মসজিদের ধান ভাগ্নে চুরি করায় মামাকে কুপিয়ে হত্যা

মসজিদের ধান চুরি করা নিয়ে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলায় কোব্বাস আলী (৬০) নামে এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার মৌগাছি ইউনিয়নের খয়রা মাটিকাটা গ্রামে প্রকাশ্যেই এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত কোব্বাস আলী ওই গ্রামেরই বাসিন্দা ছিলেন।

মৌগাছী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আল-আমিন বিশ্বাস এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, স্থানীয় মসজিদ থেকে কয়েক দিন আগে ২০ কেজি ধান চুরি হয়। এর পর গ্রামবাসী নিশ্চিত হন যে কোব্বাস আলীর ভাগ্নে সাদ্দাম হোসেন (২০) ধানগুলো চুরি করেছেন। এ নিয়ে উত্তেজনা চলছিল।

শনিবার রাত ৮টার দিকে এলাকার কয়েকজনের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কোব্বাস আলীর কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এরই একপর্যায়ে উভয়পক্ষ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। এতে কোব্বাস আলী ও তার দুই ছেলে আহত হন। সংঘর্ষে মুসল্লিদের পক্ষেরও চার-পাঁচজন আহত হন। আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক কোব্বাস আলীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

রাজশাহী জেলা পুলিশের মুখপাত্র ইফতেখায়ের আলম জানান, খবর পেয়ে এলাকায় পুলিশ গেছে। এর পর পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে।

তিনি আরও জানান, সংঘর্ষে গুরুতর আহত কয়েকজনকে মোহনপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের আটক করতে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।

কিশোরগঞ্জে পিকআপচাপায় প্রাণ গেল কিশোরের

কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় পিকআপভ্যানচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী এক কিশোর নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও একজন।

শুক্রবার দিনগত রাত ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব আঞ্চলিক সড়কে জালুয়াপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত কিশোরের নাম শুভ (১৭)। সে উপজেলার বিশুআটি এলাকার আব্দুল আজিজের ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত ১১টার দিকে শুভসহ দুজন মোটরসাইকেলে বাড়ি ফিরছিলেন।পথে কিশোরগঞ্জ-ভৈরব আঞ্চলিক সড়কে সদর উপজেলার জালুয়াপাড়া এলাকায় তাদের মোটরসাইকেলটিকে একটি পিকআপভ্যান চাপা দেয়।

এতে ঘটনাস্থলেই শুভ মারা যায়। এসময় আহত হয় আরও একজন। তাকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

নিহত কিশোরের মরদেহ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি মো. আবু বকর সিদ্দিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

মেয়ের খোঁজ নিতেন না তামিমা

ক্রিকেটার নাসির হোসেনের নববিবাহিত স্ত্রী তামিমা সুলতানা তাম্মি প্রথম ঘরের মেয়ের কোনো খোঁজখবরই নিতেন না। আর এমনটা জানিয়েছে তার ও রাকিবের শিশুকন্যা রাফিয়া হাসান তুবা নিজেই।

তুবা জানিয়েছে, মা কখনই তার তেমন একটা খোঁজখবর নিতেন না। মায়ের বিয়ের খবরও সে জেনেছে টেলিভিশনে দেখে। বাবা রাকিব হোসেন জোর করে তুবাকে তাম্মির মায়ের বাসা থেকে নিয়ে এসেছে বলে তাম্মি যে অভিযোগ করেছে- সেটাও মিথ্যা বলে জানিয়েছে তুবা।

ওই বাড়িতে নানি তাকে মারধর করত অভিযোগ করে তুবা জানায়, নিজের ইচ্ছাতেই বাবার সঙ্গে দাদি বাড়ি চলে এসেছি। এখানেই আমার জন্মদিন পালন হয়েছে। তাছাড়া এই বাড়ির সবাই আমাকে অনেক ভালোবাসে। মা আগেও ভালোবাসত না আর এখন তো সে অন্য আরেকজনকে বিয়ে করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে এবং বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে রাকিবের ঘরে জন্ম নেয়া তাম্মির শিশুকন্যা ৮ বছরের রাফিয়া হাসান তুবাকে জোর করে তাম্মির বাসা থেকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাম্মি। তবে সেই অভিযোগ সত্য নয় বলে জানিয়েছে শিশু তুবা। বাসায় তাম্মির মা তাকে মারধর করতো বলে অভিযোগ তুবার।

রেকর্ডকৃত বক্তব্যে তুবা জানায়, তার বাবা রাকিবকে দেখতে পারত না তাম্মির মা। তাকেও কারণে-অকারণে চড়-থাপ্পড় দিত। বাসায় সারাক্ষণ ধমকের ওপর রাখত তাকে নানি। একটু এদিক-সেদিক হলেই রাগারাগি আর গালাগালি করত। এ কারণে সে নিজের ইচ্ছায় বাবার সঙ্গে দাদির কাছে চলে আসে।

বাবা তাকে অনেক ভালোবাসে উল্লেখ করে তুবা জানায়, মা আমাকে কখনই তেমন একটা ভালোবাসতো না। আদরও করতো না। অধিকাংশ সময় সে বাসার বাইরে থাকত। নিজে থেকে কখনো আমায় ফোন দিত না। আমি ফোন দিলে ব্যস্ত আছি বা প্লেনে আছি বলে লাইন কেটে দিত। বাবা দাদি দাদা চাচ্চু আমায় অনেক ভালোবাসে।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে তুবা বলে- মা এখন আর আমায় ফোন দেয় না। আমার সঙ্গে কথাও বলে না। মা অনেক পচা হয়ে গেছে। সে আরেকজনকে বিয়ে করেছে। আপনারা আমার মাকে এনে দিন। আমি মা আর বাবাকে নিয়ে একসঙ্গে থাকব।

দুই কোটি টাকার প্রধানমন্ত্রীর ফেলোশিপের আবেদন শুরু

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় উচ্চতর শিক্ষায় ফেলোশিপ দেওয়ার জন্য আবেদন আহ্বান করেছে। পিএইচডি ও মাস্টার্স করতে ফেলোশিপ দিতে প্রধানমন্ত্রীর ফেলোশিপের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশের নাগরিকেরা শর্ত সাপেক্ষে পিএইচডি ও মাস্টার্সে পড়তে প্রধানমন্ত্রীর ফেলোশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ (মাউশি) থেকে প্রধানমন্ত্রীর ফেলোশিপের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে জনপ্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্পের আওতায় উচ্চশিক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর ফেলোশিপ দেওয়া হবে।

বিজ্ঞপ্তির শর্ত অনুসারে, বাংলাদেশের নাগরিক, যাঁরা এর আগে বিদেশে কোনো মাস্টার্স বা পিএইচডি করেননি, তাঁরাই ফেলোশিপের আওতায় মাস্টার্স বা পিএইচডির জন্য আবেদন করতে পারবেন। সরকারি চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে চাকরি স্থায়ী হলে এবং চাকরিতে প্রবেশের পর কোনো মাস্টার্স বা পিএইচডি করেননি, শুধু তাঁরাই আবেদন করতে পারবেন এ ফেলোশিপের জন্য। আবেদনকারীকে প্রত্যাশিত ডিগ্রির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিঃশর্ত অ্যাডমিশন অফার আবেদনের সঙ্গে যুক্ত করে দিতে হবে। অ্যাডমিশন অফারে ভর্তির শেষ তারিখ এ বছরের ১ জুলাই থেকে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে হতে হবে।

The Times Higher Education World University overall ranking 2021 অনুযায়ী মাস্টার্সের জন্য ১ থেকে ২০০ এবং পিএইচডির জন্য ১ থেকে ১০০–এর মধ্যে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অফার লেটার আনতে হবে।

পিএইচডি ও মাস্টার্সে কত অর্থ

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ফেলোশিপের জন্য নির্বাচিতরা পিএইচডি করতে মোট দুই কোটি টাকা পাবেন। আর মাস্টার্স করতে এ ফেলোশিপের আওতায় দেওয়া হবে মোট ৬০ লাখ টাকা। এখানেই শেষ নয়, বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে (দ্য টাইমস হাইয়ার এডুকেশন ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি ওভারঅল র‌্যাঙ্কিং ২০২১) ১ থেকে ৩০–এর মধ্যে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি বা মাস্টার্স করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা আরও ১০ শতাংশ হারে অতিরিক্ত টাকা পাবেন। এ ক্ষেত্রে মাস্টার্সে ৬৬ লাখ এবং পিএইচডিতে ২ কোটি ২০ লাখ টাকা হতে পারে।

টোফেল ও আইইএলটিএস স্কোর কত

প্রধানমন্ত্রী ফেলোশিপের আওতায় মাস্টার্সে পড়ার জন্য সর্বোচ্চ ১৮ মাস এবং পিএইচডি ডিগ্রির জন্য সর্বোচ্চ চার বছরের ফেলোশিপ পাবেন নির্বাচিতরা। ফেলোশিপের মেয়াদ বৃদ্ধিসংক্রান্ত কোনো আবেদন বিবেচনা করা হবে না বলেও বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে। আবেদনের শেষ তারিখ পর্যন্ত টোফেল ও আইইএলটিএসের (একাডেমি) কার্যকর মেয়াদ থাকতে হবে। এ ক্ষেত্রে আইইএলটিএসে ৬ দশমিক ৫, আর টোফেলে ন্যূনতম ৮৮ ও পিটিই একাডেমিকের ক্ষেত্রে মোট স্কোর হতে হবে ৫৯। এর কম স্কোর পাওয়া প্রার্থী আবেদন করতে পারবেন না।
আবেদনে কোনো অসম্পূর্ণ, মিথ্যা বা যেকোনো ধরনের জালিয়াতি ফেলো নির্বাচন বা ফেলোশিপের যেকোনো পর্যায়ে জানা গেলে আবেদন বা ফেলোশিপ তাৎক্ষণিক বাতিল হিসেবে গণ্য হবে।

দুই কোটি টাকার প্রধানমন্ত্রীর ফেলোশিপের আবেদন শুরু

আবেদন পদ্ধতি

আবেদনকারীকে ফেলোশিপের ওয়েবসাইট pmfellowship.pmo.gov.bd তে প্রবেশ করে একটি টেস্টে অংশ নিতে হবে। এ টেস্টে উত্তীর্ণ হলেই আবেদনকারী ফেলোশিপের ওয়েবসাইটে নিজের একটি ই–মেইল অ্যাকাউন্টে মোবাইল নম্বর ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্ট খুরতে পারবেন। এই অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আবেদনকারী তাঁর আবেদন তৈরি এবং জমা দিতে পারবেন। আবেদন জমা দিলেও সংশোধনের সুযোগ আছে। চাইলে একাধিকবার আবেদন সংশোধন করা যাবে। আবেদন জমা দেওয়ার পরই ই–মেইল ও মোবাইলে নিশ্চয়তা সূচক একটি বার্তা পাবেন আবেদনকারী। আবেদনের হার্ড কপি সংরক্ষণ করতে হবে জমা দেওয়ার জন্য।
তিনটি ক্যাটাগরিতে আবেদন গ্রহণ করা যাবে। বিসিএস ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তারা ‘বিসিএস সরকারি কর্মকর্তা’, অন্য সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা ‘নন বিসিএস সরকারি (বিসিএস ব্যতীত অন্যান্য)’ এবং বেসরকারি ব্যক্তিদের জন্য ‘বেসরকারি ক্যাটাগরি’তে আবেদন করতে পারবেন। আবেদন ফরমে বিসিএস কর্মকর্তা ছাড়া অন্য সব অন্য সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ব্যক্তিরা ‘নন বিসিএস সরকারি (বিসিএস ছাড়া অন্যান্য)’ ক্যাটাগরিতে বিবেচিত হবেন।

দুই কোটি টাকার প্রধানমন্ত্রীর ফেলোশিপের আবেদন শুরু

কারা আবেদন করতে পারবেন, কারা পারবেন না

আবেদনের শেষ তারিখে আবেদনকারীর সর্বোচ্চ বয়স পিএইচডির ক্ষেত্রে ৪৫ বছর আর মাস্টার্স কোর্সের ক্ষেত্রে বয়স সর্বোচ্চ ৪০ বছর হতে হবে। পিএইচডি কোর্সের জন্য আবেদনকারীকে ন্যূনতম মাস্টার্স সম্পন্ন এবং মাস্টার্স কোর্সের জন্য আবেদনকারীকে ন্যূনতম স্নাতক সম্পন্ন হতে হবে। পিএইচডি সম্পন্ন করলে সেই প্রার্থী এ ফেলোশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন না বা বিবেচিত হবেন না। কোনো আবেদনকারীর বিদেশি কোনো ডিগ্রি থাকলে ওই ডিগ্রির জন্য আবশ্যিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন–ইউজিসির সমতা সার্টিফিকেট জমা দিতে হবে। এ ছাড়া বিদেশি ডিগ্রির সার্টিফিকেট মূল্যায়নের জন্য বিবেচিত হবে না।

আবেদনের শেষ সময়

আগামী ৭ এপ্রিল ২০২১, বাংলাদেশ সময় স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৫৯ মিনিট। আবেদনের হার্ড কপি ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় বিকেল পাঁচটার মধ্যে জমা দিতে হবে।

আবেদন পাঠানোর ঠিকানা

প্রকল্প পরিচালক ‘টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে জনপ্রশাসনের দক্ষতা বৃদ্ধিকরণ’ প্রকল্প

মহাপরিচালক, গভর্ন্যান্স ইনোভেশন ইউনিট
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, পুরাতন সংসদ ভবন, তেজগাঁও, ঢাকা-১২১৫

হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী জিয়াকে গ্রেপ্তার করুন: অভিজিতের ভাই

লেখক ও ব্লগার অভিজিৎ রায়কে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল হক ওরফে মেজর (বরখাস্ত) জিয়াকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তার ছোটভাই অনুজিৎ রায়।

আজ মঙ্গলবার মামলার রায়ের পর অনুজিৎ বলেন, রায়ের পর পুলিশ যেন বসে না থাকে। তাদের উচিত হত্যার দুই মূল পরিকল্পনাকারী মেজর জিয়া ও আকরাম হোসেনকে অবিলম্বে গ্রেপ্তারে জোর চেষ্টা চালানো।

২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে লেখক অভিজিৎকে হত্যার দায়ে ঢাকার ট্রাইব্যুনাল নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের পাঁচ সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড ও অপর একজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়ার রায়ে তিনি সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।

অনুজিৎ বলেন, জঙ্গি গোষ্ঠী আরও প্রতিহিংসাপরায়ণ ও আরও বেশি লোককে হত্যার চক্রান্ত করতে পারে।

তিনি আরও বলেন, ‘দুই মূল পরিকল্পনাকারী এখনও বাইরে এবং তা উদ্বেগের বিষয়।’

‘সময় নিলেও, রায় নিয়ে আমি সন্তুষ্ট,’ তিনি বলেন।

তিনি আরো বলেন, ‘দেশে যখন উগ্রবাদ চরম আকার ধারণ করছে এবং ধর্ম অবজ্ঞার দোহাই দিয়ে হত্যার ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, এ সময় এই রায় নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। আমার বাবা বেঁচে থাকলে তিনিও সন্তুষ্ট হতেন।’

রায় শিগগির কার্যকরের দাবি জানান তিনি।

উৎসবমুখর পরিবেশে বাঞ্ছারামপুরে ছয়ফুল্লাকান্দি কল্যাণ সমিতির সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার “ছয়ফুল্লাকান্দি ইউনিয়ন কল্যাণ সমিতির” সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে মরহুম আনোয়ার ইসলাম চেয়ারম্যান অডিটোরিয়ামে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।

ছয়ফুল্লাকান্দি ইউনিয়ন কল্যান সমিতির সভাপতি, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম তুষারের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, দুর্যোগ ব্যাবস্থপনা ও ত্রাণ মন্ত্রানালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থাস্থী কমিটির সভাপতি ক্যাপ্টেন এবি তাজুল ইসলাম এমপি। সার্বিক পরিচালনায় ছিলেন শাহ রাহাত আলী মহা বিদ্যালয়ের প্রভাষক মোহাম্মদ সমীর আহাম্মেদ।

সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বাঞ্ছারামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জাদিদ আল রহমান জনি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা পরিষদের সদস্য আব্দুল হক, জেলা পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান সনি আক্তার সুচি, জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ বাবুল মিয়া, নরসিংদী জেলার সহকারি জজ শেখ সাদী, ছয়ফুল্লাকান্দি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা মহিউদ্দিন চৌধুরী ফুল মিয়া, সহসভাপতি হুমায়ুন কবির, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর করিম মাস্টার, সাংগঠনিক সম্পাদক সফিকুল ইসলাম নয়ন মাষ্টার, প্রচার সম্পাদক কাদির চৌধুরী, বাঞ্ছারামপুর প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মহরম আলী মাষ্টার, অর্থ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, বাঞ্ছারামপুর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ইমতিয়াজ আহাম্মেদ, ছয়ফুল্লাকান্দি ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাকির হোসেন, সাধারণ সম্পাদক শাহ জালাল সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক পরান, যুবলীগ নেতা ইমরান এলাহী রাজিব, ছয়ফুল্লাকান্দি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি মোজাম্মেল হক চৌধুরী, সিনিয়র সহসভাপতি রূহুল আমিন বায়েজিদ, সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব আহাম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক হোসাইন সুইলেন, সজিব পারভেজ।

সাধারণ সভায় ছয়ফুল্লাকান্দি ইউনিয়ন কল্যাণ সমিতির আগামী দুই বছরের জন্য নতুন কমিটি ঘোষনা করা হয়। পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হলেন মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম তুষার চেয়ারম্যান। সাধারণ সম্পাদক হলেন শিক্ষানুরাগী মোহাম্মদ সমীর আহাম্মেদ। অর্থ সম্পাদক হলেন দবির ভুইয়া। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার শত শত মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মাথাপিছু ব্যয় সরকারিতে দেড় লাখ, বেসরকারি অর্ধেক

দেশের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শিক্ষার্থীপ্রতি ব্যয় মাত্র দেড় লাখ টাকা। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে এর অর্ধেকেরও কম। উভয় ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বার্ষিক ব্যয় বাজেটের সঙ্গে শিক্ষার্থীর সংখ্যা তুলনা করে এই মাথাপিছু ব্যয় ধরা হয়েছে।

অভিযোগ উঠেছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আয়ের সঙ্গে মিল রেখে শিক্ষার্থীদের পেছনে ব্যয় করছে না। আয়ের সামান্য অংশ শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে ব্যয় করায় মাথাপিছু খরচ কমে গেছে। এতে বেশিরভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা নিশ্চিত হচ্ছে না।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের একজন শিক্ষার্থীর পেছনে যে ব্যয় হয়, তা দুটি খাত থেকে জোগান দেওয়া হয়। এর একটি নানা ধরনের ফি-র নামে শিক্ষার্থী পরিশোধ করে। অপরটি আসে সরকারি বরাদ্দ থেকে।

এ ছাড়া কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বৈদেশিক উৎস থেকেও তহবিল পেয়ে থাকে। মূলত দুই খাতে আয়ের টাকার ওপর ভিত্তি করে চাহিদার নিরিখে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ব্যয়-বাজেট তৈরি করে। যেটা থেকে মাথাপিছু ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু এর বাইরে শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত অন্যান্য খরচ আছে। মাথাপিছু ব্যয়ের হিসাবে শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত খরচ অন্তর্ভুক্ত হয়নি। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে প্রকৃত অর্থে উভয় ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর পেছনে মাথাপিছু ব্যয় আরও বেশি।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা শিক্ষা বিশ্লেষক রাশেদা কে চৌধুরী যুগান্তরকে বলেন, প্রাক-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষকের জোগান বলি, আর সার্বিকভাবে দেশের জনপ্রশাসনসহ সব খাতের নেতৃত্ব বা দক্ষ জনবল সরবরাহের কথাই বলি, তা তৈরির দায়িত্ব উচ্চশিক্ষার। সে কারণে উচ্চশিক্ষায় প্রাতিষ্ঠানিকভাবে যে মাথাপিছু ব্যয়ের চিত্র বেরিয়ে এসেছে, সেটা প্রত্যাশিত পর্যায়ের নয়। কেননা, আমরা টেকসই উন্নয়নের কথা বলছি, সেটায় একটি বড় অংশ দখল করে আছে উচ্চশিক্ষা। আজ অনেক চাকরিরই প্রতিযোগিতা হয়ে থাকে বৈশ্বিকভাবে। সেখানে আমাদের জনবলকে টিকে থাকতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগের মাধ্যমে উচ্চশিক্ষা নিশ্চিতের বিকল্প নেই।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, এর অধিভুক্ত কলেজ, ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় ও এর অধীভুক্ত মাদ্রাসা বাদে ৪৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৯ সালে শিক্ষার্থীদের মাথাপিছু ব্যয় এক লাখ ৪৯ হাজার ৯৪২ টাকা।

একই বছর ৯৪টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীপ্রতি বার্ষিক ব্যয় ৭১ হাজার ৫৩৬ টাকা। অন্যদিকে আলোচ্য বছরে এই ১৩৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রছাত্রী ছিল ৪৪ লাখ ৩৪ হাজার ৪৫১ জন। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর যদি বছরে গড়ে ৩৬ হাজার টাকা ব্যক্তিগত ব্যয় থাকে, তবে দেশে শিক্ষার্থীর মাথাপিছু ব্যয় দাঁড়াচ্ছে এক লাখ ৪৭ হাজার টাকা।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে যে অর্থ আদায় হয় তার পুরোটা তাদের পেছনে ব্যয় হয় না। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাথাপিছু ব্যয় নির্ধারণে শিক্ষকের বেতন ও গবেষণাসহ ৯টি খাতের খরচ ধরা হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, বেশকিছু বিশ্ববিদ্যালয় প্রচুর অর্থ আয় করলেও ব্যয় করেছে খুব কম। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-কর্মচারীর বেতন-ভাতা ও শিক্ষার অন্য খাতে ব্যয় করেছে সামান্য।

কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর প্রতি মাত্র চার হাজার টাকাও ব্যয় করেছে। এমন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আছে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি, নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ইত্যাদি। আবার ইস্টওয়েস্টের মতো বড় এবং ভালো ইউনিভার্সিটি মাথাপিছু ব্যয়ের তথ্যই দেয়নি। বেসরকারি খাতে মাথাপিছু বেশি ব্যয় করা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে নর্থসাউথ একটি। তারা শিক্ষার্থীপ্রতি এক লাখ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয় করে।

এভাবে ঢাকার ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি এক লাখ ৭০ হাজার, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ এক লাখ ৮৪ হাজার, ব্র্যাক এক লাখ ৬০ হাজার টাকা ব্যয় করে। নতুনগুলোর মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্ট বাংলাদেশ (ইউল্যাব) এক লাখ ৫৩ হাজার, কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ এক লাখ ৭২ হাজার টাকা খরচ করে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ৫০ হাজার থেকে সোয়া লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় আছে।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে বছর ভিত্তিতে মাথাপিছু ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে। এই হিসাবে সবচেয়ে বেশি ব্যয় করছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে প্রতি শিক্ষার্থীর পেছনে খরচ করা হয় তিন লাখ ৬৪ হাজার ৪৮৫ টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে তিন লাখ ৫৫ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে।

তৃতীয় অবস্থানে আছে চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে দুই লাখ ৯১ হাজার ১৩৬ টাকা। ৪ ও ৫ নম্বরেও আছে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। এগুলো হচ্ছে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। যথাক্রমে দুই লাখ ৩৫ হাজার এবং দুই লাখ ২৬ হাজার টাকা ব্যয় হচ্ছে উভয় বিশ্ববিদ্যালয়েপ্রতি শিক্ষার্থীর পেছনে।

৭, ৮ ও ৯ নম্বরে যথাক্রমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনটিতেই সাধারণ, প্রকৌশল এবং কৃষিবিষয়ক শিক্ষা ও গবেষণা চলে। আর বরাদ্দে দশম স্থানে আছে বুয়েট। এই চারটিতে মাথাপিছু ব্যয় যথাক্রমে দুই লাখ ১০ হাজার, দুই লাখ আট হাজার ৫১১ টাকা, এক লাখ ৮২ হাজার এবং এক লাখ ৭৭ হাজার ৭৭৫ টাকা। সবচেয়ে কম ব্যয় হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। এর পরিমাণ মাথাপিছু ৩৮৯ টাকা।

রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, উচ্চশিক্ষা হচ্ছে সার্বিকভাবে দেশ এগিয়ে নেওয়ার হাতিয়ার। গবেষণায় ব্যয় করলে কী ফেরত পাওয়া যায় তার প্রমাণ কৃষি খাত। লবণ, তাপ, খরা, ঝড় সব ধরনের দুর্যোগসহিষ্ণু ধান আমরা পেয়েছি শুধু গবেষণার কারণেই। বিলুপ্ত প্রায় বিভিন্ন ধরনের মাছ ফের আমাদের খাবারের প্লেটে এসেছে গবেষণার বদৌলতে। সুতরাং আমি মনে করি, কৃষির পাশাপাশি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল এবং কলা ও সামাজিক বিজ্ঞানসহ উচ্চশিক্ষার সব ডিসিপ্লিনে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। পাশাপাশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আয়ের তুলনায় যে ব্যয় কম করছে, সেটিও দেখা দরকার ইউজিসির। কেননা, আইনে এসব বিশ্ববিদ্যালয় অলাভজনক। সুতরাং আয়ের অর্থ শিক্ষার পেছনে ব্যয় করাই যুক্তিযুক্ত। অথবা ব্যয় ধরে শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ফি নির্ধারণ করা প্রয়োজন।

লক্ষ্য যেন হয় মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা

জনগণকে দেওয়া ওয়াদা পূরণে কাজ করতে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) নবনির্বাচিত মেয়র ও কাউন্সিলরদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি আপনাদের কাছে এটাই চাইব-জনপ্রতিনিধি হিসাবে জনগণের কাছে আপনারা যে ওয়াদা দিয়ে এসেছেন, আর আজকে যে শপথ নিলেন সেটা মাথায় রেখেই মানুষের জন্য কাজ করবেন। জনপ্রতিনিধি হিসাবে দেশের মানুষের কল্যাণ করা, মানুষের জন্য কাজ করা, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা; এটাই যেন লক্ষ্য হয়।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে চসিক মেয়র এম রেজাউল করিমসহ কাউন্সিলরদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠানে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তিনি আরও বলেন, আপনারা জানেন যে, বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য অনেক কর্মসূচি হাতে নিয়েছি, বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। সারা দেশেই কিন্তু আমরা এই উন্নয়নের কাজ করে যাচ্ছি। আমরা মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি, দেশের কল্যাণে কাজ করতে চাইলে, করা যায়। এখানে জনগণের সমর্থনটা হচ্ছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহর রহমতে জনগণের সেই সমর্থনটা আমরা পাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে আমি আজ আরও অতিরিক্ত ৫০ হাজার ঘর নির্মাণের জন্য এক হাজার কোটি টাকা ছাড় করেছি। আমরা আরও এক লাখ ঘর তৈরি করে দিচ্ছি। আমরা সার্ভে করে দেখেছি। একটি লোক যেন গৃহহীন না থাকে। যার যার গ্রামে বাড়ি, সেখানে দেখবেন কোনো মানুষ গৃহহীন আছে কিনা? সঙ্গে সঙ্গে পদক্ষেপ নেবেন। আমরা ঘর করে দেব। একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না, সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

করোনাভাইরাসের টিকা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকে আমরা শুধু টিকা আনতে পেরেছি তাই-ই নয়, আমরা এখন টিকা প্রযোগের কাজও শুরু করেছি। এক্ষেত্রে জনপ্রতিনিধিদের কাছে আমার অনুরোধ থাকবে স্ব স্ব এলাকার মানুষ যেন এই টিকাটা নিতে পারে সেই ব্যবস্থা করা এবং তাদের উদ্বুদ্ধ করা ও নাম নিবন্ধন করা। তিনি আরও বলেন, করোনার টিকার জন্য নাম নিবন্ধনও আরও সহজ করে দেয়া হয়েছে। এখন প্রতিটি ডিজিটাল সেন্টারে নিবন্ধন করা যাবে। আইডি কার্ড নিয়ে গেলে সেটা দেখে নিবন্ধন করে দেবে ও সঙ্গে সঙ্গে টিকা নেওয়া যাবে এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখা যাবে।

এর আগে বেলা সাড়ে ১১টায় গণভবন থেকে ঢাকার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে চসিকের নতুন মেয়র রেজাউল করিম চৌধুরীকে ভার্চুয়ালি শপথ পাঠ করান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। পরে শপথ নেন সংরক্ষিত আসনের ১৪ জন এবং সাধারণ আসনের ৪০ জন কাউন্সিলর। তাদের শপথ পাঠ করান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ এ শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

আদালত প্রাঙ্গণে বিয়ে করে জামিন পেলেন ধর্ষণ মামলার আসামি

ঝিনাইদহে আদালত প্রাঙ্গণে বিয়ে করার পর ধর্ষণ মামলার আসামি নাজমুল হোসেনকে (২০) জামিন দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবু আহসান হাবিবের নির্দেশে এই বিয়ে সম্পন্ন হয়। নাজমুল ঝিনাইদহ জেলা শহরের কাঞ্চননগর এলাকার জাহিদুল ইসলামের ছেলে।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, এক মেয়ের সঙ্গে নাজমুল হোসেন প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ২০২০ সালের ১৫ জানুয়ারি নাজমুল ওই মেয়ের বাড়িতে গিয়ে তাঁকে একা পেয়ে ধর্ষণ করেন। মেয়ে তখন বিয়ের জন্য নাজমুলকে চাপ দেন। কিন্তু তিনি বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। পরদিন মেয়েটি বাদী হয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করেন। পুলিশ ওই রাতেই নাজমুলকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠান। সেই থেকে নাজমুল কারাগারে ছিলেন।

ছেলের বাবা জাহিদুল ইসলাম বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে ওই মেয়ের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল। মেয়ের পরিবার থেকে বিয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তাঁরা এ বিয়েতে রাজি ছিলেন না। পরে মেয়েপক্ষ ছেলের নামে ধর্ষণ মামলা করে। সেই মামলায় তাঁর ছেলে ১৩ মাস জেলে ছিলেন। আজ আদালত প্রাঙ্গণে তিন লাখ টাকা কাবিননামায় ছেলে–মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। বিয়ের পর ছেলেকে জামিন দেওয়া হয়েছে। এতে তিনি খুশি। মেয়েপক্ষও খুশি বলে তিনি জানান।

আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, মামলাটি চলমান। পুলিশ এখনো অভিযোগপত্র দেয়নি। তবে উভয়পক্ষের মধ্যে বিবাহ সম্পন্ন হওয়ায় নাজমুলকে আদালত জামিন দিয়েছেন।

কম কার্যকর করোনার টিকাও অত্যন্ত কাজের

করোনাভাইরাসের মহামারিতে পর্যুদস্ত বিশ্ব। তবে এ সংকটে আশার আলো হয়ে এসেছে টিকা। এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারতসহ বিশ্বের অনেক দেশেই টিকা প্রয়োগও শুরু হয়ে গেছে। তবে এ পরিস্থিতিতে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে মানুষের মনে নানা ধরনের প্রশ্ন জেগেছে। টিকা নেওয়া, না নেওয়া নিয়েও অনেকে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন। তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন, সবচেয়ে কম কার্যকর টিকাও অত্যন্ত কাজের।
দরিদ্র দেশগুলোয় টিকা কর্মসূচি জোরদারে সরকারি–বেসরকারি অংশীদারত্বের বৈশ্বিক জোট গ্যাভি, দ্য ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্সের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ মন্তব্য করা হয়। শুক্রবার প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়। এতে বলা হয়, করোনার টিকাগুলোর মানবদেহে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার প্রথম ফলাফল আসার আগেই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছিল, কোনো টিকার কার্যকারিতা ৫০ শতাংশের বেশি হলেই তা অনুমোদন পাওয়ার যোগ্য।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এখন করোনার বেশ কয়েকটি টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে। দেশে দেশে অনুমোদনপ্রাপ্তির তালিকায় এখন শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার ও জার্মানির বায়োএনটেক উদ্ভাবিত করোনার টিকাটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এখন পর্যন্ত এ টিকার অনুমোদন দিয়েছে। মানবদেহে পরীক্ষায় টিকাটির ৯৫ শতাংশ কার্যকারিতা পাওয়া গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের মডার্নার টিকাও ৯০ শতাংশের বেশি কার্যকারিতা দেখিয়েছে। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ও অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রায় ৭০ কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে।

তবে যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বিভিন্ন দেশে করোনাভাইরাসের নতুন ধরনের (স্ট্রেইন) আবির্ভাবে টিকার কার্যকারিতা নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে, যুক্তরাষ্ট্রের নোভাভ্যাক্স এবং জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকার পরীক্ষার ফলাফলে এ সংশয় আরও জোরালো হয়েছে। যদিও টিকা উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠানগুলো বলেছে, করোনার নতুন ধরনের বিরুদ্ধেও এসব টিকা সুরক্ষা দিতে সক্ষম।

গবেষকেরা অবশ্য বলছেন, টিকায় পরিবর্তন আনা সম্ভব, যেমনটা ইনফ্লুয়েঞ্জা ফ্লুর টিকায় প্রতিবছর আনা হয়। তবে করোনাভাইরাসের টিকায় এমন পরিবর্তনের প্রয়োজন না–ও পড়তে পারে। বিশেষ করে, যদি বিপুলসংখ্যক মানুষকে টিকা দেওয়া যায় এবং এসব টিকা যদি মাঝারি মানের সুরক্ষাও দিতে পারে। এমনকি কম কার্যকর টিকাও সংক্রমণ প্রতিরোধ, স্বাস্থ্যব্যবস্থার ওপর চাপ কমাতে এবং করোনায় মৃত্যুর হার কমিয়ে আনতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। সেদিক থেকে যেসব টিকা প্রয়োগ করা হচ্ছে, তা তুলনামূলক অনেক বেশি কার্যকর।

ফাইজার-বায়োএনটেকের দাবি, তাদের উদ্ভাবিত করোনার টিকা ৯৫ শতাংশ কার্যকর

ফাইজার-বায়োএনটেকের দাবি, তাদের উদ্ভাবিত করোনার টিকা ৯৫ শতাংশ কার্যকর
ছবি: এএফপি

টিকার কার্যকারিতা বলতে কী বোঝায়

একটি টিকার কার্যকারিতা বলতে মূলত টিকাটি কতটা সুরক্ষা দিতে পারে, তাই বোঝায়। এ ক্ষেত্রে মানবদেহে টিকার পরীক্ষার ফলাফলের তুলনায় প্রকৃত সুরক্ষা হয়তো কিছুটা কম পাওয়া যেতে পারে। এর অন্যতম কারণ, পরীক্ষার সময় এ কর্মসূচিতে দুর্বল রোগ প্রতিরোধক্ষমতার মানুষ যেমন কোনো রোগাক্রান্ত ব্যক্তি, প্রবীণ অথবা গর্ভবতী নারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় না।

গ্যাভির ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, অক্সফোর্ড–অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকাটি মানবদেহে পরীক্ষায় প্রায় ৭০ শতাংশ কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। কিন্তু বাস্তব প্রেক্ষাপটে এটি আরও বেশি কার্যকর হতে পারে। কারণ, এ টিকা নেওয়ার পর টিকাগ্রহীতা কারও করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বা মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়নি। আর তা ছাড়া টিকাটি ৭০ শতাংশ কার্যকর মানে এই নয় যে টিকাটি গ্রহণ করলে ৭০ শতাংশ মানুষ সুরক্ষা পাবে, আর ৩০ শতাংশ মানুষ করোনা সংক্রমিত হবেন। এ টিকার পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ৫ হাজার ৮০৭ জন স্বেচ্ছাসেবীর মধ্যে মাত্র ৩০ জন টিকা নেওয়ার পর করোনা সংক্রমিত হয়েছিলেন। একই পরীক্ষায় প্লাসিবো (প্রতিক্রিয়াহীন তরল) নেওয়া ৫ হাজার ৮২৯ জনের মধ্যে ১০১ জন করোনা সংক্রমিত হয়েছেন।

অন্যান্য টিকার কার্যকারিতা

করোনাভাইরাসের আগেও টিকার কার্যকারিতা আলোচনায় ছিল। এর মধ্যে কোনো টিকা প্রায় শতভাগ কার্যকর, আবার কোনোটা ৫০ শতাংশের কম কার্যকর। যেমন হাম–রুবেলার টিকা প্রথম ডোজ নিলে ৯৩ শতাংশ ও দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার পর ৯৭ শতাংশ কার্যকর বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। পোলিওর টিকাও দুই ডোজে ৯০ শতাংশ এবং তিন ডোজে ৯৯ শতাংশ থেকে শতভাগ কার্যকর। তবে মসকুইরিক্স আরটিএস,এস ম্যালেরিয়া টিকা চার ডোজ নেওয়ার পর ৩০ থেকে ৬০ শতাংশ সুরক্ষা পাওয়া যায়। এ টিকা কেবল মালাউই, কেনিয়া ও ঘানার সুনির্দিষ্ট কিছু এলাকায় অনুমোদন পেয়েছে। অন্যান্য অনুমোদনপ্রাপ্ত টিকার তুলনায় এ টিকার সাফল্যের হার মাঝারি। এখনো বিশ্বজুড়ে দিনে প্রায় ১ হাজার ২০০ শিশুর মৃত্যু হয়। সে ক্ষেত্রে এ সাফল্যের হারও অনেক বড় পার্থক্য গড়ে দিতে পারে।

কম কার্যকারিতা, বড় প্রভাব

ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসগুলো প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। এ কারণে প্রতিবছর এসব ভাইরাসের টিকা হালনাগাদ করতে হয়। যুক্তরাষ্ট্রের রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা (সিডিসি) প্রতিবছরই এসব টিকার সাফল্যের হার নির্ণয় করার চেষ্টা করে। এ ক্ষেত্রে দেশটিতে সংক্রমিত রোগী শনাক্তের সংখ্যা এবং এ রোগে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার হার বিবেচনা করা হয়। সে বিবেচনায় ইনফ্লুয়েঞ্জার টিকার কার্যকারিতা গত দশকে ৪৫ শতাংশ দেখা গেছে। আর ২০১৪–১৫ মৌসুমে এসব টিকার কার্যকারিতা দেখা গেছে মাত্র ১৯ শতাংশ। এ হার হয়তো অনেক কম। তারপরও টিকাগুলো এসব ভাইরাসের সংক্রমণে হাসপাতালে ভর্তি ও মৃত্যুর সংখ্যা বড় সংখ্যায় কমিয়ে আনতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে।

বিজ্ঞানীদের প্রাক্কলিত হিসাব বলছে, শুধু যুক্তরাষ্ট্রেই প্রতিবছর প্রায় ৭ কোটি ৭০ লাখ মানুষ ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসে সংক্রমিত হতে পারেন। এর মধ্যে ৪ লাখ ৭০ হাজার মানুষকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হতে পারে। মৃত্যু হতে পারে ১ লাখ ৩০ হাজার মানুষের।

গবেষকেরা হিসাব করে দেখেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৩ শতাংশ মানুষও যদি ফ্লুর বিরুদ্ধে ২০ শতাংশ কার্যকর টিকা নেন, তারপরও বছরে ১ লাখ ২৯ হাজার ৭০১ জনের সংক্রমিত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি প্রতিরোধ সম্ভব। আর মৃত্যু ঠেকানো সম্ভব ৬১ হাজার ৮১২ জনের। এতে যে কেবল ফ্লুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়া যাবে, তাই নয়।

স্থ্যব্যবস্থার ওপরও চাপ কমবে। ফলে অন্য রোগে আক্রান্ত রোগীরাও স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার সুযোগ পাবেন।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সৃষ্ট কোভিড–১৯ রোগ মৌসুমি ইনফ্লুয়েঞ্জার চেয়েও প্রাণঘাতী। এ ক্ষেত্রেও লক্ষ্য হলো টিকা প্রয়োগের মাধ্যমে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ এবং মানুষের সুরক্ষা। তবে করোনার টিকা যদি কেবল রোগটিকে সাময়িক সময়ের জন্যও প্রতিরোধ করতে পারে, তাহলেও প্রতিবছর এতে আক্রান্ত হয়ে মানুষের অসুস্থ হওয়া ও মৃত্যু অনেক কমে আসবে।