বিদেশি অতিথিদের স্বাগত জানাতে গিয়ে ছাত্রলীগের মারামারি, আহত ১৪

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকায় সফরে আসা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানদের স্বাগত জানাতে ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত আনন্দ র‌্যালিতে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকায় সাউন্ড সিস্টেমে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদের নেতাকর্মীদের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ১৪ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার বিকাল চারটায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আনন্দ র‌্যালি করার জন্য কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন কেন্দ্রীয়, ঢাবি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে সাউন্ড বক্সে গান বন্ধ করে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে হাতাহাতিতে জড়ান সাদ্দাম হোসাইন ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদের অনুসারীরা। এ ঘটনায় দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদসহ উভয়পক্ষের ১৪ জন আহত হয়েছেন।

হাতাহাতির ঘটনার পর সাদ্দাম হোসাইন তার অনুসারীদের নিয়ে ঢাবির ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ভেতরে অবস্থান নেন এবং র‌্যালিতে যোগ না দিয়ে শেষ মুহূর্তে রাজু ভাস্কর্যের সমাবেশে যোগ দেন। তবে জুবায়ের আহমেদ র‌্যালি ও সমাবেশের কোনোটিতেই যোগ দেননি।

এ বিষয় জুবায়ের আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে করোনার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ। তাই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রোগ্রাম সফল করার জন্য ওদের (ঢাবিকে) সাহায্য করে থাকি। সেই ধারাবাহিকতায় আজও গিয়েছি। যখন সবাই শহিদ মিনারে জড়ো হচ্ছে তখন সাউন্ড সিস্টেমে গান বাজতে ছিল। তাই আমি পাঁচ মিনিটের জন্য সেটি বন্ধ করতে বলেছি। যাতে করে আমার ছেলেদের স্লোগান দিয়ে উজ্জীবিত রাখতে পারি। তাই আমার দুইটি ছেলে অনুরোধ করার জন্য গেলে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে পাঠিয়ে দেয়। তারপর আমি গিয়ে সাউন্ড বক্সটা বন্ধ রাখার জন্য বললে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা আমাকে হিট (আক্রমণ) করে। তখন ওরে থামাতে গেলে পেছন থেকে এসে আরেকটা ছেলে আমাকে ধরে। এতে আমার গাল কেটে যায়। আর আমাকে সেইভ করতে আসলে আমার প্রায় ৭ জন নেতাকর্মী আহত হয়।

এদিকে হাতাহাতির ঘটনায় আহত ঢাবি ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, জুবায়ের আহামেদ কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের ওপর হামলা চালায়। তখন আমাদের আরও নেতাকর্মীরা গেলে ধস্তাধস্তি হয় এবং জুবায়ের আহমেদও এর মধ্যে পড়ে। আর আমরা যখন ফিরছিলাম তখন সাদ্দাম ভাইয়ের ওপর হামলার চেষ্টা করে তারা।

ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন বলেন, যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করেছে, আমাদের সাউন্ড সিস্টেম ধ্বংস করেছে, কর্মসূচির ব্যানার পোস্টার নষ্ট করেছে তাদের বিরুদ্ধে যাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আমাদের ওপর যে হামলা হয়েছে তাতে সাতজন আহত হয়েছে। আর বিষয়টি আমরা কেন্দ্রকেও জানিয়েছি যাতে তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।

হাতাহাতির ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না- জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে  একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তারা রিসিভ করেননি।

ছোট হয়ে আসছে সিলেবাস

এবার করোনাভাইরাসের ধাক্কা লেগেছে আগামী বছরের এসএসসি এবং এইচএসসি পরীক্ষায়ও। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি এবং এপ্রিলে নির্ধারিত আছে এই দুটি পরীক্ষা। এর মধ্যে এসএসসির পরীক্ষার্থীরা একটি বছর বাসায় বসেই কাটিয়ে দিয়েছে। এমনকি দশম শ্রেণিতেও তিনটি মাস চলে গেছে। গত আগস্টে ভর্তি করা একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা স্বয়ংক্রিয়ভাবে দ্বাদশ শ্রেণিতে ওঠার অপেক্ষায় আছে। উভয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরাই এখন পর্যন্ত সরাসরি পদ্ধতির পাঠদান থেকে বঞ্চিত। এ অবস্থায় তাদের সিলেবাসও ছোট করে পরীক্ষা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের সংক্ষিপ্ত সিলেবাস তৈরি করে অনুমোদনের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য অধ্যাপক মশিউজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, ২০২২ সালে যারা এসএসসি পরীক্ষা দেবে তারা এখন দশম শ্রেণিতে। নবম শ্রেণিতে তাদের সরাসরি পাঠদান হয়নি। আর ওই বছরের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদেরও একই পরিস্থিতি। তবে তাদের পরীক্ষার সময়টা একেবারে কাছে নয়। যে কর্মদিবস আছে, সেটাই বিবেচনায় নিয়ে সিলেবাস পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে সাধারণ ছুটি চলছে দেশের শিক্ষাঙ্গনে। আগামী ৩০ মার্চ স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সরকার। আর ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার কথা আছে। কিন্তু ইতোমধ্যে করোনাভাইরাস সংক্রমণ নতুন করে উর্ধ্বমুখী হয়েছে। এই বাস্তবতায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে। এর ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলায় অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ফের বেড়ে যেতে পারে ছুটি। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার তারিখের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে সরকার এবারের এসএসসি-এইচএসসি এবং পিইসি-জেএসসি পরীক্ষার্থীদের শ্রেণিকাজের পরিকল্পনা করেছিল। একইসঙ্গে অন্য শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সরাসরি পাঠদানের পরিকল্পনাও চূড়ান্ত ছিল। করোনাভাইরাস সংক্রমণের নতুন ঢেউয়ের কারণে সেই পরিকল্পনা বিঘ্নিত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ফলে পাঠদান আর পরীক্ষাগ্রহণে নতুন পরিকল্পনা নিতে হচ্ছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এই অবস্থায় আগামী বছরের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার সিলেবাস নিয়েও নতুন পরিকল্পনা ও প্রস্তাব তৈরি হয়েছে।

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের সিলেবাসের ওপর ২১ সপ্তাহের একটি অ্যাসাইনমেন্ট প্রকাশ করা হয়েছে। বিষয়ভিত্তিক ওই সিলেবাস অনুযায়ী, প্রতি সপ্তাহে দুটি করে অ্যাসাইনমেন্ট রাখা হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে বাংলা, ইংরেজি এবং গণিতের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। সিলেবাসটি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে (www.dshe.gov.bd) আছে। ক্লাস চালু হলে যে বিষয়গুলোর ওপর শ্রেণির কাজ হবে সেগুলোর ওপর এই অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন এনসিটিবি সদস্য অধ্যাপক মশিউর রহমান।

প্রস্তাবে যা আছে : সূত্র জানায়, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে এনসিটিবি থেকে আগামী বছরের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ওপর একটি সিলেবাস অনুমোদনের জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সেটি বর্তমানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। অনুমোদনের পর এটি স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে পৌঁছাতে শিক্ষা বোর্ডগুলোতে পাঠানো হবে। বোর্ডগুলো তা প্রকাশ করবে।

সূত্র জানিয়েছে, প্রস্তাবিত সিলেবাসটি কর্মদিবস ধরে তৈরি হয়েছে। প্রস্তাব অনুযায়ী, ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়ার আগে কমপক্ষে ১৫০ কর্মদিবস শ্রেণিকাজ হবে। আর এইচএসসির ক্ষেত্রে ১৮০ কর্মদিবস ক্লাস নেওয়া হবে। যদি ৩০ মার্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়, তাহলে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য সপ্তাহে ৩ দিন ক্লাস নেওয়া হবে তাদের। দিন ধরে পরিকল্পনা তৈরি করায় ২০ শতাংশের মতো সিলেবাস কমছে বলে জানা গেছে। এই দুটি পরীক্ষায় প্রায় ৩৩ লাখ পরীক্ষার্থী আছে বলে জানা গেছে।

এ বছরের এসএসসি-এইচএসসি : এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষা আগামী জুলাই থেকে অক্টোবরের মধ্যে নেওয়ার চিন্তা আছে সরকারের। এ লক্ষ্যে ইতোমধ্যে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস প্রকাশ করা হয়েছে। সেটি অনুযায়ী শিক্ষার্থীরা প্রস্তুতি নিচ্ছে। এছাড়া এসব শিক্ষার্থী যথাসম্ভব অনলাইন ও দূরশিক্ষণ কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছে।

এরপরও এসব শিক্ষার্থীর সরাসরি পদ্ধতির পাঠদান শুরুর চিন্তা আছে সরকারের। ৩০ মার্চ খোলা সম্ভব হলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ৬০ দিন ক্লাস নেওয়া হবে। আর এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া হবে ৮৪ দিন। এসব পরীক্ষার্থীকে সপ্তাহে ৬ দিনই ক্লাসে নিয়ে আসার পরিকল্পনা আছে সরকারের। এই দুটি পরীক্ষায় প্রায় ৩২ লাখ পরীক্ষার্থী আছে বলে জানা গেছে।

জেএসসি-পিইসি পরীক্ষা এবং অন্যদের ক্লাস : সূত্র নিশ্চিত করেছে, জেএসসি পরীক্ষার ব্যাপারে সরকারের এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে ঘোষিত পরিকল্পনায় মনে হচ্ছে, সরকার এবার এই পরীক্ষাটি নিতে চাচ্ছে না। যে কারণে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মতোই তাদেরকেও (অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী) সপ্তাহে একদিন স্কুল-মাদ্রাসায় আনার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে।

তবে পিইসি পরীক্ষা নেওয়ার ব্যাপারে অনড় আছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। যে কারণে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি শিক্ষামন্ত্রীর ব্রিফিংয়ে এবারের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে পিইসি পরীক্ষার্থীদেরও সপ্তাহে ৬ দিন স্কুলে আনার কথা বলা হয়েছে। পরে আলাপকালে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, পিইসি পরীক্ষা নেওয়া হবে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ

দেশব্যাপী মোমবাতি প্রজ্জ্বলন এবং আলোকসজ্জা করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবর্ষ উদযাপন করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।

মঙ্গলবার দিনগত রাত ১২টা ১ মিনিটে স্বাস্থ্যবিধি মেনে প্রতিটি ভবনের সামনে ১০০ মোমবাতি জ্বালিয়ে উৎসবমুখর পরিবেশেবঙাগবন্ধুর জন্মদিন উদযাপন করা হয়।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. ফয়জুল করিম এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের নেতৃত্বে গাজীপুরে মূল ক্যাম্পাস, ঢাকার ধানমণ্ডিতে নগর কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ গবেষণা ইনস্টিটিউটসহ বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর, সিলেট, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কার্যালয়ে একযোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

ধানমণ্ডিতে নগর কার্যালয়ে ১০০ মোববাতি জ্বালিয়ে জাতির পিতার জন্ম শতবর্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির দর্শন আজকে বিশ্বপরিসরে স্বীকৃত। এখন বিশ্বব্যবস্থার যে রাজনীতি সে রাজনীতিতেও বঙ্গবন্ধুর দর্শন সমানভাবে অপরিহার্য। বাঙালির জন্য যেটি অনন্য গৌরবের ফসল। তার জন্মক্ষণের মুহূর্তটি এ কারণে আমাদের কাছে আনন্দময় ও উচ্ছ্বাসের। এই ক্ষণটিতে শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুর জন্ম নয়, এই ক্ষণটি বাংলাদেশ জাতির রাষ্ট্রের জন্মের উৎপত্তির ক্ষেত্র। এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমাদের প্রত্যয় বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।’

দেশব্যাপী মোমবাতি প্রজ্জ্বলন ও আলোকসজ্জার অনুষ্ঠানটি মধ্যরাতে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক পেইজে লাইভ সম্প্রচার হয়েছে। গাজীপুরে মূল ক্যাম্পাস এবং নগর কার্যালয়ের সঙ্গে সব আঞ্চলিক কার্যালয়গুলো ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম জুমের মাধ্যমে যুক্ত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে যুক্ত ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর, শিক্ষক প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন, স্নাতকপূর্ব স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. মো. নাসির উদ্দিন, রেজিস্ট্রার মোল্লা মাহফুজ আল-হোসেনসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রধানগণসহ, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা।

এদিকে বুধবার সকালে ভিসি প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমানের নেতৃত্বে রাজধানীর ধানমণ্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো হয় বলে ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।

গাজীপুরের আহাকিতে ট্রেনে কাটা পড়ে দুই শিশু নিহত

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানাধীন আহাকি এলাকায় ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে দুই শিশু নিহত হয়েছে। রোববার দুপুরে রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ দুটি উদ্ধার করেন কোনাবাড়ী মেট্রো থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) শওকত ইমরান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, আহাকি এলাকায় ঢাকা-রাজশাহী রেললাইনে ওই দুই শিশু বসেছিল। সকাল ১০টার দিকে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ওই দুই শিশু কাটা পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই তারা দুজন মারা যায়।
তাৎক্ষনিক নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি। তাদের বয়স আনুমানিক ১২ থেকে ১৪ বছর। নিহত একজনের পরনে জিন্স প্যান্ট ও কমলা রঙের টি-শার্ট এবং অন্যজনের জিন্স প্যান্ট ও হালকা কালো রঙের ফুল শার্ট রয়েছে।

জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশন পুলিশ ক্যাম্পের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ আব্দুল মান্নান জানান, খবর পেয়ে দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ দুটি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
তাৎক্ষনিক নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি। তবে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান তিনি।

কিশোরীকে ধর্ষণ মামলায় যুবক গ্রেপ্তার

ফেনীর পরশুরাম উপজেলায় কিশোরীকে (১৪) ধর্ষণের অভিযোগে করা মামলায় এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে পরশুরাম থানা-পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

গ্রেপ্তার ওই যুবকের নাম শফিকুর রহমান (৩৫)। তিনি উপজেলার বক্সমাহমুদ ইউনিয়নের উত্তর মোহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা।

পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ৭ মার্চ ওই কিশোরী উপজেলার একটি গ্রামে বেড়াতে যায়। সন্ধ্যায় কৌশলে কিশোরীকে একটি পুকুরপাড়ে নিয়ে ধর্ষণ করেন শফিকুর রহমান। বিষয়টি জানাজানি হলে শুক্রবার রাতে ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে পরশুরাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ মামলা করেন। মামলার পর শফিকুরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শওকত হোসেন বলেন, আজ শনিবার গ্রেপ্তার ওই আসামিকে ফেনীর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হয়েছে। আর ওই কিশোরীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে ২৫০ শয্যা ফেনী জেনারেল হাসপাতালে।

২৪ ঘণ্টায় রেকর্ড করোনা রোগী শনাক্ত, মৃত্যু ৬

কোভিড-১৯ এ গত দুই মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছে গত ২৪ ঘণ্টায়।  ১০৫১ জন করোনা রোগী ধরা পড়েছেন নতুন করে।  আর এই সময়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ৬ জনের।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সবশেষ তথ্য জানাতে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

এর আগে বুধবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দুই মাস পর একদিনে হাজারের বেশি মানুষের দেহে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে।  গতকাল শনাক্ত হওয়া ১০১৮ জনের রেকর্ডও ভেঙে দিয়েছে আজকের পরিসংখ্যান।  নতুন ১০৫১ জনসহ মোট ৫ লাখ ৫৪ হাজার ১৫৬ জন করোনা রোগীর শনাক্ত হয়েছে দেশে।

আর নতুন মারা যাওয়া ৬ জনসহ দেশে ৮৫০২ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫ লাখ ৭ হাজার ৯০২ জন।

এর আগে সর্বশেষ ১০ জানুয়ারি স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক দিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্তের তথ্য দিয়েছিল, সেদিন ১ হাজার ৭১  জনের মধ্যে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল। সেদিনের পর থেকে এ পর্যন্ত দেশে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা হাজারের নিচেই ছিল।

বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গতবছর ৮ মার্চ।  প্রথম মৃত্যু হয় ১৮ মার্চ।

বাড়তি আয়ের জন্য খোলা হবে বিপণিবিতান

এগিয়ে চলেছে মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজ। নির্মাণব্যয়ের মতোই সরকারের এ মেগা প্রকল্পের রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার খরচও তুলনামূলক বেশি। ফলে কেবল যাত্রী পরিবহন করে মেট্রোরেলের ব্যয় মেটানো কঠিন হবে বলে মনে করছে কর্তৃপক্ষ। এ জন্য বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে বিপণিবিতান, হোটেল, বিনোদনকেন্দ্রসহ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। মেট্রোরেল নির্মাণের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান ঢাকা মাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) এ তথ্য জানিয়েছে।

বর্তমানে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেলের প্রথম প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে ঢাকায় ছয়টি মেট্রোরেলের লাইন নির্মাণের পরিকল্পনা আছে সরকারের। এর প্রতিটিতে বাড়তি আয়ের জন্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খোলা হবে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খোলার এ পদ্ধতির নাম ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (টিওডি) হাব।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, শুরুতে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত নির্মাণাধীন লাইন-৬–এর উত্তরা প্রান্তে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খোলা হবে। এরপর প্রতিটি লাইনেই এক বা একাধিক স্থানে টিওডি হাব করা হবে। মেট্রোরেলের প্রতিটি স্টেশন হবে বহুতল। কোথাও স্টেশনের পাশে পর্যাপ্ত জমি পাওয়া না গেলে স্টেশন প্লাজাতেই বাণিজ্যিক দোকানপাট করার পরিকল্পনা রয়েছে।

চলমান লাইন-৬–এর উত্তরাংশে তিনটি স্টেশন রয়েছে। এগুলো হচ্ছে উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার এবং উত্তরা দক্ষিণ। পরিকল্পনা অনুসারে, প্রথম টিওডি হাব হবে উত্তরা সেন্টার স্টেশনকে ঘিরে। এর জন্য রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে ২৮ দশমিক ৬২ একর জমি কেনা হয়েছে। মেট্রোরেল নির্মাণ প্রকল্প থেকে ইতিমধ্যে জমির মূল্য হিসেবে রাজউককে প্রায় ৮৬৬ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের নির্দেশনায় মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের কাছে তুলনামূলক কম দামে জমি দিয়েছে রাজউক।

এখন বিস্তারিত নকশা প্রণয়ন করা হবে। মেট্রোরেল লাইন-৬–এর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিপ্পন কোই–এর নেতৃত্বাধীন এনকেডিএম অ্যাসোসিয়েশন টিওডি হাব নির্মাণের নকশা প্রণয়ন, উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব তৈরি ও দরপত্র দলিলসহ যাবতীয় পরিকল্পনা প্রণয়ন করবে।

এ পরিকল্পনার বিষয়ে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘টিওডি হাবে কী কী স্থাপনা নির্মাণ করা হবে, তা নকশা চূড়ান্ত হলে জানা যাবে। তবে মেট্রোরেল থেকে নেমে একজন মানুষ যাতে দরকারি সব পণ্য কিনতে পারেন, সেই ব্যবস্থা থাকবে। স্থাপনার ধরন ও সংখ্যার ওপর নির্মাণ ব্যয় নির্ভর করবে। বাণিজ্যিক প্রকল্পের জন্য সরকার নিজেই অর্থায়ন করতে পারে। জাপানসহ অন্য দেশ থেকেও ঋণ সহায়তা পাওয়া যাবে।’

সাবেক এই জ্যেষ্ঠ সচিব আরও বলেন, মেট্রোরেলের স্টেশন ঘিরে আয়বর্ধক বাণিজ্যিক স্থাপনা জাপান, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশে আছে। এ ধারণা থেকে বাংলাদেশকেও একই পথে হাঁটার পরামর্শ দেন জাপানি পরামর্শকেরা। এরপরই টিওডি হাব করার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

গাবতলীতে হবে টিওডি হাব

গাবতলী বাস টার্মিনালটি বর্তমানের জায়গা থেকে সরিয়ে নিতে চাইছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। তবে মেট্রোরেল প্রকল্পের আওতায় এ জায়গায় টিওডি হাব করতে চায় ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, গাবতলী বাস টার্মিনালের জায়গায় টিওডি হাব হলে বর্তমানের অবকাঠামো ভেঙে ফেলার প্রয়োজন হবে না। বিষয়টি নিয়ে ডিএনসিসির সঙ্গে আলোচনা চলছে। শিগগিরই ডিএমটিসিএল ও সিটি করপোরেশনের মধ্যে সমঝোতা স্মারক সই হতে পারে।

ডিএমটিসিএলের কর্মকর্তারা বলছেন, ভবিষ্যতে তিনটি মেট্রোরেল, একটি সার্কুলার রেল ও একটি চার লেন সড়কের সংযোগস্থল হবে গাবতলী। এ জন্য সেখানে পরিকল্পিতভাবে বিপণিবিতান, হোটেল, বিনোদনকেন্দ্র, বাস টার্মিনালসহ বাণিজ্যিক স্থাপনা গড়ে তুললে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের আয় বাড়বে।

আরও যেসব পরিকল্পনা

গাবতলী এলাকার তিনটি মেট্রোরেলের লাইনের পথ হচ্ছে লাইন-১ (গাবতলী থেকে ধানমন্ডি, গুলিস্তান হয়ে চিটাগং রোড), লাইন-৫ উত্তর পথ (সাভারের হেমায়েতপুর থেকে মিরপুর ও গুলশান হয়ে ভাটারা), লাইন-৫ দক্ষিণ পথ (গাবতলী থেকে রাসেল স্কয়ার ও হাতিরঝিল হয়ে দাশেরকান্দি)। গাবতলী ছাড়াও এসব লাইনে একাধিক টিওডি হাব নির্মাণের পরিকল্পনা আছে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের।

নির্মাণাধীন এমআরটি লাইন-৬ এর পর কাজ দ্রুত শুরু করার পরিকল্পনা আছে লাইন-১–এর। এই লাইনের দুটি অংশ। প্রথম অংশটি পাতাল পথে কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত। দ্বিতীয় অংশটি বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার পাশ দিয়ে পূর্বাচলের পিতলগঞ্জে যাবে। এ লাইন নির্মাণের পূর্ণাঙ্গ নকশা ৭৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। জমি অধিগ্রহণ চলছে। পূর্বাচলে একটি টিওডি হাব নির্মাণ করার পরিকল্পনা আছে।

মাটি থেকে প্রায় ১৩ মিটার ওপরে এই উড়ালপথ। বিদ্যুৎ সঞ্চালনের খুঁটি বসেছে। চলছে রেললাইন স্থাপনের কাজ। এরপর এই পথ দিয়েই চলবে ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল। ১০ অক্টোবর রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায়

মাটি থেকে প্রায় ১৩ মিটার ওপরে এই উড়ালপথ। বিদ্যুৎ সঞ্চালনের খুঁটি বসেছে। চলছে রেললাইন স্থাপনের কাজ। এরপর এই পথ দিয়েই চলবে ঢাকার প্রথম মেট্রোরেল। ১০ অক্টোবর রাজধানীর উত্তরার দিয়াবাড়ি এলাকায়
ছবি: তানভীর আহাম্মেদ

উল্লেখ্য, মেট্রোরেলের ভাড়া ঠিক করতে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের একটি কমিটি কাজ করছে। এর সঙ্গে যুক্ত সূত্র জানিয়েছে, মেট্রোর ভাড়া খুব বেশি ধরার সুযোগ নেই। এতে মেট্রো জনপ্রিয়তা পাবে না। এ ক্ষেত্রে প্রকল্পের ব্যয় ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ তুলতে হলে বছর বছর ভর্তুকি দিতে হবে। এতে মেট্রোরেল দায়গ্রস্ত প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে পারে। মূলত এ কারণে বাড়তি আয়ের লক্ষ্যে টিওডি হাব খোলার মতো বাণিজ্যিক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও পরিবহন বিশেষজ্ঞ সামছুল হক প্রথম আলোকে বলেন, রক্ষণাবেক্ষণ খরচের কারণে সারা পৃথিবীতে মেট্রোরেলকে শ্বেতহস্তী মনে করা হয়। এ জন্য অনেক দেশেই সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয়। টিওডির ধারণা আধুনিক ও বিশ্বব্যাপী সমাদৃত। তবে টিওডি শুধু মেট্রোরেলকেন্দ্রিক বিষয় নয়। শুধু বিপণিবিতান নির্মাণ করলেই চলবে না। পুরো শহর পরিকল্পনার সঙ্গে সমন্বয় করতে হবে। এ প্রকল্প নিজের টাকায় না করে সরকারি-বেসরকারি যৌথ বিনিয়োগে (পিপিপি) করার পরামর্শ দেন তিনি।

নামাজ শেষে রাস্তা পার হতে গিয়ে এসআই নিহত

সাভারের আশুলিয়ায় নামাজ শেষে রাস্তা পার হতে গিয়ে অজ্ঞাত পরিবহনের চাকায় পিষ্ট হয়ে মোনায়েম (৬০) নামে শিল্প পুলিশের এক উপপরিদর্শক (এসআই) নিহত হয়েছেন।

রোববার সকালে টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড সড়কের আশুলিয়ার সরকার মার্কেট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

মোনায়েম শিল্প পুলিশ ১-এর উপপরিদর্শক (এসআই)। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জে।

আশুলিয়া থানার এসআই ফরিদুল আলম জানান, রাতে সরকার মার্কেট বান্ডু গার্মেন্টস ক্যাম্পে ডিউটিতে ছিলেন মোনায়েম।

ভোরে নামাজ শেষে রাস্তা পার হতে গিয়ে কোনো এক অজ্ঞাত পরিবহনের চাকায় পিষ্ট হন তিনি। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার।

নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

শেখ হাসিনা মানুষের আস্থার বাতিঘর

বিএনপি দেশের জনগণের জন্য এখন কৃত্রিম দরদ দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

দেশের মানুষ বেঁচে থাকার জন্য হিমশিম খাচ্ছে- বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনাকালে অসহায় ও কর্মহীন মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে তারা এখন মায়াকান্না কাঁদছে।

ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার তার সরকারি বাসভবন থেকে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।

দেশের মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা আছে বলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের আস্থার বাতিঘরে পরিণত হয়েছেন, মাদার অব হিউম্যানিটি হয়েছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পক্ষান্তরে বিএনপি জীবন্ত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারে আর এখন কৃত্রিম দরদ দেখায়।

তিনি বলেন, বিএনপি আমলে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছিল, সে সময়ের সরকার দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল। বর্তমান সরকারের আমলে দুর্নীতি করে কেউ ছাড় পায় না। যে যত বড় নেতা হোক, এমনকি জনপ্রতিনিধি হলেও জবাবদিহি করতে হয়।

এর আগে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যালোচনা সভায় তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হন।

এ সময় তিনি দেশের যেসব এলাকায় নির্মাণাধীন সড়কের কাজ ঢিলেঢালাভাবে চলছে সেসব সড়কগুলো দ্রত শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বর্ষার আগেই সারা দেশে চলমান সংস্কার কাজগুলোও শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

বাস রেপিড ট্রানজিট-বিআরটি প্রকল্প নিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্প আমাদের দুর্ভাবনার একটি প্রকল্প। এই প্রকল্প অনেক অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে। ২০১২ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের সওজ অংশের অগ্রগতি মাত্র ৩৫%। আমি এই ব্যর্থতা সম্মিলিত বলে মনে করি।

তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে সৎ ও নিষ্ঠার সঙ্গে এই প্রকল্পসহ বিভিন্ন চলমান কাজ মানসম্মত রেখে দ্রুত শেষ করার কঠোর নির্দেশ দেন।

অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলার সহকারীর রহস্যজনক মৃত্যু

টালিউডের জনপ্রিয় নায়ক অঙ্কুশ হাজরার ব্যাক্তিগত সহকারী পিন্টু দের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে নিজ বাড়ি থেকে। পিন্টু অঙ্কুশের প্রেমিকা অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা সেনেরও সহকারী হিসেবেও কাজ করেছেন দীর্ঘদিন।  টালিউড অভিনেতা-অভিনেত্রীর সহকারীর মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছেন।  এ ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে জানিয়েছেন সে কথা।  খবর জিনিউজের।

মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাতে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতার কাঁকুড়গাছির বাড়ি থেকে পিন্টুর লাশ উদ্ধার করা হয়। বুধবার সকালে এই খবর ছড়িয়ে পড়ে।
পুলিশের ধারণা, পিন্টু আত্মহত্যা করেছেন।  তবে পরিবারের অভিযোগ, প্রায়ই ফোনে টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়া হতো পিন্টুকে। এ ঘটনার সঙ্গে হুমকিদাতাদের কোনো যোগাযোগ রয়েছে কিনা, খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার মরদেহ উদ্ধার হওয়ার পরে নীলরতন সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয়। বুধবার সকালে পিন্টুর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।

কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের একজন কর্মকর্তা জানান, ভার্চুয়াল মাধ্যমে ব্ল্যাকমেলের শিকার হয়ে মানসিক চাপে ভুগছিলেন পিন্টু। প্রাথমিকভাবে পুলিশ এ তথ্য জানতে পেরেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ জানায়, পিন্টুর মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।  তা থেকে এই মৃত্যুরহস্য খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

টালিউডে পিন্টুর পরিচিতি ছিল অঙ্কুশ-ঐন্দ্রিলার ছায়াসঙ্গী ‘বাপ্পা দা’ হিসেবে।  তার মৃত্যুর খবর শুনে বুধবার পিন্টুর বাড়িতে যান তারা।

পরিবারের অভিযোগ, নিয়মিত টাকা চেয়ে হুমকি দেওয়া হত পিন্টুকে। পুলিশ জানিয়েছে, গত দেড় মাসে ভাগে ভাগে মোট ৩০ হাজার টাকা তার অ্যাকাউন্ট থেকে তুলে অজ্ঞাত কাউকে পাঠানো হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ, এর জেরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন পিন্টু।

অঙ্কুশ আনন্দবাজারকে জানান, ঘুণাক্ষরেও তিনি সে সব কিছু টের পাননি।  পিন্টুর ফোনে কেন হুমকি দেওয়া হতে সে বিষয়ে এখনও কিছুই জানা যায়নি বলে দাবি করেন অঙ্কুশ।

অঙ্কুশ আরও জানান, তার কাছ থেকেও কয়েক বার টাকা নিয়েছিলেন পিন্টু। অভিনেতার দাবি, ধার শোধ করতে হবে বলেই সে টাকা চেয়েছিলেন তার ব্যক্তিগত সহায়ক।

পিন্টুর মৃত্যুতে শোকে মুহ্যমান অঙ্কুশ বলেন, ‘খুবই সৎ মানুষ ছিলেন বাপ্পাদা। তাই যখনই টাকা চেয়েছেন, দিয়ে দিয়েছি। জানতাম, খারাপ কাজ করতেই পারেন না। টাকা চাওয়ার আসল কারণ বুঝতে পারলে এ ভাবে অসময়ে চলে যেতে দিতাম না।’

অঙ্কুশের প্রেমিকা ঐন্দ্রিলা মনে করছেন পিন্টু আত্মহত্যা করেছেন। তার ভাষ্য, ‘কী করে এমন কাজ করল বাপ্পাদা? নিজের মা আর বোনকে ফেলে চলে যেতে পারল!’