসলামী দলগুলোকে বাংলাদেশের বিভিন্নস্থানে মিছিল এবং সমাবেশ করে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়। তাছাড়া কোনও কোনও এলাকার অলিতে-গলিতে দেয়ালে দেয়ালে নাস্তিকদের পোষ্টার লাগিয়ে হত্যা করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার (অক্টোবর-২৯, ২০২০) আরিফ রব্বানী নামের হেফাজতে ইসলামের একজন সক্রিয় কর্মী ‘এথিস্ট এরা’ নামের একটি ম্যাগাজিনের সকল ব্লগার/ নাস্তিকদের নামে মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত খবর নিয়ে জানা যায় যে, এথিস্ট এরা নামের এই ওয়েবসাইটটি ইসলাম ধর্মকে অত্যন্ত নোংরাভাবে ফুটিয়ে তুলে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশিত করে। মূলত যা দেখেই ইসলামী সংগঠনগুলো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।

এ বিষয়ে মামলার বাদি আরিফ রব্বানীর সাথে কথা হলে তিনি আমাদের বলেন ’’হঠাৎ করেই ফেসবুকের মাধ্যমে এই ম্যাগাজিনটি আমার চোখে পড়ে, আমি কৌতুহল বশত এটি ডাউনলোড করে দেখতে পারি সেখানে ধর্ম, মুসলিম, কোরআন এবং আমাদের প্রাণপ্রিয় নবী মোহাম্মদ (সঃ) কে নিয়ে নানাবিদ কুরুচিপূর্ন  শব্ধ ব্যবহার করে ‘বিনাশ হোক ধর্ম‘ নামে এই মাগাজিনটি প্রকাশিত করে, যা একজন মুসলিম হিসেবে মেনে নিতে পারিনি এবং আমি মনে করি এদেরকে কতল (হত্যা) করা আমার এবং আমাদের সকল মুসলিমদের ওপর ওয়াজিব হয়ে গেছে।

মামলার আসামীদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আমাদের যে কয়টি নাম বলেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েক জন হলেন এথিস্ট এরা’র সম্পাদক এমডি মাহাদি হাসান, সহ সম্পাদক কাজী ওয়াহিদুজ্জামান, সিনিয়র সহ সম্পাদক মিজানুর রহমান, প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ সাইফুজ্জামান ও উমায়েদ হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার উম্মা কুলসুম নারগিস বানু, এমডি জিল্লুর রহমান, অনিকা হক মল্লিক,শ্রাবণী শিকদার, মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন, মহাম্মদ ফাহিদুল আলম, মুহাইমিনুল বিশ্বাস পারভেজ, জোবায়ের হোসেন, বিপ্লব পাল, এম ডি হাসান তৌহিদ, মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, নুর মোহাম্মদ, জনি জোসেফ কস্তা, সহ আরো অনেকে।

এদিকে মিছিল এবং সমাবেশে থাকা কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা সাংবাদিকেদের জানান যে, ‘‘বর্তমানে নাস্তিক এবং কিছু নব্য ব্লগারদে উৎপাত এতটাই বেড়েছে যে এগুলো মেনে নেওয়া কোনও মুসলমানদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের কলিজার টুকরা হযরত মুহাম্মদ সাঃ কে নিয়ে কেউ কিছু বললে তাকে এই পৃথিবী থেকে বিদায় করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব।‘‘

তাদের মধ্যে আর একজন ইসলামী ব্যক্তিত্ব মুফতি ফজলুর রহমান বলেন, ‘‘নাস্তিকদের গালি দিলে কারও গায়ে লাগলে আমার করার কিছু নাই। আল্লাহর দেশে থাকতে হলে আল্লাহকে না দেখে আল্লাহর অস্তিত্ব মানতে হবে, না হলে তুমি আল্লাহর দেশে থাকতে পারবে না।’’

এদিকে সমাবেশ চলাকালে মুফতি আহমদ উল্লাহ জিহাদী উপস্থিত থাকা দ্বীনদার ভাইদের উদ্দেশে বলেন যে, ‘‘যদি কোন মুসলিম মুরতাদ হয়ে যায় এবং মুরতাদের সকল শর্ত তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় (সুস্থ- মস্তিস্ক, বালেগ, স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির অধিকারী হওয়া) তাহলে তার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হবে এবং ইমাম তথা মুসলমানদের শাসক অথবা তাঁর প্রতিনিধি যেমন বিচারক তাকে হত্যা করবে। তাকে গোসল করানো হবে না, তার জানাযা-নামায পড়ানো হবে না এবং তাকে মুসলমানদের গোরস্থানে দাফন করা হবে না।‘‘

হেফাজেত ইসলামে এক কর্মীর কাছে দেয়ালে পোস্টার লাগানোর বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি আমাদের বলেন যে, ‘‘সমস্ত ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক-মুরতাদ যারা আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহ এবং আমাদের ধর্ম নিয়ে ব্যঙ্গ করবে, গালি-গালাজ করবে, কটূক্তি করবে তারা সবাই আমাদের টার্গেট। ইনশাআল্লাহ আমরা তাদের হত্যা করবো।’’

উল্লেখ্য, হেফাজতে ইসলাম নাস্তিক এবং ব্লগারদের ছবি যেভাবে দেয়ালে দেয়ালে লাগিয়েছে, ২০১৬ সালে ঠিক এভাবেই ফেসবুক পেজে চার ব্লগারের ছবি প্রকাশ করে হত্যার হুমকি দিয়েছে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম। তারা হচ্ছেন আসিফ মহিউদ্দিন, সানিউর রহমান, শাম্মি হক ও অনন্য আজাদ। তারা সবাই এখন প্রবাসী। জঙ্গি হামলার ভয়ে এসব ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট অনেক আগেই দেশ ছেড়েছেন।

আদালত সূত্রে জানা যায় বাদী আরিফ রাব্বানী কর্তৃক আনীত মামলার নম্বর ৪১৮/২০২০। মামলাটি দায়ের করা হয়েছে ঢাকা সাইবার ট্রাইবুন্যালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫, ২৮, ২৯, এবং ৩১ ধারার অধীনে ২১ জন আসামীর বিরূদ্ধে। মামলাটি তদন্তাধীন।

যেকোনো সময় সরকারের সিংহাসন ডুবে যাবে : রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী সরকারকে উদ্দেশ্য বলেছেন, আপনারা মনে করছেন আপনাদের অনেক ক্ষমতা। ধরে নিয়ে যাবেন, গুম করে দেবেন। কিন্তু কখন যে আপনাদের সিংহাসন চোরাবালির মধ্যে ডুবে যাবে আপনি সেটা টেরই পাবেন না।

আজ শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক একেএম ওয়াহিদুজ্জামানকে চাকুরিচ্যুত করার প্রতিবাদে এক মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, দুজন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। কেনো করা হয়েছে? তারা কি কোনো অন্যায় করেছে? কোনো দুর্নীতি করেছে? বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিচ্যুত করার যে আইন আছে সেই আইনের মধ্যে কি তারা পড়েছে? অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খানকে কেনো চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তা আপনারা জানেন। তিনি জিয়াউর রহমানের নিয়ে একটা প্রবন্ধ লিখেছেন। এইটা হচ্ছে অপরাধ।

তিনি বলেন, একেএম ওয়াহিদুজ্জামান রাজনীতির করুণ দশা নিয়ে ফেসবুকে বিভিন্ন মন্তব্য করতেন। এজন্য তাদের বিরুদ্ধে প্রথমে মামলা করা হলো, চাকরিচ্যুত করা হলো ডা. মোর্শেদকে। ওয়াহিদুজ্জামানের বিরুদ্ধে মামলা চলছে, মামলা নিষ্পত্তি হয়নি, তার আগেই চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, আমি সরকারে উদ্দেশ্য বলতে চাই, আপনি যদি বলেন যারা ভিন্নমতে বিশ্বাসী, যারা বিরোধী দলের বিশ্বাসী, তোমাদের খাওয়ার অধিকার নাই, তোমাদের তৃষ্ণা পেলে পানি খাওয়ার অধিকার নেই, তোমরা ক্ষুধায়- তৃষ্ণায় মরে যাও। আপনি এই কর্মসূচি দেন।

তিনি বলেন, শিক্ষকদের কর্মকাণ্ড কী? ছাত্রদের পড়ানো। শিক্ষকতা করা। ড. মোর্শেদ তাই করতেন। তিনি মেট্টিক থেকে মাস্টার্স ডিগ্রি পর্যন্ত সবগুলোই ফার্স্টক্লাস পাওয়া। মেট্টিক ও ইন্টারমিডিয়েটে স্ট্যান্ড করেছে। তাকে বহিষ্কার করা হলো। ওয়াহিদুজ্জামানও সবগুলোতে প্রথম শ্রেণি প্রাপ্ত শিক্ষক। না হলে তো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়া যায় না। ড. মোর্শেদের অতুলনীয় মেধা। তাকে ভিন্নমতের কারণেই চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মোর্শেদ হাসান খান ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এ কে এম ওয়াহিদুজ্জামানকে চাকরিতে পুর্নবহালের দাবিও এ সময় জানান তিনি।

মানববন্ধনে বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, মৎসজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা ওয়াসার পরিচালক পদে ষষ্ঠবারের মতো তাকসিম এ খান।

ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী তাকসিম এ খানের চুক্তির মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়ছে। শনিবার ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের ৯৭তম সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। অনলাইনে অনুষ্ঠিত ৯ জন সদস্যের মধ্যে ৬ জন চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে মত দেয়। এ কারণে বোর্ড প্রকৌশলী তাকসিমের মেয়াদ বাড়ানোর পক্ষে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রস্তাব পাঠানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।

এ প্রসঙ্গে ঢাকা ওয়াসা বোর্ড সদস্য এবং ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সের (আইডিইবি) সভাপতি এ কে এম এ হামিদ যুগান্তরকে বলেন, ‘আজ (শনিবার) ওয়াসা বোর্ডের সভা ছিল। ওই সভায় সংস্থার বর্তমান এমডির চুক্তির মেয়াদ আরও তিন বছর বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এ প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য নিয়ম অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।’

জানা যায়, ২০০৯ সালে প্রথম ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগ পান প্রকৌশলী তাকসিম এ খান। এরপর চারবার চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছে ওয়াসা বোর্ড। পঞ্চমদফা চুক্তির সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামী ১৪ অক্টোবর। নতুন করে চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে গত ২৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত বোর্ড সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়। ওই সভার এটা আলোচ্য সূচীতে না থাকায় এ ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয় না।

ঢাকা ওয়াসা বোর্ড চেয়ারম্যান ড. এম এ রশিদ সরকার গত ১০ সেপ্টেম্বর মারা যাওয়ার পর নতুন চেয়ারম্যান নিয়োগের আগেই তড়িঘড়ি করে এমডি নিয়োগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা ওয়াসা বোর্ড।

এদিকে শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘গণমাধ্যম ও নির্ভরযোগ্য প্রত্যক্ষ তথ্যসূত্র অনুযায়ী ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের বিশেষ সভায় শুধুমাত্র বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নাম উল্লেখ করে তাকে আবারো তিন বছর মেয়াদে পুননিয়োগের সুপারিশ চূড়ান্তের কথা বলা হয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী এ পদে দরখাস্ত আহবান করা হয়েছিল কিনা, কারা আবেদন করেছিলেন, কেন তারা যোগ্য বিবেচিত হলেন না বা কেন বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালকই একমাত্র উপযুক্ত প্রার্থী। কেন সংশ্লিষ্ট বিধি অবমাননা করে মেয়াদের পর মেয়াদ একই ব্যক্তিকে অপরিহার্য, এসব প্রক্রিয়াগত প্রশ্নের উত্তর যাচাই করা হয়েছে কিনা, তার কোনো উল্লেখ নেই।

তিনি বলেন, ‘এটা নিশ্চিত যে, ঢাকা ওয়াসা বোর্ড তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না বা করতে দেয়া হচ্ছে না। প্রাতিষ্ঠানিক সুশাসন, বিশেষ করে স্বচ্ছতা ও জবাদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দুর্নীতি প্রতিরোধে অপারগতার কারণে ঢাকা ওয়াসা বোর্ডেরও অপসারণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানাই।’

দলে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় পছন্দের লোক খুঁজছেন তারেক রহমান।

দলে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় নিজের পছন্দের লোক খুঁজছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে আস্তে আস্তে তিনি নিজের ঘনিষ্ঠদের বসাতে শুরু করেছেন। তবে কমিটি গঠন করতে গিয়ে অনেক জায়গায় তিনি বিরোধিতার সম্মুখীন হচ্ছেন বলে জানা গেছে।

সংগঠন হিসেবে বিএনপির বর্তমান যে কাঠামো সেটি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার হাতেই গড়া। ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দলকে তিনিই দেশের অন্যতম বড় দলে পরিণত করেন। দলটির বিভিন্ন কমিটিতে শীর্ষ এবং গুরুত্বপূর্ণ অধিকাংশ নেতাকে ‘খালেদা জিয়ার টিম’ বলে মনে করা হয়। কিন্তু আড়াই বছর ধরে বড় ছেলে তারেক রহমান দলের হাল ধরেছেন। আর এ কারণেই দলে তাঁর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা আছে। কিন্তু বিএনপির নীতিনির্ধারকরা এ নিয়ে মুখ খুলতে রাজি নন। কারণ তারেক রহমানকে তাঁরা কেউ অসন্তুষ্ট করতে চাইছেন না।

জানতে চাইলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘দল সাজানোর ঘটনা সত্যি নয়। বিএনপির সবাই খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। দলে কোনো বিভাজনও নেই।’ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘পদ শূন্য হলে যোগ্য নেতাদেরই পদায়ন করা হচ্ছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সুন্দরভাবে দল পরিচালনা করছেন।’

দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় প্রসঙ্গটি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, ‘বিএনপির সবাই তাঁর (তারেক রহমান) পছন্দের। সবাই তাঁর।’

স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেন, ‘তারেক রহমান যাঁদের যোগ্য বলে মনে করেছেন তাঁদেরই বিভিন্ন পদে মনোনীত করেছেন। আর যোগ্য বলে দলও তাঁদের গ্রহণ করেছে।’

নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক নেতা বলেন,  ‘ওয়ারিশ সূত্রে সব কিছুর মালিক তারেক রহমান। সেই অর্থে আমার মালিকও তিনি। তা ছাড়া তাঁর মা খালেদা জিয়ার পদায়নকৃত নেতাদের কেউ তো তাঁকে চ্যালেঞ্জ করছেন না।’

একটি দুর্নীতি মামলায় সাজা হওয়ায় ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর থেকে দল পরিচালনা করছেন তারেক। দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চ্যুয়াল বৈঠকগুলোতে সভাপতিত্ব করছেন তিনি। গত ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত হওয়ায় কারামুক্ত হয়ে খালেদা জিয়া গুলশানের ‘ফিরোজা’য় আছেন। তবে দল পরিচালনার ওই নিয়মের কোনো পরিবর্তন হয়নি। সরকারের পাশাপাশি বিএনপির আইনজীবী নেতারাও বলছেন, আইনগতভাবে খালেদা জিয়া এখনো মুক্ত নন। ফলে আপাতত তিনি রাজনীতি করতে পারছেন না। পাশাপাশি শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় ভবিষ্যতেও তিনি রাজনীতি করতে পারবেন কি না এ নিয়েও দলের সর্বস্তরে সংশয় তৈরি হয়েছে। এ কারণে নানামুখী আলোচনা সত্ত্বেও দলটির সিনিয়র নেতারা আস্তে আস্তে তারেকের কর্তৃত্ব মেনে নিয়েছেন। তাঁরা বলছেন, অনেক কিছু অপছন্দ হলেও রাজনৈতিক জীবনের শেষ প্রান্তে এসে তাঁরা দলের বাইরে গিয়ে ‘অনাস্থা বা অবিশ্বাসে’র খাতায় নাম লেখাতে চান না।

এ প্রসঙ্গে আলোচনায় বারবার উঠে আসছে বিএনপির প্রয়াত মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার নাম। এক-এগারোর পর সংস্কার প্রস্তাব উত্থাপনের মধ্য দিয়ে দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তাঁর সমর্থক বলে পরিচিত অনেকের রাজনৈতিক জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে বলে মনে করা হয়। মান্নান ভূঁইয়ার সমর্থকদের কেউ কেউ বিএনপি ছেড়ে গেছেন। আবার অনেকে দলে ফিরতে পারলেও কোণঠাসা অবস্থায় আছেন।    

১৯৮৩ সাল থেকে খালেদা জিয়ার একক নেতৃত্বে পরিচালিত হয়েছে বিএনপি। দল পুরোপুরি তাঁর নেতৃত্বে থাকার সময় তারেক রহমানের প্রভাব থাকলেও সেটি তেমন দৃশ্যমান ছিল না। যদিও ২০০১ সালের নির্বাচন পরিচালনা এবং মন্ত্রিসভা গঠনের নেপথ্যে তারেকের বেশ কিছু সমর্থক স্থান পেয়েছিলেন বলে মনে করা হয়। তবে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে বসার পর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তারেকের ভূমিকা প্রথম দৃশ্যমান হয় খালেদা জিয়া কারাগারে থাকতে। ২০১৯ সালের ১৯ জুন স্থায়ী কমিটিতে তিনি মনোনয়ন দেন ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং সেলিমা রহমানকে। ওই দুজন তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত হলেও দলে এ নিয়ে সমালোচনা হয়নি। তবে ওই সময় কেউ কেউ বলেন যে স্থায়ী কমিটিতে তারেকের মতামতের পক্ষে কথা বলার লোকের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে।

আগের কমিটি ভেঙে দিয়ে আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে গত বছর ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটি গঠনও তারেকের পছন্দের লোকদের সমন্বয়ে হয়েছে বলে কেউ কেউ মনে করেন। কমিটির চেয়ারম্যান পদে আমির খসরু ছাড়াও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ব্যারিস্টার মীর হেলাল, ব্যারিস্টার নওশাদ জমিরসহ বেশ কয়েকজন সদস্য তারেকের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। তারেকের সমর্থক হলেও নওশাদ জমিরকে নিয়ে বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের মধ্যে সমালোচনা আছে। 

এর আগে ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল ঢাকা মহানগরীর উত্তর বিএনপির কমিটি গঠিত হয় তারেক রহমানের পছন্দের লোকদের দিয়ে। ইতালির নাগরিক সিজার তাবেলা হত্যার আসামি এম এ কাইয়ুম অনেক বছর ধরে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করলেও তারেকের ইচ্ছায় তাঁকেই উত্তরের সভাপতি করা হয়। তবে ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিএনপিতে সমালোচনা আছে। কারণ বিএনপি ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত কাইয়ুম দেশে ফিরতে পারছেন না বলে মনে করা হয়। ওই ঘটনায় মহানগর উত্তর বিএনপি সাংগঠনিকভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গত বছর ১ সেপ্টেম্বর জিয়াউর রহমানের কবরে শ্রদ্ধা নিবেদনকালে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের হাতে উত্তরের কমিটির নেতারা লাঞ্ছিত হন।

সর্বশেষ তারেকের সিদ্ধান্তে ওই কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নিয়োগ নিয়েও কিছুটা বিতর্ক তৈরি হয়। গত ৭ জুন করোনায় আক্রান্ত হয়ে আহসান উল্লাহ হাসান মারা গেলে ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকের দায়িত্ব দেওয়া হয় কমিটির সহসভপাতি আবদুল আলী নকিকে। কিন্তু গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ারের ওই পদে নিয়োগ পাওয়ার কথা।

এদিকে গত সংসদ নির্বাচনের পর দল গোছানোর উদ্যোগ নিলেও নানামুখী বাধা ও আপত্তির কারণে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কমিটি অনেক জায়গায় করতে পারেননি তারেক রহমান। এ নিয়েও দলে অনেক ধরনের আলোচনা আছে। তারেকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সাইফুল আলম নিরবের নেতৃত্বে ২০১৭ সালের ১৬ জানুয়ারি যুবদলের আংশিক কমিটি  ঘোষিত হলেও আজ পর্যন্ত দেশের সব জায়গায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা যায়নি। গত বছরের অক্টোবর পর্যন্ত দুই দফায় সময় বাড়ানো হলেও চলতি সময়ের মধ্যে কমিটি গঠন সম্ভব হয়নি। সর্বশেষ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবদলের কমিটির ঘোষণার মাত্র দুই দিনের মাথায় হঠাৎ করেই গত ৯ সেপ্টেম্বর ওই কমিটির কার্যক্রম স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এ ছাড়া জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল, মহিলা দলসহ বেশ কয়েকটি অঙ্গসংগঠন উদ্যোগ নিয়েও তারেক রহমান পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে পারেননি। বরিশাল বিভাগে বেশির ভাগ জেলা কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হলেও অভ্যন্তরীণ কোন্দলের কারণে কমিটি গঠন করা যায়নি।

বৈদ্যুত খাতে দূর্নীতি: মদদ দেয় মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু

মশিউল হুসাইন খান/ যুক্তরাজ্য

হাসিনাসহ আওয়ামীলীগের নেতারা সব সময় বলে বিদুৎখাতে তারা সফল। দেশে দিনে ঘন্টায় ঘন্টায় বিদুৎ যায় তারপরও তারা এই কথা বলে। আবার আমাদের দেশে কোনো কিছুর দাম কমে না, কেবল বাড়ে , বাড়তেই থাকে। সর্বশেষ বাড়ল বিদ্যুতের দাম। কিন্তু এমন করে হুট হাট করে বিদুৎতের দাম বাড়ার কারন কি। আর এর পেছনে কার দায় রয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে অপব্যয় না কমিয়ে সরকার জনগণের পকেটে হাত দিয়েছে। ৯ হাজার কোটি টাকার উপরে অযৌক্তিক ব্যয় যদি সমন্বয় করা হত, তাহলে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির দরকার হত না। সরকার রেন্টাল, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নামে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মালিকদের মুনাফা অর্জন ও লুণ্ঠনের এক অভয়ারণ্য তৈরি করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে এই লুটপাটের দায় জনগণ কেন নেবে?

দেশের বিদ্যুৎখাত নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ আর তদন্তে বিভিন্ন সময় দুদক উদ্যোগ নিলেও তা পরবর্তীতে আর আশার আলো দেখেনি। দেখবে কি করে এই দূর্নীতির সাথে তো সরকারের পৃষ্ঠপোষকে যারা আছেন তারা জড়িত।  সত্যি বলতে ,বর্তমান সরকার যে খাতে নিজেদের সবচেয়ে’ সফল বলে দাবি করে তা হচ্ছে বিদ্যুৎখাত। কিন্তু এই খাতেই দূর্ণীতি সব থেকে বেশি। এই খাতের ভেতরের দুর্নীতি নিয়ে যে অন্ধকার রাজত্ব তা থেকে যাচ্ছে লোকচক্ষুর আড়ালেই। বিদ্যুৎ খাতের প্রধান প্রতিষ্ঠান পিডিবি বরাবরই দুর্নীতিতে অনেক এগিয়ে। সংস্থাটির খোদ শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারাই এখন লাগামহীন দুর্নীতি-অপকর্মে নিমজ্জিত। এ খাতের দুর্নীতিবাজরা আশ্রয়-প্রশ্রয় পাচ্ছেন ঊর্ধ্বতন মহল থেকে অর্থাৎ বিদ্যু মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী তাদের লালন পালন করছে।

এই খাতের মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও পিডিবির বর্তমান চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুরেদ সাথে রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এছাড়া সরকারের আর একজন উধ্বতর নেতা সালমান এফরহমানের সাথেও রয়েছে ঘনিষ্ঠতা। দীর্ঘদিন ধরে সংস্থাটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে কাজ করেছেন তিনি। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয় খালেদকে। কিন্তু দীর্ঘ ৩৮ বছরের চাকরি জীবনে মাঠ পর্যায়ে কাজের অভিজ্ঞাতা তার নেই বললেই চলে। পিডিবিকেন্দ্রীক দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের প্রধান সদস্য হিসেবে তিনি কেন্দ্রীয় পর্যায়ের বিভিন্ন আকর্ষণীয় পদে কাজ করেছেন। আর সংস্থার চেয়ারম্যান হওয়ার পর তিনি নিজেই এখন সিন্ডিকেটের পুরো নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পিডিবিতে যে গ্রুপটি সব সময়ই বিশেষভাবে শক্তিশালী তা হচ্ছে ঠিকাদার গ্রুপ। সরকারী নেতাদেও কাজ পাইয়ে দিতে তিনি গড়ে তুলেছেন সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটে শুধু পিডিবির চেয়ারম্যান বা এর কর্মকর্তারাই জড়িত নন, মন্ত্রণালয় বা অন্যান্য স্থানের প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও এই সিন্ডিকেটে আছেন। তবে তাদের এই সিন্ডিকেটের টাকার বড় অংশ যায় মন্ত্রীর কাছে। আর সে কারনে মন্ত্রী সব দেখেও চুপ থাকেন।

অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের সংস্কারসহ নানা কাজে যে পরিমাণ দুর্নীতি আর লুটপাট হয় তা অকল্পনীয়। সবচেয়ে বড় রকমের চুরি হয়ে থাকে কেনাকাটার টেন্ডারে। যাকে ‘চুরি’ না বলে ‘লুট’ বলেই আখ্যায়িত করে থাকেন অভিজ্ঞমহল। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে রাঘব বোয়ালরা। প্রতিবছর এই ক্রয় খাতে শত শত কোটি টাকা লুট হচ্ছে নানা কায়দায়। যার ভাগ যায় গুটিকয়েক কর্মকর্তা ও সংস্থার বাইরের ব্যক্তিবিশেষের পকেট। খালেদ মাহমুদই ইতিপূর্বে প্রধান প্রকৌশলী থাকার সময় আড়াই হাজার কোটি টাকা লুটপাটের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। এজন্য ২০১৪ সালে দুদকের তদন্ত এবং জিজ্ঞাসাবাদেরও মুখোমুখি হয়েছিলেন। অবশ্য খালেদ মাহমুদ বরাবরই ‘ম্যানেজ মাস্টার’ হিসেবে পরিচিত। ম্যানেজিং সক্ষমতার মাধ্যমে দুদকের সেই তদন্ত কোনো রকমে ধামাচাপা দিয়েছেন।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অধীন বিভিন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি ক্রয় ও মেরামত খাতে প্রতিবছর কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়ে থাকে। আর একে ঘিরেই গড়ে উঠেছে সিন্ডিকেট। পছন্দের কোম্পানিকে কাজ দিতে যে কোন ধরণের অনিয়ম আর কৌশলের আশ্রয় নিতে দ্বিধা করে না এই সিন্ডিকেট। এই বহিরাগতরাও বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানির মালিক বা বড় বড় কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতারাও আছেন এই সিন্ডিকেটে। পিডিবির কোন কাজ এলেই দরদাতাদের নিজেদের মধ্যে অলিখিত গোপন সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত হয়, বেশি দর হাঁকিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাতের লক্ষ্যে। দেখা যায়, কখনো কখনো সবদিক থেকে যোগ্য হওয়ার পরও সর্বনিম্ন দরদাতার দর বিভিন্ন অযৌক্তিক অজুহাত দেখিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। নানান কৌশলে নিম্নদরদাতাকে বাদ দিয়ে উচ্চ ও অস্বাভাবিক মূল্যে মালামাল ক্রয় করা হয়ে থাকে। অতীতে এমন ঘটনা অনেক ঘটেছে, এখনো ঘটছে।

পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সারাজীবনই পিডিবির প্রধান কার্যালয়ে ডিজাইন, প্রোগ্রাম এবং প্ল্যানিং বিভাগে কাজ করেছেন। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পিডিবির এই শাখা সাধারণত দুর্নীতিবাজদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় শাখা হিসেবে পরিচিত। এর কারণ, এগুলো ক্রয় বা কেনা-কাটার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। বড় দুর্নীতিগুলো হয়ে থাকে এই শাখার মাধ্যমেই। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, চাকরি জীবনের শুরু থেকেই তিনি দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছিলেন।

এ শাখা যেভাবে ডিজাইন এবং পরিকল্পনা করে দেন টেন্ডারটির স্পেসিফিকেশন সেভাবেই তৈরি হয়। এতে কাজ পায় তাদের পছন্দের ওই নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানই। অর্থাৎ কে কাজ পাবে, এটা টেন্ডার আহ্বানের আগেই নির্ধারিত হয়ে যায়। এসব শাখায় নিজের পছন্দের লোকদের শুধু নিয়োগই দেননি, তারা সবাই চেয়ারম্যানের প্রতি অন্ধ অনুগত, কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির লোকজনও এই সিন্ডিকেটের সদস্য।

নিয়োগ, বদলি, পদায়ন, পদোন্নতি সবকিছুতেই অনিয়ম

আর একজন পিডিবির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হচ্ছেন সদস্য (প্রশাসন) জহুরুল হক। তিনি পিডিবিতে নিয়োগ বাণিজ্যের এক মহা সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। রয়েছে সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে ঘনিষ্ঠতা।  ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় বা বুয়েটের মতো খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠান দিয়ে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা নেয়া হলেও ফলাফলে অভিনব জালিয়াতি করা হয়। যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, ফলাফল প্রকাশের আগেই তাদের সাথে যোগাযোগ করে এই সিন্ডিকেট, তারপর পাস করিয়ে দেয়ার জন্য চুক্তি করে। পরীক্ষায় স্বাভাবিকভাবে পাস করলেও পরীক্ষার্থীরা জানতেও পারেন না যে তারা মেধার বলেই টিকেছেন, টাকা দেয়ার ফলেই তাদের উত্তীর্ণ করা হয়েছে এমন ধারণা সৃষ্টি করার পর ওই ব্যক্তিরা চাকরি পেতে এই সিন্ডিকেটের কাছে টাকা দিতে আর কোন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগেন না। জানা গেছে, জহিরুল হকের সকল অনিয়ম-দুর্নীতিতে সহযোগিতা করছেন তার আত্মীয় মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সিন্ডিকেট সদস্য।

জহিরুল হক পিডিবিতে চেয়ারম্যানের ডানহাত হিসেবে পরিচিত, বস্তুতঃপক্ষে খালেদ মাহমুদকে ব্যবহার করেই সব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন জহিরুল হক। আর খালেদ মাহমুদ যিনি কার্যতঃ অবসরেই গিয়েছিলেন তিনি আবার নতুন করে নিয়োগ পাওয়াকে ক্রিকেটের ভাষায় ’লাইফ’ পাওয়া বলে মনে করছেন। তিনি তার ঘনিষ্ঠজনদের বলেছেন- ‘লাইফ’ যখন পেয়েছি যতদূর পারি ‘রান’ তুলে নিই। এই ‘রান’ হচ্ছে ‘নগদ নারায়ণ’ এমনটাই বলছেন পিডিবি সংশ্লিষ্টরা।

 

Writers’ families are under pressure from pro-govt. pressure groups in Sylhet

Md Abu Mustofa, a writer from Sylhet, who occasionally writes from the UK on various societal, political and economic issues of Bangladesh has recently found himself in the midst of Awami wrath. His writing, unconfirmed sources say, is symptomatic of the ills of disinformation and propaganda. Like Mr. Mustofa, many such writers have been targeted and according to our source in the Secretariat, active plans are being hatched to lay down regulations as to what is expected of the media outlets.
According to ABCNEWSREPORTSNOW, which conducted an interview with Mr. Mustofa, it transpires that Mr. Mustofa’s frustration with the current culture of political aggression and climate of political persecution comes from the knowledge that even constructive criticism is actively discouraged.  His family have been harassed, intimidated by the “Awami cronies and miscreants”, he reportedly said.
It appears that there has been a wider crackdown on writers and bloggers who are actively pursuing an anti-government stance in their writing. Whether this is a legitimate action, that is not clear given the freedom of speech in the Bangladeshi constitution is not an unqualified right. It has to be said that the government should have the powers at its disposal to dismantle and dispel propaganda and disinformation. However, where is the boundary? We have reviewed the write-ups of someone like Mr. Mustofa, but have not been able to conclude that these are of harmful quality or not in the public interest. But, overzealous Awami supporters appear to be uninterested in the nuanced dissemination of the words written by people like Mr. Mustofa.
It is anticipated that some form of legislation is underway to regulate the publication of opinions and news.
Source: http://abcnewsreportsnow.com/