করোনাভাইরাসরোধে উগান্ডায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

করোনাভাইরাসরোধে উগান্ডায় ব্যতিক্রমী উদ্যোগ

নভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণ থেকে রক্ষা পেতে ব্যতিক্রম এক উদ্যোগ নিয়েছে আফ্রিকার দেশ উগান্ডা।

দেশটির এন্তিবি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশের সময় এ উপলক্ষে যাত্রীদের শরীরে এক ধরনের জীবানুনাশক ছিটিয়ে দেওয়া হবে বলে বিবিসি জানিয়েছে।

গত ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে প্রথম করোনার অস্তিত্ব ধরা পড়ার পর বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তা ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাসে উগান্ডার কেউ এখনও পর্যন্ত আক্রান্ত না হলেও বিষয়টি নিয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছে দেশটির সরকার।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিমানবন্দরে প্রবেশের সময় যাত্রীদের শরীরে জীবানুনাশক ছিটিয়ে দেওয়া হবে। শিগগিরই এই কার্যক্রম শুরু হবে।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ করোনায় আক্রান্ত ১৬টি উচ্চ ঝুঁকির দেশ থেকে কেউ উগান্ডায় ফিরলে তাকে স্বেচ্ছা কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সর্বশেষ পাওয়া তথ্যানুযায়ী বিশ্বে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৩৮০ জনে; আর মৃত্যু হয়েছে ৪৬৩৪ জনের।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণকে এরই মধ্যে বুধবার বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)।

বিবিসি জানিয়েছে, এই ভাইরাসে চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ইতালিতে। ইতালি থেকে পুরো ইউরোপ এবং আফ্রিকা ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এ ভাইরাস। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে ইরানে এ ভাইরাস ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে আগেই পৌঁছেছে করোনাভাইরাস। বাংলাদেশে সংক্রমণের ধরা পড়ে গত রোববার।

চীনের বাইরে প্রতিদিনই নতুন নতুন দেশে এ ভাইরাসের সংক্রমণের তথ্য আসছে। দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারতে বাড়ছে নতুন রোগীর সংখ্যা।

সার্স ও মার্স পরিবারের সদস্য করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ফ্লুর মতো উপসর্গ নিয়ে যে রোগ হচ্ছে তাকে বলা হচ্ছে কভিড-১৯। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, এখন পর্যন্ত এ রোগে মৃত্যুহার ৩.৪ শতাংশ, যেখানে মৌসুমি ফ্লুতে মৃত্যুহার থাকে ১ শতাংশের নিচে। তবে করোনায় ৯ বছরের নিচের কেউ মারা যায়নি। প্রবীণদের মধ্যেই মৃত্যুহার বেশি।

করোনাভাইরাস মূলত শ্বাসতন্ত্রে সংক্রমণ ঘটায়। এর লক্ষণ শুরু হয় জ্বর দিয়ে, সঙ্গে থাকতে পারে সর্দি, শুকনো কাশি, মাথাব্যথা, গলাব্যথা ও শরীর ব্যথা। সপ্তাহখানেকের মধ্যে দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্ট। উপসর্গগুলো হয় অনেকটা নিউমোনিয়ার মতো। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো হলে এ রোগ কিছুদিন পর এমনিতেই সেরে যেতে পারে। তবে ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদযন্ত্র বা ফুসফুসের পুরোনো রোগীদের ক্ষেত্রে ডেকে আনতে পারে মৃত্যু।

করোনাভাইরাসের কোনো টিকা বা ভ্যাকসিন এখনও তৈরি হয়নি। ফলে এমন কোনো চিকিৎসা এখনও মানুষের জানা নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। আপাতত একমাত্র উপায় হলো আক্রান্তদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *