যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে রেকর্ড ১৭৩৬ মৃত্যু

যুক্তরাষ্ট্রে একদিনে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। মঙ্গলবার দেশটিতে মারা গেছেন ১ হাজার ৭৩৬ জন। জন হপকিনস বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগৃহীত তথ্যানুযায়ী, দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ১২ হাজার ৭২২।

বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রেই সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তের সংখ্যা ৩ লাখ ৯৮ হাজার। সারা বিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ১৪ লাখ ছাড়িয়েছে। খবর বিবিসির

যুক্তরাষ্ট্রে এর আগে ৪ এপ্রিল একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড হয়েছিল। সেটা ছিল ১ হাজার ৩৪৪।

তবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, পরিস্থিতি সবচেয়ে খারাপের দিক দিয়ে শীর্ষে উঠে এখন ধীরে ধীরে পাল্টাতে শুরু করেছে। মঙ্গলবার নিউইয়র্কে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে। মৃতের সংখ্যা ৭৩১।

গভর্নর অ্যান্ড্রু কুওমো বলেন, তার রাজ্যে মহামারি শিখরের কাছাকাছি পৌঁছেছে। হাসপাতালগুলোতে প্রচুর রোগিকে চিকিৎসা ও নিবিড় পরিচর্যা দেয়া হয়েছে।

গভর্নর নাগরিকদের ঘরের ভেতরে থাকা এবং সামাজিক দূরত্ব অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, কাজটা কঠিন। কিন্তু তবুও আমাদের সেটা চালিয়ে যেতে হবে।

তিনি ইস্টার পর্ব উপলক্ষে সমাবেশগুলো এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শও দেন তাদের।

ওদিকে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে ধারণার চেয়ে কম মৃত্যুর জন্য আমাদের কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, তিনি এ নিয়ে বেশি কথা বলতে বিরক্ত বোধ করেন।

এর আগে প্রেসিডেন্টের করোনাসংক্রান্ত টাস্কফোর্স মহামারিতে যুক্তরাষ্ট্রে ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষের প্রাণহানির সম্ভাবনা রয়েছে বলে ধারণা করেছিল।

ট্রাম্প অভিযোগ করেন, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা চীনকে নিয়ে ব্যস্ত ছিল। যুক্তরাষ্ট্র তাদের প্রচুর অর্থ দিয়েছে। কিন্তু সেভাবে তাদের কাছ থেকে মনোযোগ পায়নি।

করোনাভাইরাসরোধে উগান্ডায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ব্যতিক্রম এক উদ্যোগ নিয়েছে আফ্রিকার দেশ উগান্ডা।

দেশটির এন্তিবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশের সময় এ উপলক্ষে যাত্রীদের শরীরে এক ধরনের জীবানুনাশক ছিটিয়ে দেওয়া হবে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম করোনার অস্তিত্ব ধরা পড়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তা ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাসে উগান্ডার কেউ এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত না হলেও বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে দেশটির সরকার।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানবন্দরে প্রবেশের সময় যাত্রীদের শরীরে জীবানুনাশক ছিটিয়ে দেওয়া হবে। শিগগিরই এই কার্যক্রম শুরু হবে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ করোনায় আক্রান্ত ১৬টি উচ্চ ঝুঁকির দেশ থেকে কেউ উগান্ডায় ফিরলে তাকে স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সর্বশেষ পাওয়া তথ্যানুযায়ী বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৮০ জনে; আর মৃত্যু হয়েছে ৪৬৩৪ জনের।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণকে এরই মধ্যে বুধবার বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

বিবিসি জানিয়েছে, এই ভাইরাসে চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে। ইতালি থেকে পুরো ইউরোপ এবং আফ্রিকা ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাস। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে ইরানে এ ভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে আগেই পৌঁছেছে করোনাভাইরাস। বাংলাদেশে সংক্রমণের ধরা পড়ে গত রোববার।

চীনের বাইরে প্রতিদিনই নতুন নতুন দেশে এ ভাইরাসের সংক্রমণের তথ্য আসছে। দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারতে বাড়ছে নতুন রোগীর সংখ্যা।

সার্স ও মার্স পরিবারের সদস্য করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ফ্লুর মতো উপসর্গ নিয়ে যে রোগ হচ্ছে তাকে বলা হচ্ছে কভিড-১৯। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এখন পর্যন্ত এ রোগে মৃত্যুহার ৩.৪ শতাংশ, যেখানে মৌসুমি ফ্লুতে মৃত্যুহার থাকে ১ শতাংশের নিচে। তবে করোনায় ৯ বছরের নিচের কেউ মারা যায়নি। প্রবীণদের মধ্যেই মৃত্যুহার বেশি।

করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মতো। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।

করোনাভাইরাসের কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনও তৈরি হয়নি। ফলে এমন কোনো চিকিৎসা এখনও মানুষের জানা নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। আপাতত একমাত্র উপায় হলো আক্রান্তদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।

১৩ হাজার ফোন পেয়েও নিশ্চুপ ছিল পুলিশ

রাজধানীতে চার দিনব্যাপী চলা সংঘর্ষে ১৩ হাজার ২০০টি ফোন কল পেয়েছিল দিল্লি পুলিশ। কোথাও গুলি চলছে, কোথাও গাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে- এমন সব সহিংসতার অভিযোগ আসছিল। এরপরও নির্বিকার ছিল পুলিশ। সহিংসতার শুরু থেকেই পুলিশের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা হতে থাকে এবং তার মধ্যেই সংবাদমাধ্যমে এমন তথ্য উঠে এলো। এদিকে, সহিংসতার আবহ কেটে ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হওয়ার পথে রাজধানীর উত্তর-পূর্ব অংশ। তবে চার দিনব্যাপী তাণ্ডবের রেশ এখনও বিভিন্ন জায়গায় রয়ে গেছে। চারদিকে থমথমে পরিবেশ। দু’একটা দোকান খুললেও রাস্তাঘাট বেশ ফাঁকা। টহল দিচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

সরানো হচ্ছে সহিংসতায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ। প্রয়োজন ছাড়া এখনও বাড়ির বাইরে যেতে সাহস পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ। তবে অফিস চালু হয়েছে। এরই মধ্যে গতকাল শনিবার দিল্লির ব্যস্ততম মেট্রো স্টেশন রাজীব চকে ‘গালি মারো’ স্লোগানে নতুন করে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এর জেরে ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ। কয়েকদিনের সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১২৩টি এফআইআর দায়ের করেছে পুলিশ। প্রায় ৬৩০ জনকে আটক করা হয়েছে। খবর এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া ও আনন্দবাজারের। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধী ও সমর্থকদের সংঘর্ষে গত ২৩ থেকে ২৬ ফেব্রুয়ারি দফায় দফায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজধানী দিল্লি। এতে এখন পর্যন্ত ৪৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন দুই শতাধিক মানুষ। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ প্রশাসনের উদাসীনতার কারণেই উত্তেজনা চরম আকার ধারণ করে। ফোনে বারবার কল করে অভিযোগ জানানোর পরও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতেই পুলিশ কন্ট্রোল রুমের কল লগ খতিয়ে দেখে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম।

তাতে দেখা যায়, ২৩ ফেব্রুয়ারি বিক্ষোভের প্রথম দিন সন্ধ্যাতেই ৭০০ ফোন কল যায় পুলিশের কাছে। পর দিন তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৫০০। তার পর দিন ৭ হাজার ৫০০ ফোন পায় পুলিশ। ওই দিন রাত থেকেই এলাকা পরিদর্শনে বের হন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল। তার পর দিন ১ হাজার ৫০০টি ফোন কল পায় পুলিশ। শুধু যমুনা বিহার থেকেই ভজনপুরা থানায় ২৪-২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার ফোন কল আসে। শুধু সাধারণ মানুষই নয়, তার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতেও  পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ করেছেন যমুনা বিহারের বিজেপি কাউন্সিলর প্রমোদ গুপ্ত। পুলিশ তার ফোনই ধরেনি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। একই অভিযোগ করেন শিববিহারের রাজধানী পাবলিক স্কুলের মালিক ফয়জল ফারুখ।

ঘরবাড়ি খালিই পড়ে আছে : নতুন করে সংঘর্ষ না দেখা দিলেও এখনও বেশ কিছু জায়গায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে। সব রকমের জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে টহল দিচ্ছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স (র‌্যাফ)। জায়গায় জায়গায় মোতায়েন রয়েছে পুলিশ এবং আধাসেনা। ধ্বংসাবশেষ পরিস্কার করতে ক্রেন এবং বুলডোজার নামানো হয়েছে। সহিংসতা চলাকালীন বেশ কিছু এলাকায় ঘর ছেড়ে যায় সাধারণ মানুষ। সেখানে ঘরবাড়ি খালিই পড়ে আছে। তবে আগামী কয়েক দিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে বলে আশাবাদী প্রশাসন।

দাবানলে পুড়ছে অস্ট্রেলিয়া, ২৫০ বাড়ি ছাই

অস্ট্রেলিয়ার সমুদ্র-উপকূলবর্তী বেশ কয়েকটি শহরের দাবানল ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এরইমধ্যে পুড়ে গেছে আড়াইশ ঘরবাড়ি।

ভিক্টোরিয়া অঙ্গরাজ্যের ইস্ট জিপসল্যান্ডে অন্তত ৪৩টি ও নিউ সাউথ ওয়েলসে দুইশ’ বাড়ি পুড়ে ছাই গেছে। খবর বিবিসির।

মঙ্গলবার শহরগুলোর হাজার হাজার আতঙ্কিত বাসিন্দা এবং সেসব শহরে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকরা নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বাড়িঘর ছেড়ে পূর্বাঞ্চলীয় সমুদ্রসৈকতের দিকে ছুটে গিয়েছিলেন।

ভিক্টোরিয়ায় বন্ধ করে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ একটি সড়ক বুধবার দুই ঘণ্টার জন্য খুলে দেওয়া হয়।

তবে ইংরেজি নববর্ষের প্রথম প্রহরেও তাপমাত্রা ও জোর বাতাসের কারণে ১১২টির বেশি ছোট-বড় দাবানলে নিউ সাউথ ওয়েলস পুড়ছে। আর ভিক্টোরিয়া পুড়ছে ৪৫টি দাবানলে।

আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা-এএফপি

নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী গ্লাডাইস ব্রেজিকলিয়ান বলেছেন, তুলনামূলক শীতল আবহাওয়ার সুযোগ নিয়ে রাস্তা পরিস্কার ও বিদ্যুৎ সরবরাহ পুনর্বহালের চেষ্টা করবেন কর্মীরা।

তবে আগামী শনিবার থেকে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।

গত কয়েকদিনে দাবানলে এই অঙ্গরাজ্যে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এ দুর্যোগে নিহতের সংখ্যা ১৩ পৌঁছেছে বলে কর্মকর্তারা নিশ্চিত করেছেন।

এখনও দুর্গম অনেক এলাকায় পৌঁছাতে পারেননি বলে জানিয়েছেন অগ্নি নির্বাপণ কর্মীরা। নিউ সাউথ ওয়েলসের ফায়ার কমিশনার শেন ফিটজসিমন বলেছেন, আমরা অনেক সাধারণ মানুষ আহত বা দগ্ধ হওয়ার খবর পেয়েছি। তবে রাস্তা বা হেলিকপ্টার ব্যবহার করে তাদের কাছে পৌঁছানো খুবই বিপদজনক।

কয়েক মাসের ভয়াবহ এ দাবানল অস্ট্রেলিয়ার চার লাখেরও বেশি হেক্টর জমি বিনষ্ট করেছে।

পেঁয়াজের দাম বাড়ায় মোদিকে দুষলেন প্রিয়াঙ্কা

হঠাৎ করে পেঁয়াজের দাম বাড়ানোর ঘটনায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারকে দুষলেন বিরোধী দল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক প্রিয়াঙ্কা গান্ধী।

শনিবার দিল্লির রামলীলা ময়দানে ভারত বাঁচাও সমাবেশে তিনি এই ক্ষোভ প্রকাশ করেন বলে একাধিক সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদেন জানানো হয়। কর্মী-সমর্থকদের সামনে বিজেপির স্লোগানকেই হাতিয়ার করলেন কংগ্রেস নেত্রী।

বিজেপি নেতৃত্বাধীন সরকারকে তীব্র আক্রমণ করে প্রিয়াঙ্কা বলেন, ‘বিজেপি আছে বলেই না পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকা প্রতি কেজি ছাড়িয়েছে, বিজেপি আছে বলেই তো গত ৪৫ বছরে বেকারত্ব এত বেশি, বিজেপির জন্যেই তো ৪ কোটি কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। আমাদের যেভাবেই হোক দেশের অর্থনীতিকে বাঁচাতে হবে।’

সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমি আপনাদের সবাইকে এই সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানাই। যদি আমরা তা না করি তবে সেই সময় খুব বেশি দূরে নয় যখন এই সরকার বাবসাহেবের সংবিধানকে ধ্বংস করে দেবে।

সমাবেশে যখন বিজেপির বিখ্যাত স্লোগান ‘বিজেপি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়’ শোনা গেল প্রিয়াঙ্কার গলায়; তখন খানিক থমকে গিয়েছিলেন কংগ্রেস কর্মী-সমর্থকরা। তবে সবার সব ধন্দ দূর করে মুহূর্তেই কেন্দ্রীয় সরকারকে বিঁধলেন প্রিয়াঙ্কা।

নাগরিকত্ব সংশোধন বিল নিয়েও কথা বলেন প্রিয়াঙ্কা। তিনি দেশের মানুষকে সচেতন করে বলেন, বিজেপির এই কাজের বিরুদ্ধে আজ গলা না তুলে চুপ থাকলে, ভবিষ্যতে দুঃসময় আসা কেউ আটকাতে পারবে না।

কাশ্মীরের বাজারে গ্রেনেড বিস্ফোরণ, নিহত ১

ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে ফের হামলা চালানো হয়েছে। এ হামলায় একজন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন কমপক্ষে ১৫ জন।

সোমবার বেলা দেড়টার দিকে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

সেনা ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, হরি সিং হাই স্ট্রিট এলাকায় বাজারের মধ্যে গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয়।

আহত ১৫ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ।

দুর্ঘটনার পর থেকেই গোটা এলাকা ঘিরে রেখেছে সেনা ও পুলিশ।

এখনও পর্যন্ত কোনো জঙ্গি গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেনি। ঘটনার পেছনে কোনো গোষ্ঠী রয়েছে কিনা, তা খতিয়ে দেখছে গোয়েন্দারা।

গত সপ্তাহেই উত্তর কাশ্মীরের সোপোরে প্রায় একই রকম গ্রেনেড বিস্ফোরণ ঘটে। ওই বিস্ফোরণেও ১৫ জন আহত হন। এছাড়া গত ২৬ অক্টোবর চেকপোস্টে গাড়ি পরীক্ষা করার সময় নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে গ্রেনেড ছোড়া হয়। তাতে ছয়জন নিরাপত্তাকর্মী আহত হন। এ নিয়ে গত এক মাসে তিনটি গ্রেনেড হামলার ঘটনা ঘটল।

গত ৫ অগস্ট ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ করে জম্মু কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার পর থেকেই উপত্যকায় কড়া নিরাপত্তা মোতায়েন করা হয়েছিল। ল্যান্ডলাইন, মোবাইল, ইন্টারনেট, কেবল টিভির মতো পরিষেবা বন্ধ করে কড়া নজরদারি ছিল নিরাপত্তা রক্ষীদের।

প্রায় তিন মাস পরে এখন পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক। ধীরে ধীরে ছন্দে ফিরছে উপত্যকা। কিন্তু তার মধ্যে আবার গত ৩১ অক্টোবর থেকে কার্যকর হয়েছে জম্মু-কাশ্মীর বিভাজন বিল। অর্থাৎ জম্মু কাশ্মীর এবং লাদাখ আলাদা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এরপর ফের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু তার মধ্যেও ফের হামলার ঘটনা ঘটলো।

কোনো ভাগাভাগি হতে দেব না: মমতা

ভারতের পশ্চিমবঙ্গে জাতীয় নাগরিকপঞ্জী (এনআরসি) হতে দেবেন না বলে জানিয়েছেন রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তিনি বলেন, রাজ্যে কোনো এনআরসি হবে না। কোনো ভাগাভাগি করতে দেব না। আপনারা নিশ্চিন্তে থাকুন। আমরা আপনাদের পাহারাদার।

সোমবার শিলিগুড়িতে এক অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার।

গত মার্চে আলিপুরদুয়ারের এক সভায় এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপির সভাপতি অমিত শাহ জানান,  আসামের পরে পশ্চিমবঙ্গেও এনআরসি হবে।

যার জবাবে মমতা বার বার বলেছেন, কিছুতেই পশ্চিমবঙ্গে এনআরসি করতে দেওয়া হবে না।

তবে উত্তরবঙ্গের সাধারণ মানুষের বেশিরভাগই মত দিয়েছেন বিজেপির পক্ষে। গোর্খা ও রাজবংশীরাও এনআরসির পক্ষে।

আসামে এনআরসি তালিকা প্রকাশ পাওয়ার পরে চিত্রটা বদলে গেছে। বিভিন্ন সূত্রের দাবি, আসামে এনআরসি থেকে বাদ পড়া ১৯ লাখের মধ্যে বেশিরভাগই হিন্দু। তা ছাড়াও আছেন গোর্খা এবং রাজবংশীরাও। তারপর থেকেই কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিঙের মতো উত্তরের জেলাগুলিতে এই নিয়ে প্রচারে নেমেছে তৃণমূল।

এ নিয়ে মমতা বলেন, আমরা রাজবংশীদের ভালবাসি। ওদের গিয়ে মিথ্যা কথা বলা হচ্ছে। আপনাদের ভালবাসি তাই বলছি, কারও কথায় ভুল করবেন না। আসামে যারা বাদ পড়েছে, ১৩ লাখ বাঙালি, ১ লাখ হিন্দিভাষী ও ১ লাখ পাহাড়ি। ওই বাঙালিদের মধ্যে বেশিরভাগ রাজবংশীকে বাদ দেওয়া হয়েছে।

মমতা বলেন, আমি তো ভাবতে পারি না যে, বাংলায় শুধু বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবে। দরকার হলে বন্দ্যোপাধ্যায় থাকবে না, শুধু মানুষ থাকবে।

কম লোকই জানতে চায় আমি কেমন আছি, বললেন মেগান

গণমাধ্যমের কড়া নজরদারি মধ্যে নতুন মা হওয়াটা কতটা সংগ্রামের ছিল সাম্প্রতিক এক ডকুমেন্টরীতে তা স্বীকার করেন ডাচেস অব সাসেক্স মেগান মার্কেল ।

শুক্রবার ব্রিটিশ টেলিভিশন চ্যানেল আইটিভিতে সেই ডকুমেন্টরির অংশবিশেষ প্রচার করা হয়। ‘হ্যারি এন্ড মেগান : অ্যান আফ্রিকান জার্নি’ শীর্ষক ডকুমেন্টরীটি যুক্তরাজ্যে প্রচারিত হবে ২০ অক্টোবর।

জানা গেছে, গত সেপ্টেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের সময় সাসেক্সের ডিউক ও ডাচেসের সাক্ষাৎকার নেন রিপোর্টার টম বার্ডি। ডকুমেন্টরিতে মেগান জানান, বিয়ের পর কিংবা মা হওয়ার খবরের মধ্যেও তার জীবন নিয়ে গণমাধ্যমের আগ্রহের কমতি ছিল না।

ডকুমেন্টরিতে মেগান হ্যারির স্ত্রী, নতুন মা এবং ডাচেস হিসেবে তার জীবন কিভাবে পরিবর্তিত হয়েছে সেসব কথা জানিয়েছেন। প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে ডেটিং শুরুর পর থেকেই গণমাধ্যম কিভাবে তাদের জীবন ঘিরে রেখেছে সে গুলোও তিনি জানান।

আবেগময় সেই ডকুমেন্টরিতে নিজের মা হওয়ার সময়ের কথা উল্লেখ করে মেগান বলেন, ‘গর্ভাবস্থায় যেকোনো নারীই নাজুক অবস্থায় থাকেন। ওই সময়টা তার জন্য অনেক চ্যালেঞ্জেরও’।

মেগান বলেন, ‘ সন্তান জন্ম নেওয়ার পর চ্যালেঞ্জে আরও বেড়ে যায়। বিশেষ করে একজন নারীর জন্য এটা বিশাল কিছু্।’

মেগান ওই ডকুমেন্টরিতে ব্রার্ডিকে ধন্যবাদ জানান সন্তান জন্ম দেওয়ার পর তার মানসিক ও শারীরিক অবস্থার কথা জানতে চাওয়ার জন্য।

মেগান বলেন ‘ বেশিরভাগ মানুষই জানতে চায় না আমি ঠি আছি কি-না।’

মা হওয়ার সময়টাতে মেগানকে অনেক সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছে, এমন কথা বলা যাবে কি না? এ প্রশ্নের উত্তরে এক শব্দে তিনি হ্যাঁ বলেন।

মেগানের আবেগঘন সাক্ষাৎকারের অংশবিশেষ প্রকাশের পর ‘উই লাভ ইউ মেগান’ হ্যাশট্যাগে কয়েক হাজার অনুসারী ৩৮ বছর বয়সী এ মাকে সমর্থন ও সমবেদনা জানান।

মেগানের বাবার কাছে পাঠানো ব্যক্তিগত চিঠির সম্পাদিত সংস্করণ প্রকাশের জন্য কিছুদিন আগে প্রিন্স হ্যারি এবং মেগান ব্রিটিশ এক সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

প্রিন্স হ্যারি অনলাইনে এক বিবৃতিতে বলেন , ‘ এটা দুঃখজনক যে , আমার স্ত্রী ব্রিটিশ ট্যাবলয়েডগুলোর শিকারে পরিণত হয়েছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘ এসব গণমাধ্যম কোনও ধরনের পরিণতির কথা চিন্তা না করে বিভিন্ন ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালায়।’ তিনি জানান, মেগানের গর্ভাবস্থা এবং তাদের সন্তান জন্মানোর পরও গণমাধ্যমগুলো এ ধরনের প্রচারণা চালিয়ে গেছে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের মে মাসে উইন্ডসর ক্যাসেলে প্রিন্স হ্যারিকে বিয়ে করেন মেগান। এ বছরের মে মাসে এ দম্পতির প্রথম সন্তান জন্মগ্রহণ করে। সূত্র : সিএনএন

কে এই অভিজিৎ ব্যানার্জি

বৈশ্বিক দারিদ্র্য লাঘবে অবদান রাখায় এ বছর অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন বাঙালি অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জি। তবে তিনি একা নন, অভিজিতের সঙ্গেই নোবেল জিতেছেন তার স্ত্রী এস্তার দুফলো। এই দম্পতির সঙ্গে মার্কিন অর্থনীতিবিদ মাইকেল ক্রেমার এর নামও যুক্ত হয়েছে।

ভারতীয় অর্থনীতিবিদ নোবেলজয়ী অমর্ত্য সেনের ছাত্র ছিলেন অভিজিৎ। অর্থনীতিতে অমর্ত্য সেনের পর দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে নোবেল পেলেন তিনি।

অন্যদিকে অভিজিতের স্ত্রী ফরাসী ও মার্কিন নাগরিক এস্তার দুফলো হলেন গত ৫০ বছরে দ্বিতীয় নারী যিনি অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন। তবে অর্থনীতিতে নোবেল জয়ীদের মধ্যে দুফলোই সর্বকনিষ্ঠ। তিনি প্যারিসে ইতিহাস ও অর্থনীতিতে পড়াশোনা করেছেন। খবর বিবিসি’র

অভিজিতের জন্ম ভারতের মহারাষ্ট্রের মুম্বাইতে। তবে কলকাতার বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৯৬১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় অভিজিতের জন্ম হয়।

অভিজিৎ ব্যানার্জির মা নির্মলা ব্যানার্জিও কলকাতার সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশ্যাল সায়েন্সেসের অর্থনীতি বিভাগের একজন অধ্যাপক ছিলেন।

১৯৮১ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ডিগ্রি অর্জনের পর ১৯৮৩ সালে জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ ডিগ্রি লাভ করেন অভিজিৎ ব্যানার্জি। পরে তিনি ১৯৮৮ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।

অভিজিৎ এখন ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজিতে কাজ করছেন, যা এমআইটি নামে বিশ্বে বহুলভাবে পরিচিত। সেখানে তিনি ফোর্ড ফাউন্ডেশন ইন্টারন্যাশনাল প্রফেসর হিসেবে অর্থনীতি পড়ান। অভিজিতের স্ত্রী এস্তার দুফলোও এমআইটিতে কাজ করেন।

ভারত-চীন সম্পর্কে নতুন যুগ শুরু মোদি-শি বৈঠকে

ভারত ও চীনের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার পক্ষে মত দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সেখানে উঠল না কাশ্মীর প্রসঙ্গ। দুই প্রতিবেশী দেশ সিদ্ধান্ত নিল বিশ্বে সন্ত্রাস দমনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার।

চেন্নাই থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে মমল্লপুরমের সমুদ্রসৈকতের কাছে একটি রিসোর্টে শুক্র ও শনিবারে চলা দু’দফা বৈঠকে ভারত ও চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মাধ্যমে নতুন এক যুগের শুরু হলো। বৈঠকে দুই দেশ বাণিজ্য, যোগাযোগ, পর্যটন ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমে পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করারও সিদ্ধান্ত নেয়।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তার বিবৃতিতে জানান, উহান বৈঠক দুই দেশের সম্পর্কে বিশ্বাস গড়ে তোলে। তবে ‘চেন্নাই ভিশন’ এর মাধ্যমে ভারত-চীন সম্পর্কের নতুন যুগ শুরু হলো।

অন্যদিকে মোদি-জিনপিংয়ের বৈঠক নিয়ে উচ্ছ্বসিত চীনের সংবাদমাধ্যমও। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং জানান, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার আন্তরিক ভাবেই কথা হয়েছে। সেই সঙ্গে দু’দেশের সম্পর্কে নতুন যুগ শুরু হয়েছে।

ভারতের পররাষ্ট্রসচিব জানিয়েছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট বৈঠক নিয়ে বেশ সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তার মতে, বৈঠকের পর দু’দেশের সম্পর্কে একটি নতুন যুগ শুরু হতে চলেছে।

বিশ্লেষকদের মতে, কাশ্মীর নিয়ে যাতে কোনো অস্বস্তিকর পরিবেশ তৈরি না হয় এ জন্য মোদি-শি বৈঠকে প্রসঙ্গটি তোলেননি দুই দেশের কোনো রাষ্ট্রপ্রধানই। কূটনৈতিক সূত্রের অনুযায়ী,, আপাতত কাশ্মীর নিয়ে কোনও বড় ধরনের বিরোধিতা বেজিংয়ের পক্ষ থেকে আসবে না— এমনটাই আশা করা হচ্ছে।