বৈদ্যুত খাতে দূর্নীতি: মদদ দেয় মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু

মশিউল হুসাইন খান/ যুক্তরাজ্য

হাসিনাসহ আওয়ামীলীগের নেতারা সব সময় বলে বিদুৎখাতে তারা সফল। দেশে দিনে ঘন্টায় ঘন্টায় বিদুৎ যায় তারপরও তারা এই কথা বলে। আবার আমাদের দেশে কোনো কিছুর দাম কমে না, কেবল বাড়ে , বাড়তেই থাকে। সর্বশেষ বাড়ল বিদ্যুতের দাম। কিন্তু এমন করে হুট হাট করে বিদুৎতের দাম বাড়ার কারন কি। আর এর পেছনে কার দায় রয়েছে। বিদ্যুৎ খাতে অপব্যয় না কমিয়ে সরকার জনগণের পকেটে হাত দিয়েছে। ৯ হাজার কোটি টাকার উপরে অযৌক্তিক ব্যয় যদি সমন্বয় করা হত, তাহলে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির দরকার হত না। সরকার রেন্টাল, কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নামে বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের মালিকদের মুনাফা অর্জন ও লুণ্ঠনের এক অভয়ারণ্য তৈরি করেছে। প্রশ্ন হচ্ছে এই লুটপাটের দায় জনগণ কেন নেবে?

দেশের বিদ্যুৎখাত নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ আর তদন্তে বিভিন্ন সময় দুদক উদ্যোগ নিলেও তা পরবর্তীতে আর আশার আলো দেখেনি। দেখবে কি করে এই দূর্নীতির সাথে তো সরকারের পৃষ্ঠপোষকে যারা আছেন তারা জড়িত।  সত্যি বলতে ,বর্তমান সরকার যে খাতে নিজেদের সবচেয়ে’ সফল বলে দাবি করে তা হচ্ছে বিদ্যুৎখাত। কিন্তু এই খাতেই দূর্ণীতি সব থেকে বেশি। এই খাতের ভেতরের দুর্নীতি নিয়ে যে অন্ধকার রাজত্ব তা থেকে যাচ্ছে লোকচক্ষুর আড়ালেই। বিদ্যুৎ খাতের প্রধান প্রতিষ্ঠান পিডিবি বরাবরই দুর্নীতিতে অনেক এগিয়ে। সংস্থাটির খোদ শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারাই এখন লাগামহীন দুর্নীতি-অপকর্মে নিমজ্জিত। এ খাতের দুর্নীতিবাজরা আশ্রয়-প্রশ্রয় পাচ্ছেন ঊর্ধ্বতন মহল থেকে অর্থাৎ বিদ্যু মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী তাদের লালন পালন করছে।

এই খাতের মন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু ও পিডিবির বর্তমান চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুরেদ সাথে রয়েছে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। এছাড়া সরকারের আর একজন উধ্বতর নেতা সালমান এফরহমানের সাথেও রয়েছে ঘনিষ্ঠতা। দীর্ঘদিন ধরে সংস্থাটির বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে কাজ করেছেন তিনি। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া হয় খালেদকে। কিন্তু দীর্ঘ ৩৮ বছরের চাকরি জীবনে মাঠ পর্যায়ে কাজের অভিজ্ঞাতা তার নেই বললেই চলে। পিডিবিকেন্দ্রীক দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের প্রধান সদস্য হিসেবে তিনি কেন্দ্রীয় পর্যায়ের বিভিন্ন আকর্ষণীয় পদে কাজ করেছেন। আর সংস্থার চেয়ারম্যান হওয়ার পর তিনি নিজেই এখন সিন্ডিকেটের পুরো নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পিডিবিতে যে গ্রুপটি সব সময়ই বিশেষভাবে শক্তিশালী তা হচ্ছে ঠিকাদার গ্রুপ। সরকারী নেতাদেও কাজ পাইয়ে দিতে তিনি গড়ে তুলেছেন সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটে শুধু পিডিবির চেয়ারম্যান বা এর কর্মকর্তারাই জড়িত নন, মন্ত্রণালয় বা অন্যান্য স্থানের প্রভাবশালী ব্যক্তিরাও এই সিন্ডিকেটে আছেন। তবে তাদের এই সিন্ডিকেটের টাকার বড় অংশ যায় মন্ত্রীর কাছে। আর সে কারনে মন্ত্রী সব দেখেও চুপ থাকেন।

অন্যদিকে বিদ্যুৎ বিভাগের সংস্কারসহ নানা কাজে যে পরিমাণ দুর্নীতি আর লুটপাট হয় তা অকল্পনীয়। সবচেয়ে বড় রকমের চুরি হয়ে থাকে কেনাকাটার টেন্ডারে। যাকে ‘চুরি’ না বলে ‘লুট’ বলেই আখ্যায়িত করে থাকেন অভিজ্ঞমহল। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে রাঘব বোয়ালরা। প্রতিবছর এই ক্রয় খাতে শত শত কোটি টাকা লুট হচ্ছে নানা কায়দায়। যার ভাগ যায় গুটিকয়েক কর্মকর্তা ও সংস্থার বাইরের ব্যক্তিবিশেষের পকেট। খালেদ মাহমুদই ইতিপূর্বে প্রধান প্রকৌশলী থাকার সময় আড়াই হাজার কোটি টাকা লুটপাটের দায়ে অভিযুক্ত হয়েছিলেন। এজন্য ২০১৪ সালে দুদকের তদন্ত এবং জিজ্ঞাসাবাদেরও মুখোমুখি হয়েছিলেন। অবশ্য খালেদ মাহমুদ বরাবরই ‘ম্যানেজ মাস্টার’ হিসেবে পরিচিত। ম্যানেজিং সক্ষমতার মাধ্যমে দুদকের সেই তদন্ত কোনো রকমে ধামাচাপা দিয়েছেন।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অধীন বিভিন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি ক্রয় ও মেরামত খাতে প্রতিবছর কয়েক হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়ে থাকে। আর একে ঘিরেই গড়ে উঠেছে সিন্ডিকেট। পছন্দের কোম্পানিকে কাজ দিতে যে কোন ধরণের অনিয়ম আর কৌশলের আশ্রয় নিতে দ্বিধা করে না এই সিন্ডিকেট। এই বহিরাগতরাও বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কোম্পানির মালিক বা বড় বড় কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতারাও আছেন এই সিন্ডিকেটে। পিডিবির কোন কাজ এলেই দরদাতাদের নিজেদের মধ্যে অলিখিত গোপন সমঝোতা প্রতিষ্ঠিত হয়, বেশি দর হাঁকিয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাতের লক্ষ্যে। দেখা যায়, কখনো কখনো সবদিক থেকে যোগ্য হওয়ার পরও সর্বনিম্ন দরদাতার দর বিভিন্ন অযৌক্তিক অজুহাত দেখিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানকে অযোগ্য ঘোষণা করা হয়। নানান কৌশলে নিম্নদরদাতাকে বাদ দিয়ে উচ্চ ও অস্বাভাবিক মূল্যে মালামাল ক্রয় করা হয়ে থাকে। অতীতে এমন ঘটনা অনেক ঘটেছে, এখনো ঘটছে।

পিডিবির চেয়ারম্যান খালেদ মাহমুদ সারাজীবনই পিডিবির প্রধান কার্যালয়ে ডিজাইন, প্রোগ্রাম এবং প্ল্যানিং বিভাগে কাজ করেছেন। সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, পিডিবির এই শাখা সাধারণত দুর্নীতিবাজদের জন্য অত্যন্ত আকর্ষণীয় শাখা হিসেবে পরিচিত। এর কারণ, এগুলো ক্রয় বা কেনা-কাটার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট। বড় দুর্নীতিগুলো হয়ে থাকে এই শাখার মাধ্যমেই। অর্থাৎ দেখা যাচ্ছে, চাকরি জীবনের শুরু থেকেই তিনি দুর্নীতিবাজ সিন্ডিকেটের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গিয়েছিলেন।

এ শাখা যেভাবে ডিজাইন এবং পরিকল্পনা করে দেন টেন্ডারটির স্পেসিফিকেশন সেভাবেই তৈরি হয়। এতে কাজ পায় তাদের পছন্দের ওই নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানই। অর্থাৎ কে কাজ পাবে, এটা টেন্ডার আহ্বানের আগেই নির্ধারিত হয়ে যায়। এসব শাখায় নিজের পছন্দের লোকদের শুধু নিয়োগই দেননি, তারা সবাই চেয়ারম্যানের প্রতি অন্ধ অনুগত, কারিগরি মূল্যায়ন কমিটির লোকজনও এই সিন্ডিকেটের সদস্য।

নিয়োগ, বদলি, পদায়ন, পদোন্নতি সবকিছুতেই অনিয়ম

আর একজন পিডিবির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা হচ্ছেন সদস্য (প্রশাসন) জহুরুল হক। তিনি পিডিবিতে নিয়োগ বাণিজ্যের এক মহা সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। রয়েছে সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে ঘনিষ্ঠতা।  ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় বা বুয়েটের মতো খ্যাতিমান প্রতিষ্ঠান দিয়ে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষা নেয়া হলেও ফলাফলে অভিনব জালিয়াতি করা হয়। যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন, ফলাফল প্রকাশের আগেই তাদের সাথে যোগাযোগ করে এই সিন্ডিকেট, তারপর পাস করিয়ে দেয়ার জন্য চুক্তি করে। পরীক্ষায় স্বাভাবিকভাবে পাস করলেও পরীক্ষার্থীরা জানতেও পারেন না যে তারা মেধার বলেই টিকেছেন, টাকা দেয়ার ফলেই তাদের উত্তীর্ণ করা হয়েছে এমন ধারণা সৃষ্টি করার পর ওই ব্যক্তিরা চাকরি পেতে এই সিন্ডিকেটের কাছে টাকা দিতে আর কোন দ্বিধা-দ্বন্দ্বে ভোগেন না। জানা গেছে, জহিরুল হকের সকল অনিয়ম-দুর্নীতিতে সহযোগিতা করছেন তার আত্মীয় মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সিন্ডিকেট সদস্য।

জহিরুল হক পিডিবিতে চেয়ারম্যানের ডানহাত হিসেবে পরিচিত, বস্তুতঃপক্ষে খালেদ মাহমুদকে ব্যবহার করেই সব অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন জহিরুল হক। আর খালেদ মাহমুদ যিনি কার্যতঃ অবসরেই গিয়েছিলেন তিনি আবার নতুন করে নিয়োগ পাওয়াকে ক্রিকেটের ভাষায় ’লাইফ’ পাওয়া বলে মনে করছেন। তিনি তার ঘনিষ্ঠজনদের বলেছেন- ‘লাইফ’ যখন পেয়েছি যতদূর পারি ‘রান’ তুলে নিই। এই ‘রান’ হচ্ছে ‘নগদ নারায়ণ’ এমনটাই বলছেন পিডিবি সংশ্লিষ্টরা।

 

ব্লগার এবং নাস্তিকদের বিচারের দাবিতে দেয়ালে দেয়ালে পোষ্টার এবং মিছিল।

এস রিফাত, স্টাফ রিপোর্টার

হেফাজতে ইসলামসহ আরো কয়েকটি ইসলামী সংগঠন বেশ কিছুদিন ধরেই সরকারকে ব্লগার এবং নাস্তিকদের আইনের আওতায় এনে তাদের যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে চাপ দিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় ইসলামী দলগুলোকে বাংলাদেশের বিভিন্নস্থানে মিছিল এবং সমাবেশ করে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়। তাছাড়া কোনও কোনও এলাকার অলিতে-গলিতে দেয়ালে দেয়ালে নাস্তিকদের পোষ্টার লাগিয়ে হত্যা করার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।

এর আগে (গত রবিবার) হৃদয় কাজী নামের হেফাজতে ইসলামের একজন সক্রিয় কর্মী ‘এথিস্ট নোট’ নামের একটি ম্যাগাজিনের সকল ব্লগার/ নাস্তিকদের নামে মামলা দায়ের করেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত খবর নিয়ে জানা যায় যে, এথিস্ট এরা নামের এই ওয়েবসাইটটি ইসলাম ধর্মকে অত্যন্ত নোংরাভাবে ফুটিয়ে তুলে একটি ম্যাগাজিন প্রকাশিত করে। মূলত যা দেখেই ইসলামী সংগঠনগুলো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে।

এ বিষয়ে মামলার বাদি হৃদয় কাজীর সাথে কথা হলে তিনি আমাদের বলেন ’’হঠাৎ করেই ফেসবুকের মাধ্যমে এই ম্যাগাজিনটি আমার চোখে পড়ে, আমি কৌতুহল বশত এটি ডাউনলোড করে দেখতে পারি সেখানে ধর্ম, মুসলিম, কোরআন এবং আমাদের প্রাণপ্রিয় নবী মোহাম্মদ (সঃ) কে নিয়ে নানাবিদ কুরুচিপূর্ন  শব্ধ ব্যবহার করে ‘বিনাশ হোক ধর্ম‘ নামে এই মাগাজিনটি প্রকাশিত করে, যা একজন মুসলিম হিসেবে মেনে নিতে পারিনি এবং আমি মনে করি এদেরকে কতল (হত্যা) করা আমার এবং আমাদের সকল মুসলিমদের ওপর ওয়াজিব হয়ে গেছে।

মামলার আসামীদের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আমাদের যে কয়টি নাম বলেন, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েক জন হলেন এথিস্ট নোটে’র সম্পাদক খায়রুল্লাহ খন্দকার, সহ সম্পাদক আমিনুল হক, লেখক প্রশান্ত বাড়ই, এম ডি তোফায়েল হোসাইন এমডি জিল্লুর রহমান, অনিকা হক মল্লিক,শ্রাবণী শিকদার, মোহাম্মদ ওয়াহিদ হোসেন, মহাম্মদ ফাহিদুল আলম, মুহাইমিনুল বিশ্বাস পারভেজ, জোবায়ের হোসেন, বিপ্লব পাল, এম ডি হাসান তৌহিদ, মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান, নুর মোহাম্মদ, জনি জোসেফ কস্তা, সহ আরো অনেকে।

প্রশান্ত বাড়ই নামে এক ব্যক্তির ফাঁসি চেয়ে দেয়াল লিখন

এদিকে মিছিল এবং সমাবেশে থাকা কয়েকজনের সাথে কথা হলে তারা সাংবাদিকেদের জানান যে, ‘‘বর্তমানে নাস্তিক এবং কিছু নব্য ব্লগারদে উৎপাত এতটাই বেড়েছে যে এগুলো মেনে নেওয়া কোনও মুসলমানদের পক্ষে সম্ভব নয়। তবে একটা কথা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আমাদের কলিজার টুকরা হযরত মুহাম্মদ সাঃ কে নিয়ে কেউ কিছু বললে তাকে এই পৃথিবী থেকে বিদায় করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব।‘‘

তাদের মধ্যে আর একজন ইসলামী ব্যক্তিত্ব মুফতি ফজলুর রহমান বলেন, ‘‘নাস্তিকদের গালি দিলে কারও গায়ে লাগলে আমার করার কিছু নাই। আল্লাহর দেশে থাকতে হলে আল্লাহকে না দেখে আল্লাহর অস্তিত্ব মানতে হবে, না হলে তুমি আল্লাহর দেশে থাকতে পারবে না।’’

এদিকে সমাবেশ চলাকালে মুফতি আহমদ উল্লাহ জিহাদী উপস্থিত থাকা দ্বীনদার ভাইদের উদ্দেশে বলেন যে, ‘‘যদি কোন মুসলিম মুরতাদ হয়ে যায় এবং মুরতাদের সকল শর্ত তার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় (সুস্থ- মস্তিস্ক, বালেগ, স্বাধীন ইচ্ছাশক্তির অধিকারী হওয়া) তাহলে তার মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হবে এবং ইমাম তথা মুসলমানদের শাসক অথবা তাঁর প্রতিনিধি যেমন বিচারক তাকে হত্যা করবে। তাকে গোসল করানো হবে না, তার জানাযা-নামায পড়ানো হবে না এবং তাকে মুসলমানদের গোরস্থানে দাফন করা হবে না।‘‘

হেফাজেত ইসলামে এক কর্মীর কাছে দেয়ালে পোস্টার লাগানোর বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি আমাদের বলেন যে, ‘‘সমস্ত ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক-মুরতাদ যারা আমাদের প্রিয় নবী মুহাম্মাদ (সা.) আল্লাহ এবং আমাদের ধর্ম নিয়ে ব্যঙ্গ করবে, গালি-গালাজ করবে, কটূক্তি করবে তারা সবাই আমাদের টার্গেট। ইনশাআল্লাহ আমরা তাদের হত্যা করবো।’’

উল্লেখ্য, হেফাজতে ইসলাম নাস্তিক এবং ব্লগারদের ছবি যেভাবে দেয়ালে দেয়ালে লাগিয়েছে, ২০১৬ সালে ঠিক এভাবেই ফেসবুক পেজে চার ব্লগারের ছবি প্রকাশ করে হত্যার হুমকি দিয়েছে জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলাম। তারা হচ্ছেন আসিফ মহিউদ্দিন, সানিউর রহমান, শাম্মি হক ও অনন্য আজাদ। তারা সবাই এখন প্রবাসী। জঙ্গি হামলার ভয়ে এসব ব্লগার ও অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট অনেক আগেই দেশ ছেড়েছেন।

মহানবী (সা:) কে নিয়ে কুটূক্তি করায় নাস্তিক মাহাদি’র ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন।

নিজস্ব প্রতিনিধি: বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) সম্পর্কে এথিস্ট নোট নামে একটি অনলাইন পোর্টালের একটি ম্যাগাজিনে জঘন্য ও ঘৃণ্য কুটূক্তি করার অভিযোগে বর্তমান ব্লগারদের মধ্যে অন্যতম এমডি মাহাদি হাসানের ফাঁসির দাবিতে রাজধানীতে হেফাজতে ইসলামের কর্মীদের বিক্ষোভ মিছিল এবং প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবাদকারীদের মতে মাহাদি যে এই প্রথম মহানবী (সা:) কে নিয়ে কুটূক্তি করেছেন এমনটি নয়, তিনি দীর্ঘদিন ধরেই তাঁর নিজের ফেসবুক পেইজ এবং এবং বিভিন্ন ব্লগ এবং ওয়েবসাইটে মহানবী (সা:), আল্লাহ এবং ইসলামের বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে খুবই জঘন্য ভাষায় লিখে আসছে।

আজ সোমমার দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর মাতুয়াইলে বিশ্বনবীর (স:) মর্যাদা রক্ষা ও নাস্তিক-মুরতাদ প্রতিরোধ কমিটির আয়োজনে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়াও হেফাজতে ইসলামের ডাকে এই সমাবেশে বিভিন্ন মসজিদ ও মাদরাসাসহ সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরাও অংশ নেন।

এর আগে গতকাল (১৬ই ফেব্রয়ারী) রবিবার মোকাম সাইবার ট্রাইব্যুনাল ঢাকায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৮ ধারায় হৃদয় কাজী নামে হেফাজতে ইসলামের এক কর্মী মাহাদী হাসান সহ এথিস্ট নোটের ম্যাগাজিননের সকল ব্লগার এবং নাস্তিকদের নামে মামলা দায়ের করেন।

এদিকে সমাবেশের অন্যতম ব্যক্তি হৃদয় কাজীর কাছে সাংবাদিকরা এই বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি আমাদের জানান যে, ”৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা:) সম্পর্কে কেউ এমন জঘন্য কুটূক্তি করবে, আমাদের প্রাণের পিয় মানুষটিকে নিয়ে এভাবে উল্টা পাল্টা লেখালেখি করবে আর আমরা বসে থাকবো?”

তিনি আরোও বলেন, ”দেখুন মাহাদি নামের এই নাস্তিকের দীর্ঘদিন ধরে এই ধরনের কার্যকলাপগুলো চালিয়ে আসছে। নিজের ফেসবুকে প্রতিনিয়তই মুহাম্মদ (সা:) এবং আল্লাহকে নিয়ে খুবই বাজে বাজে স্ট্যাটাস, এদেরকে দুনিয়া থেকে বিদায় করা আমাদের ঈমানী দায়িত্ব।”

হৃদয় কাজী সহ এই সবাবেশে উপস্থিত থাকে সকল বক্তারা অবিলম্বে কটূক্তিকারী এমডি মাহাদি হাসনের ফাঁসি এবং সরকারকে বিশ্বনবীর বিরুদ্ধে অবমাননার জন্য ফাঁসির দন্ডের বিধান রেখে আইন পাশের দাবি জানান। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দেন বক্তারা। এদিকে এই বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে মামলার আসামি মাহাদি হাসানের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই।

উল্লেখ্য, বেশ কয়েক মাস যাবতই এথিস্ট নোট নামের এই ওয়েবসাইটি ইসলাম, আল্লাহ এবং মুহাম্মাদ (সা:)কে নিয়ে লেখালেখি করে আসছে। আর এরই ধারাবাহীকতায় এবার তারা একটি ম্যাগাজিন প্রকাশ করেছে এবং এখানেও মুসলমানদের কলিজা মুহাম্মাদ (সা:) সহ যেসব বিষয়গুরো তুলে ধরা হয়েছে যা দেখেই হেফাজতে ইসলাম এতো ক্ষিপ্ত হয়েছে এবং এই ম্যাগাজিনের সকলের নামে মামলাও দায়ের করেছে।

আওয়ামীলীগের একনায়কতন্ত্র চর্চা

এস এম মামুন তালুকদার, যুক্তরাজ্য

বিগত এক দশকের আওয়ামীলীগের শাসন আমলে দেশে তাদের একচ্ছত্র আধিপত্য দেখা গিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণের কথা বলেছেন। কিন্তু একইসঙ্গে দেশজুড়ে কার্যত আওয়ামী লীগের স্বৈরাচার কায়েম করা হয়েছে। বিরোধীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নেই। কেউ সরকারের সমালোচনা করলেই জামায়াত শিবিরের তকমা লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যেই প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় এসেছে তাতে করে তারা স্বৈরাচারের ধারাবাহিকতাই রক্ষা করেছে। সর্বোপরি দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোটি ভেঙে গিয়েছে।

সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী একচ্ছত্র ক্ষমতার চর্চা করেন৷ সংবিধান প্রধানমন্ত্রীকে একচ্ছত্র ক্ষমতা দিয়েছে৷ অন্যদিকে বেশির ভাগ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানে দলীয়করণ ও দুর্নীতি প্রধান সমস্যা৷ এর সঙ্গে নেতৃত্বের অযোগ্যতা ও অদক্ষতার কারণে প্রতিষ্ঠানগুলো ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না এবং সর্বত্র রাজনৈতিক প্রভাব ও একনায়কতন্ত্রের সুস্পষ্ট ছাপ পরিলক্ষিত হচ্ছে।

একটি শক্তিশালী সংসদীয় রীতির সরকারের ব্যাপারে বাংলাদেশে সাংবিধানিক ও আইনগত বাধ্যবাধকতা থাকলেও দুর্বল সংসদীয় সংস্কৃতি, নির্বাহী বিভাগের বিস্তৃত নিয়ন্ত্রণ ও ক্ষমতাসীন দলের আধিপত্য থাকায় সংসদীয় ধাঁচে সরকার পরিচালনার স্পৃহা ও পদ্ধতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে৷ সংসদের মতো নির্বাহী বিভাগও সরকার নিয়ন্ত্রিত। আইনসভা, নির্বাহী ও বিচার বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার বিভাজন পুরোপুরি অসমতল এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রাধান্যকৃত৷

আওয়ামীলীগ সরকারের আমলে অব্যাহতভাবে রাজনৈতিকভাবে দলীয়করণ হওয়ায় বিতর্কিত নিয়োগ, পদোন্নতি, চাকরিচ্যুতি এবং বিচারকের আচরণের মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সার্বিকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে। বিচারবিভাগের পাশাপাশি জনপ্রশাসনের কর্মকর্তারাও রাজনীতিকীকরণের শিকার হয়েছেন৷ শুধু রাজনৈতিক বিবেচনা থেকে বিপুলসংখ্যক সরকারি কর্মকর্তাকে ক্ষমতাসীন দল ওএসডি করে রেখেছে৷ সরকারি কর্মকর্তাদের সততা ও নিয়োগের প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়েছে৷ তাদের পদোন্নতির ব্যবস্থাও অস্বচ্ছ এবং সরকারি সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল৷

আইনের শাসন সমুন্নত রাখার পরিবর্তে সরকার ও রাজনৈতিক দলের স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে পুলিশ প্রশাসন নির্বিচারে ব্যবহৃত হয়ে আসছে৷ তাদের কর্মতৎপরতায় রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা এবং বিচারের ঊর্ধ্বে থাকার সুযোগ পাওয়ায় এক ধরনের বিচারহীনতার সংস্কৃতির প্রসার ঘটছে৷ রাজনৈতিকভাবে ব্যবহৃত হওয়ায় নির্বাচন কমিশনও তার বিশ্বাসযোগ্যতা প্রতিষ্ঠায় সফল হয়নি৷ কমিশনের সদস্যদের নির্দলীয় হওয়ার কথা থাকলেও তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে৷

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রাতিষ্ঠানিক ও রাজনৈতিক কারণে জর্জরিত, যা তার সার্বিক দক্ষতা ও কার্যকারিতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে৷ দুদকের সমস্যা হচ্ছে দৃঢ় রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব এবং ক্ষমতাসীন দলের দলীয় লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগের ব্যপারে কোনো কার্যক্রম গ্রহণ না করা। দুদকের মতো দুর্বল নেতৃত্ব, পেশাগত দক্ষতার অভাব এবং সরকারি সংস্থাগুলোর অসহযোগিতার কারণে তথ্য কমিশন ঠিকমতো কাজ করতে পারছে না৷

ক্ষমতাসীন দল জনস্বার্থের নামে দলীয় স্বার্থের সম্প্রসারণে জনগণের সম্পদের ওপর একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেছে৷ রাজনৈতিক ব্যবস্থা ‘দুর্বৃত্তায়ন’ ও বাণিজ্যিকীকরণের অংশ হয়ে গেছে৷ ভয়ভীতি বা সুবিধা দেওয়ার নামে তারা অস্বচ্ছভাবে দলীয় তহবিল সংগ্রহ করে থাকে৷ আজকে গণমাধ্যম, নামেমাত্র স্বাধীন হলেও নিয়ন্ত্রণমূলক আইনি কাঠামোর কারণে অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে জাতীয় নিরাপত্তা, সরকারি গোপনীয়তা ও আদালত অবমাননার মতো বিভিন্ন অজুহাতে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা কার্যকরভাবে খর্ব করা হয়েছে৷ গণমাধ্যমের পাশাপাশি দেশের ব্যবসা খাতের আইনি কাঠামো অসামঞ্জস্যপূর্ণ৷ সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে টিকে থাকা কোন ভাবেই সম্ভব নয় এখন। তাই অনেক ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর প্রশ্নবিদ্ধ সম্পর্ক দেখা যায়৷

উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যতীত অন্যান্য সকল ক্ষেত্রেই আজ একচ্ছত্র আধিপত্য আওয়ামীলীগের। ক্ষমতার প্রাচুর্যে তারা একনায়কতন্ত্র তথা বাকশালি রাজনীতি কায়েম করেছে। কোথাও কোন স্বাধীনতা নেই। না জনগনের না কোন সরকারি, বেসরকারি বা ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠানের।

ছাত্রলীগ নাকি সন্ত্রাসলীগ?

এস এম মামুন তালুকদার, যুক্তরাজ্য

দেশজুড়ে চলছে ত্রাশের রাজত্ব। সরকারের ছত্রচ্ছায়ায় সব ধরনের অপকর্মে জড়িত হচ্ছে ছাত্রলীগের কর্মীরা। বীরদর্পে তারা একের পর এক ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে। তারা যানে যতই তাদের বিরুদ্ধে আন্দোলন হোক তাদের কিছুই হবেনা শেষপর্যন্ত। তাদেরকে ক্ষমতার লোভ দেখিয়ে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধি করছে কতিপয় সিনিয়র নেতারা। দেশ কে বা জাতিকে ভালোবেসে নয় তারা শুধুমাত্র ক্ষমতার লোভে ছাত্রলীগে যোগ দিয়েছে। এখন এমনই অবস্থা দাড়িয়েছে যে দেশজুড়ে সবাই ছাত্রলীগের কর্মী বলে নিজেকে পরিচয় দিচ্ছে।

এখন যদি বলা হয় ভার্সিটি পড়ুয়া একটা ছেলে কেন ছাত্রলীগে যোগদান করবে? ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে কি আদর্শ আছে? আসলে প্রকৃতপক্ষে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীর সংখ্যা খুবই নগণ্য। হিসেব করলে দেখা যাবে দেশের ৮৫-৯০ ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র ছাত্রলীগকে দেখতে পারে না। এখন সবার মনে প্রশ্ন জাগবে, কেন দেখতে পারে না? দেখতে না পারার কারণ ক্যাম্পাসকেন্দ্রিক যত অপকর্ম আছে প্রায় সবগুলোর সাথে জড়িত ছাত্রলীগ। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ছিনতাই, মাদকবাণিজ্য, ভর্তিবাণিজ্য, শিক্ষক লাঞ্ছনা, নিয়োগ বাণিজ্য, সাধারণ শিক্ষার্থীদের মারধর, রামদা, ছুরি, চাপাতি হলে রাখা, গণমাধ্যম কর্মীদের মারধর, ক্যাম্পাস ভাঙচুর, হল ভাঙচুর, হল থেকে মোবাইল, ল্যাপটপ চুরি, জুয়া, ক্যাম্পাস থেকে বিভিন্ন জিনিস চুরি থেকে শুরু করে সব ন্যাক্কারজনক কাজের সাথে জড়িয়ে পড়েছে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা।

বর্তমান ছাত্রলীগ নেতা কর্মীদের নীতি ও আদর্শ বলতে কিছু আছে কিনা সন্দেহ। এরা আসলে  ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসলীগ, চাঁদাবাজলীগ। প্রতিটা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোর অবস্থা এতটা বাজে যে, হলে থাকার মতো কোনও পরিবেশ নেই। হলে সিট দেবে প্রশাসন আর সিটের জন্য দৌড়াতে হয় ছাত্রলীগ নেতার পিছে। এ যেন এক দাসপ্রথা। অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে ক্যান্টিন নেই। কারণ ক্যান্টিনে খেয়ে তারা টাকা দেয় না, ভয় দেখায়, বলে, আমি ছাত্রলীগ করি। ডাইনিং চলে না। কারণ বাকি খেয়ে টাকা দেয় না। বিশ্ববিদ্যালয়ের নানা কাজে ভাগ না পেলেই তারা ভিসি ঘেরাও, শিক্ষকের সামনে অকথ্য ভাষায় গালাগালি ছাত্র করে নামধারী ছাত্রলীগ। এদের দেখলে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ভয় পায়। কেউ ব্যক্তিগত খরচে ভবন নির্মান করলেও চা-পানি খাওয়ানোর নামে চাদাঁ দিতে হয় তাদের। না হলে কাজ বন্ধ করে দেবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে দেখা যায়, শিবিরের অসংখ্য পোলাপান ছাত্রলীগ হয়ে হলে থাকে। কারণ লীগ করলে টিকে থাকতে পারবে।   ছাত্রলীগ সাধারণ ছাত্রদের ব্রেইন ওয়াশ করে হাতে মাদক দিয়ে। আর যে কয়টা ভালো কাজ করে সেগুলোও চাঁদাবাজির টাকা দিয়ে করে। সংগঠনে চেইন অব কমান্ড নাই। কেউ কাউকে কেয়ার করে না। ছাত্রলীগ নেতা হওয়া মানে টাকার বিছানা পাওয়া, বিশাল ক্ষমতা পাওয়া। জুনিয়র কর্মী কিভাবে বেয়াদবি করবে সিনিয়রদের সাথে সেটা শেখায় ছাত্রলীগের অধিকাংশ নেতারা। প্রথম বর্ষের ছেলে মাস্টার্সের ছেলের গায়ে হাত তোলে। এটা কি ধরনের রাজনীতি? আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের অনেকের অনেক টাকা। এসব দেখে ছাত্রলীগ নেতারা ক্যাম্পাসে চাঁদাবাজি করে করে। বাজেটের টাকায় ভাগ চায়।

আজ জোর করে ছাত্রলীগ কর্মী বানাতে হয়। কেউ নিজ ইচ্ছায় ছাত্রলীগে যোগ দেয়না।  শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগে যোগ দেবে নেতাদের আদর্শ দেখে। সেই আদর্শ কোথায়?

দালাল, দুর্নীতিবাজমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে বহু প্রাণের বিনিয়মে আমরা স্বাধীন হয়েছি পাকিস্তানিদের কাছ থেকে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচিৎ ছাত্রলীগে শুদ্ধি অভিযান চালানোর। আর শাখা কমিটিগুলো দেয়ার সময় সৎ ও যোগ্য প্রার্থীদের বাছাই করে কমিটিতে স্থান দেয়ার। কোনও অনিয়ম ও চাঁদাবাজির অভিযোগ পেলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নিতে হবে। দালাল, দুর্নীতিবাজ, কুলাঙ্গারমুক্ত বাংলাদেশ চায় সবাই এসব আদর্শ ও ন্যায়-নীতি বিবর্জিত খুনিলীগ, চাঁদাবাজলীগ ও সসন্ত্রাসীলীগ নয়।

সরকার ও সরকারী দলের কর্মীদের বেপরোয়া আচরণ

এস এম মামুন তালুকদার, যুক্তরাজ্য

সমাজ ও রাষ্ট্রের প্রতি সরকার ও সরকারী দলের প্রতিনিয়ত ক্রমবর্ধমান বেপরোয়া আচরণ এবং অসঙ্গতি দেখে  রাষ্ট্র এবং তার অধিকর্তাদের উপর থেকে সাধারণ মানুষের আস্থা উঠে যাচ্ছে। প্রতিমূহুর্তে তারা ধুর্ততার আশ্রয় নিয়ে বলে চলেছে তারা দেশ বাসীকে উন্নতির চরম শিখরে পৌছে দিয়েছে। শুধুমাত্র আত্নতৃপ্তি পাওয়া ছাড়া এতে তেমন কোন ফায়দা হচ্ছে বলে তো মনে হয়না।

সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নতির আড়ালে দেশে দুর্নীতি চলছে। ব্যাংকের টাকা লুটপাট হচ্ছে। সোনা তামা হচ্ছে। কয়লার খনি চুরির খনিতে পরিণত হয়েছে। সর্বত্র সরকারের বেপরোয়া আচরণ পরিলক্ষিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ দেশে অরাজকতা কায়েম করছে। দেশের মানুষ এখন শান্তিতে নেই। এভাবে দেশ চলতে পারে না। দেশের শান্তি ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে বিএনপির বিকল্প নেই।

গণতন্ত্র বিসর্জন দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থাকতে পারে না। আমাদের এখনই সোচ্চার হতে হবে গণতন্ত্র রক্ষায়। গণতন্ত্রের অভাবে দেশে আজ অরাজক পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মুক্তিযুদ্ধসহ সব আন্দোলন সংগ্রামে গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিলো।  অথচ এখন গণমাধ্যমের গলা চেপে ধরা হয়েছে। সরকার এবং সরকারী দলের গুনগান ছাড়া আর কিছুই তারা করতে পারবে না। মত প্রকাশের কিংবা স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশের মতো অবস্থা নেই গনমাধ্যমের। তারাও সরকারের কাছে আজ জিম্মি। এভাবে চলতে থাকলে গণমাধ্যমের অস্তিত্ব খুজে পাওয়া যাবে না। গণতন্ত্রই স্বাধীনতার রক্ষাকবজ। গণমাধ্যম দলীয়ভাবে কাজ করবে সেটা জাতি আশা করে না।  গণতন্ত্র না থাকলে দেশ টিকে থাকবে না, আমাদের অস্তিত্বও খুজে পাওয়া যাবে না।

দেশের অন্যান্য সব ক্ষেত্রের মতো আইন ও বিচার বিভাগেও হস্তক্ষেপ করছে সরকার। সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের কোন বিচার হয়না অথচ প্রতিহিংসার দরুন বিএনপির নেতাকর্মীদের বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় ফাসিয়ে তাদেরকে হয়রানি করা হচ্ছে।  আইনের শাসন ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার্থে আইন পেশায় সংশ্লিষ্টদেরই এগিয়ে আসতে হবে। দেশে বিচার বিভাগে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তাকে অরাজকতা বলা যেতে পারে। আইনজীবীরা যদি ঐক্যবদ্ধভাবে পরিস্থিতি মোকাবেলা না করতে পারেন, তবে সামনে বিপর্যয় অপেক্ষা করছে। বেগম খালেদা জিয়াকে সরকারের ইশারায় অন্যায়ভাবে কারাবন্দী করে রাখা হয়েছে। আইন তার নিজস্ব গতিতে চললে তিনি অবশ্যই মুক্তি পাবেন।

সরকার দলীয় রাজনীতি আজ এত বেশী বেপরোয়া এবং দুর্নীতিগ্রস্থ যেকারনে দলীয় বিবেচনার ঊর্ধ্বে উঠে ঐক্যবদ্ধভাবে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হচ্ছে না। বিচার বিভাগ আজ প্রশ্নবিদ্ধ। দেশের মানুষকে সব ধরনের অবিচারের হাত থেকে মুক্ত করার জন্য এবং দেশের মানুষ যাতে দলমত নির্বিশেষে ন্যায়বিচার পায় তার জন্য আইনজীবীদের এখানে ভূমিকা রাখার সময় এসেছে। দেশ এখন ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। গণতন্ত্রকে প্রতিনিয়ত হত্যা করা হচ্ছে। দেশে অবৈধ সরকার চেপে বসেছে। এখন গণ-আন্দোলনে যেতে হবে। দেশের মানুষের মুক্তির জন্য ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করা এখন সময়ের দাবি।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের লুটপাট, জনগণের ভোট ডাকাতি, অধিকার হরণ, দেশব্যাপী ভয়াবহ সন্ত্রাস, গুম, খুন ও ধর্ষণের মতো জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। কিন্তু জাতি এ অবস্থা থেকে মুক্তি চায়। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে যে হরিলুট হয়েছে তাতো ইতিহাসে সেরা। ৬ হাজার টাকার বালিশ- এর আগে কোন কোন প্রকল্পে কেনা হয়েছে তা জাতি জানতে চায়।  ২৫০ টাকার বাজার মূল্যে বালিশ ৬ হাজার টাকা-এ এক মহা তুঘলকি কাণ্ড। সর্বত্র সীমাহীন লুটপাট চলছে। শুধু দুর্নীতি-ই নয়, বেড়ে চলেছে বেকারের সংখ্যা ও কৃষকের হাহাকার। এ জন্য সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। নির্বিচারে সরকারের এহেন বেপরোয়া আচরণ কখনোই মেনে নেওয়া যাবেনা। তারা জবাবদিহিতার উর্ধ্বে নয়। তাদেরকে অবশ্যই জনগনের প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে।

দেশব্যাপি সরকারের এই দুর্নীতি মহামারি আকার ধারণ করেছে। এখনই প্র‍য়োজন কঠোর হস্তে সরকার ও সরকারের মদদপুষ্ঠদের দমন করা। অন্যথায় দেশ ক্রমশ সংকটময় পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাবে।

সাধারণ মানুষকে জিম্মি করার রাজনীতি

এস এম মামুন তালুকদার, যুক্তরাজ্য

আমরা এখন এমন এক সময়ের মধ্যে আছি যখন দেশ ও দেশের মানুষ এক চরম সংকটের সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তারা চাইলেও এর থেকে পরিত্রান মিলছে না। দেশের সাধারণ মানুষ আজ এই অবৈধ সরকারের কাছে জিম্মি। গণতন্ত্র আজ বিলুপ্ত, জনগনের বাক স্বাধীনতা ক্ষুন্ন করা হয়েছে, দেশের সমস্ত ক্ষেত্র আজ দুর্নীতিগ্রস্থ, সুদ-ঘুষের বানিজ্য, বেকার সমস্যা, লাগামহীন বাজারদর মানে সবদিক দিয়েই জন সাধারণ এক সীমাহীন অস্থিরতার ম মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। যার আশু সমাধান প্রয়োজন। দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্র‍শোজন যেখানে  জনগন শান্তিতে ভোট দিয়ে যোগ্য সরকার নির্বাচিত করতে পারে। যে সরকার গনতান্ত্রিকভাবে দেশ পপরিচালনা করবে এবং জনগনের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে।

দেশজুড়ে বিভিন্নরকম সমস্যা থাকলেও এর কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ক্ষমতা-কেন্দ্রীক নির্বাচন, আর তাই শুধু নির্বাচন সংকটের সমাধান দিতে পারবেনা। এজন্য রাজনৈতিক অঙ্গনে দীর্ঘমেয়াদী সংস্কারের লক্ষ্যে কিছু মৌলিক ক্ষেত্রে ঐক্যমত্য অর্জন অপরিহার্য। এর মধ্যে রয়েছে বর্তমান নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন করে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির প্রর্বতন, এছাড়াও না-ভোটের পূন:প্রর্বতন এবং নির্বাচনী জোটের রাজনীতি বন্ধ করা উচিৎ। তবে সবথেকে বড় কথা প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার পূর্নবিন্যাস, বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীর একচ্ছত্র ক্ষমতার সীমারেখা নির্ধারণ করতে হবে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী দেশের সকল বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন। এর মানে হলো অন্যান্য প্রশাসনের কোন ভূমিকা নেই। থাকলেও তারা সক্রিয় নয়। এছাড়াও দুই মেয়াদের বেশী এক ব্যাক্তি সরকার প্রধান হতে পারবেন না এমন নীতিমালা প্রনয়ণ করা প্রয়োজন। দলীয় প্রধান হয়েও একই সাথে সরকার প্রধানের পদাসীন হবার সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। সংসদ বর্জনের সংষ্কৃতি আইন করে বন্ধ করতে হবে, একইসাথে সংসদ সদস্যদের নৈতিক আচরণবিধি প্রনয়ণ ও কার্যকর করতে হবে। দেশ এখন বিরোধী দলশুন্য। তাই সরকারও স্বেচ্ছাচারিতার চরম সীমায় গিয়ে জনগনকে জিম্মি করে রেখেছে। সংসদে বিরোধী দলের অংশগ্রহণের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে এমনকি বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করতে হবে। তাছাড়া সংবিধানের ৭০নং অনুচ্ছেদের সংশোধনীসহ রাজনৈতিক দলে গণতান্ত্রিক চর্চা বিকাশের পথ প্রশস্ত করা প্রয়োজন। রাজনৈতিক কার্যক্রম ও আন্দোলনের আচরণবিধি প্রনয়ণ ও বাস্তবায়ণ করতে হবে যেন এরূপ কার্যক্রমের মাধ্যমে মানুষের মৌলিক অধিকার ও স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত করার অপসংস্কৃতির অবসান হয়। সর্বোপরি ক্ষমতার রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে যে গগণচূম্বী সম্পদাহরণের সুযোগ প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করছে তা নির্মূল করা।প্রয়োজন খুব শীগ্রই।

প্রশাসন, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার ব্যবস্থা, দুর্নীতি দমন কমিশন ও নির্বাচন কমিশনের মত প্রতিষ্ঠানে দলীয় রাজনৈতিক প্রভাব বন্ধ করতে হবে। এই সংস্কারের তালিকা যত দীর্ঘই হোক, এবং আপাত দৃষ্টিতে যত অবাস্তবই মনে হোক না কেন,গণতন্ত্র ও জনস্বার্থে শুরু করতে হবে এখনই।কালক্ষেপনের সময় নেই। এই রাজনৈতিক অচলাবস্থা, একনায়কতন্ত্র, প্রতিহিংসার রাজনীতি বেশিদিন চলতে পারেনা। জনগনকে তাদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে হবে। আর এজন্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার বিকল্প নেই।

রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে সমাধান যে অবশ্যই সম্ভব এটা সকলেই জানে। এজন্য বিশেষজ্ঞ মতামতের কোন প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন নেই কোন বিদেশীদের পরামর্শের কিংবা হহস্তক্ষেপের। দেশের যেকোন একজন সাধারন নাগরিকের দাবীই এরজন্য যথেষ্ট। আর তাই জাতীয় স্বার্থ ও জনগণের প্রত্যাশাকে অন্য সব কিছুর উর্ধ্বে স্থান দিতে হবে। সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ক্ষমতার এই নোংরা রাজনীতি যে কোন মূল্যে বন্ধ করতে হবে।

দূর্নীতি ও বাংলাদেশ

এস এম মামুন তালুকদার, যুক্তরাজ্য

সাধারণ মানুষ প্রতিদিনের জীবনে প্রতিনিয়ত দুর্নীতি এবং অনিয়মের মুখোমুখি হচ্ছে। সরকারি ব্যবস্থাপনায় গলদ থাকাই দুর্নীতি বাড়ার বড় কারণ । বাংলাদেশে দুর্নীতি দমন কমিশন বা দুদকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভূমি, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যখাতে দুর্নীতির অভিযোগ বেড়েছে। মাঠ পর্যায় থেকেই দুর্নীতির অভিযোগ বেশি আসছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে দুর্নীতির হাজার হাজার অভিযোগ করেছে। এমনকি যারা দুর্নীতি বিরোধী আন্দোলনে সোচ্চার তাদের পক্ষ থেকে দুদকের প্রতি অভিযোগ করা হয়েছে বহুবার। তাদের অভিযোগ হলো দুদক সর্বদা রাজনৈতিক বিবেচনার প্রশ্ন আছে এমন বড় বড় ইস্যু এড়িয়ে গিয়ে ছোটখাটো বিষয়ে মামলা নিয়ে ব্যস্ত থাকছে। তবে দুদক তা বরাবরই অস্বীকার করে আসছে।

মাঠ পর্যায় থেকে প্রতিনিয়ত দুর্নীতির অজস্র অভিযোগ পাওয়া যায়। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে দুর্নীতির হাজার হাজার অভিযোগ করছে। তবে মিলছেনা এর প্রতিকার। এছাড়া টিআইবির এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশ দু’ধাপ এগিয়ে এখন ১৫ নম্বরে অর্থাৎ সূচকে অগ্রগতি হলেও দুর্নীতি দমনে গুণগত কোন পরিবর্তন আসেনি।

বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে যদিও জানানো হয়েছে দুর্নীতি দমনে বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে ব্যাপক অগ্রগতির কথা। তবে বাস্তবচিত্রে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। কেননা এখনো সঠিকভাবে অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে সরকারি এবং বেসরকারি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তথা পুরো দেশ জুড়ে দুর্নীতি ভয়াবহ পর্যায়েই রয়েছে।

ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের রিপোর্ট অনুযায়ী ২০০১ থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর বাংলাদেশ ছিল বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ। এরপরে ২০০৬ সালে তৃতীয়, ২০০৭ সালে সপ্তম ও গত বছর ছিল ১৩ তম অবস্থানে।

নানা উদ্যোগ আর দুর্নীতি দমন কমিশন সক্রিয় থাকার পরেও দুর্নীতি প্রতিরোধ কেন করা যাচ্ছে না তার দায় সরকারের উপরেই বর্তাবে।  সরকারী বেসরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি সেবা গ্রহীতাদের সচেতন হওয়াও অনেক জরুরী।

কেননা সরকারের পক্ষ থেকে যা-ই বলা হোক না কেন দুর্নীতি প্রসঙ্গে যারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে সেই পুলিশ বাহিনীও আজ প্রশ্নবিদ্ধ। তারা মানুষের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ। এছাড়া পুলিশ বাহিনীর পর মানুষের বেশি অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে রাজউক, পাসপোর্ট অফিস, আয়কর অফিস কিংবা বিআরটিএর মতো সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো। এসব সরকারী অফিসগুলোরই যদি এই অবস্থা হয় তাহলে স্বায়ত্তশাসিত বা বেসরকারি অফিসগুলোতে কি হচ্ছে তা সহজেই অনুমেয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজনের কাছ থেকে জানা যায়,  রাজউক নিয়ে তার অভিজ্ঞতা মোটেও সুখকর নয়। তার কাছ থেকে জানা গেছে, রাজউকে টাকা ছাড়া কোন কাজই হয়না। তার মতো এরকম অনেকেই অহরহ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। অথচ সরকারের মুখে সেই একই মুখস্ত বুলি দুর্নীতি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে।

মোহাম্মদ সোহেল নামক একজন ব্যক্তিগত গাড়ির চালকের সাথে কথা বলে জানা গেছে,  বিআরটিএ তে দালাল ছাড়া কাজ করানোই কঠিন। সরকারের নাকের ডগা দিয়ে সর্বত্রই চলছে ঘুষ বানিজ্য আর দালালির রমরমা ব্যবসা। আর সরকারী আমলারাও এই সুযোগে হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। ঘুষের টাকায় তারা টাকার পাহাড় গড়ে তুলছে খুব সহজেই।

এরপর যদি পাসপোর্ট অফিসগুলোর কথা বলা হয় সেখানেও দেখা যাবে পরিস্থিতি  কিছুটা পরিবর্তন হলেও সেখানেও রয়েছে দুর্নীতির চর্চা। কয়েকটি পাসপোর্ট অফিস ঘুরে দেখা যায়, যারা নতুন আবেদনকারী তাদের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনে বেগ পেতে হয়, ঘুষ দিতে হয় তবেই মেলে পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট।  আর ঢাকার বাইরের পাসপোর্ট কার্যালয়গুলো নিয়েও রয়েছে দুর্নীতির অসংখ্য  অভিযোগ।

অন্য আরেক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, পিরোজপুরে তার তিন আত্মীয়ের পাসপোর্ট করাতে ৩৩ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। এমনকি তার নিজের ও স্ত্রীর পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনে আসা পুলিশকে এক হাজার টাকা দিতে হয়েছে। এছাড়াও দুর্নীতির আরেকটি বড় ক্ষেত্র হলো আয়কর অফিস গুলো, যা উঠে এসেছে একজন আয়কর আইনজীবীর কথায়।

আর এসব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিলে এটাই বলাই যায় যে সরকারি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দুর্নীতির মাত্রা ব্যপক এবং ভয়াবহ রকম বিস্তৃত।

বাকশালী সরকারের তথ্য সন্ত্রাস ও অন্যান্য

মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য থেকে

দেশ নায়েক তারেক রহমানের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের সূত্র ধরে কিছু কথা বলবার প্রয়োজন রয়েছে। এই একনায়ক শেখ হাসিনা সরকার যেভাবে অবলীলায় মানুষের ব্যাক্তিগত তথ্য প্রকাশ করছে, পাচার করছে কিংবা ইতরামীর চূড়ান্ত করছে তা বর্ণনাতীত।

একটা পলিটিকালি ইনকারেক্ট কিংবা নৈতিকতার মাপকাঠিতে অন্যায় কাজকে যখন সঠিক বলে বার বার চেষ্টা করা হয় তখন এই সমাজ ব্যবস্থা, এই রাষ্ট্র এগুলো নিয়ে হতাশ হতেই হয়। বলছি দেশ নায়েক তারেক রহমানের প্রাইভেট ডকুমেন্ট প্রকাশের ব্যাপারটি নিয়ে। গতকাল এই বিষয়ে আমি একটি অনুষ্ঠানে এবং একই সাথে মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ফেসবুকে আমি আমার বক্তব্য পেশ করেছি। তারপর যেই অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে সেটির জন্য হয়ত আমি মানসিক ভাবে প্রস্তুত ছিলাম বলে সহজ ভাবে নিতে পারছি সব কিছু কিন্তু এই প্রজন্মের তরুন কিংবা পলিটিকালি সচেতন ব্যক্তিদের ভাবনা আমাকে রীতিমত ব্যাথা দিয়েছে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ফেসবুকে আমি মন্তব্য করবার পর নুরুল টিপু নামে একজন আওয়ামী দাস যিনি লন্ডনে থাকেন, তিনি আমাকে খুব তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে একটি মন্তব্য দিয়েছেন। আমাকে নোংরা সব গালাগালে নানাবিধ আখ্যায় আখ্যায়িত করেছেন। আমাকে তিনি অকথ্য ভাষায় গাল দিয়ে নিজের শিক্ষার প্রমাণ দিয়ে তার উপর আমাকে অশিক্ষিত ও মূর্খ বলেছেন। আমাকে তিনি মূর্খ বলেছেন, এতে করে আমার দুঃখ নেই। আমার তো মনে হয় এই অসীম পৃথিবীর অনেক কিছু না জানা আমি আসলে মূর্খই। কেন তিনি এইভাবে কথা বলছেন বা বলার চেষতা করেছেন আমি জানিনা। জানবার প্রয়োজন বোধ-ও করছিনা। টিপু ভাই তাঁর মগজের বা চিন্তার ধারনের বাইরে যেতে পারবেন না, বা সেটি তাঁর পক্ষে সম্ভব নয় হয়ত। ফলে আমার চিন্তাকে তিনি একটি সুনির্দিষ্ট উপমায় বেঁধে ব্যক্তিগত আক্রমণে যাবেন, এটা বুঝতে পারাটা খুব সম্ভবত কষ্টের নয়।

তিনি স্পস্ট করে বলেছেন যে রাজনীতি বিদ্দের ব্যাপারে প্রাইভেট বলে কিছু নেই। শুধু তিনিও নন, অনেকেই একটি কথা বার বার বলছেন যে বি এন পি চ্যালেঞ্জ করেছে বলেই ব্যাক্তিগত তথ্য প্রকাশ বাঞ্ছনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, আমি এসব শুনে ও পড়ে কি যুক্তি দেব সেটিও ভুলে গেছি।

দেশ নায়েক তারেক রহমান তার নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন বলে দাবী করেছিলেন। আর সেটির প্রতিবাদ করেছিলো বি এন পি। তারা এই প্রতিবাদের পাশাপাশি খুবই সঠিক উপায়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছে। আমি খুব এপ্রিশিয়েট করেছিলাম তাদের এই স্টেপ কে। আওয়ামীলীগের মত লগি বৈঠা দিয়ে মানুষ না মেরে, খুন না করে, পেট্রোল বোম না মেরে, তাদের মত হত্যা না করে, গ্রেনেড না ছুঁড়ে আইনী পথে মোকাবেলা করতে চাওয়াকে এপ্রিশিয়েট করাই উচিৎ।

আর এই আইনী চিঠিকে আইনী পথে মোকাবেলা না করে একেবারে টিপিকাল কলতলার ঝগড়ার মত প্রতি মন্ত্রী সাহেব, কয়েকজন ব্যাক্তির ব্যাক্তিগত তথ্য প্রকাশ করেছেন বি এন পি’র চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবার জন্য।

বিরোধী পক্ষের উষ্কানিতে যদি রাষ্ট্র তার গতিপথ বদলায়, অন্যায় করে তাহলে এটি অনেক বড় পরাজয়। রাষ্ট্র হবে সহনশীল, রাষ্ট্র তাঁর নিজের প্রনীত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে। মনে রাখতে হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেমন আওয়ামীলীগ সমর্থকের প্রধানমন্ত্রী ঠিক তেমনি করে বি এন পি বা জামাতের সমর্থকদেরও প্রধানমন্ত্রী। তিনি সকলের জন্য। তিনি রেগে গেলে, আমরা সবাই হেরে যাব। তিনি ভুল করলে আমরা সবাই লজ্জা পাব কিংবা ক্ষতিগ্রস্থ হব। এগুলো অনুধাবন করতেই হবে।

এই যে তথ্যগুলো প্রকাশ করা হোলো, সেটি কি শুধু তারেক রহমানের তথ্যই প্রকাশ করা হলো? উত্তর হচ্ছে না, তা নয়। এখানে তারেক রহমানের আন্ডার এইজ একটি মেয়ের হোম অফিসের রেফারেন্স রয়েছে, তার স্ত্রী রয়েছেন, মইনুল নামে আরেকজন ভদ্রলোক রয়েছেন।

সবচাইতে বড় কথা হচ্ছে হোম অফিসের এই এলেইজড চিঠি দিয়ে প্রতিমন্ত্রীর ভাষ্য একেবারেই প্রমাণিত হয়না। হোম অফিস যে চিঠি দিয়েছে, তাতে করে কখনোই প্রমাণিত হয়না তারেক রহমান নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন কি করেন নি। আমি সেসব টেকনিকাল আলোচনায় একেবারেই যাচ্ছিনা। এসব নিয়ে মন্তব্য করবার রুচী আমার নেই।

আমি শুধু যে কথাটি বার বার বলবার চেষ্টা করছি তা হলো, আমরা এই প্রজন্ম আমাদের দেশের চলমান যে পলিটিকাল ট্রেন্ড, এটির পরিবর্তন চাই।

দেশ নায়েক তারেক রহমান সম্পূর্ণভাবে আমার পলিটিকাল আদর্শের নেতা, তিনি আমার আদর্শ। তার রাজনৈতিক বক্তব্য, তার চিন্তা, তার পলিটিকাল মুভমেন্ট আমি এসবের সকল কিছুর সাথেই আমি একমত এবং তাঁর পথেই আমার যাত্রা। কিন্তু অন্যদিকে আওয়ামীলীগের উঠতি নেতা প্রধানমন্ত্রী পূত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমি অপছন্দ করি, তার আদর্শ আমার ভালো লাগেনা। সে আমার বিরুদ্ধ স্রোতের যাত্রী। কিন্তু এই যে আমি একমত নই কিংবা তার বিরুদ্ধ স্রোতের যাত্রী, এটিকে আমি কিভাবে ট্যাকেল করব? কিভাবে আমি সজীবের সাথে লড়াই করব? আমি কি তার সাথে রিভলবার দিয়ে লড়াই করব? তলোয়ার দিয়ে করব? চাপাতি দিয়ে করব? পুলিশ দিয়ে করব? ছুরি দিয়ে করব? গালাগাল দিয়ে করব? তার ব্যাক্তিগত তথ্য প্রকাশ করে করব?

আমার উত্তর হচ্ছে, না। আমি সজীবের আদর্শের সাথে লড়াই করব আমার প্রজ্ঞা দিয়ে। আমার মেধা দিয়ে। আমার মঙ্গল বিবেচনাবোধ দিয়ে, আমার নৈতিকতা দিয়ে, আমার শিক্ষা দিয়ে।

আমরা যদি আমাদের দেশের চলমান পলিটিকাল ট্রেন্ড গুলো পরিবর্তন না করতে পারি, আমরা এত পড়াশোনা, এত বই পড়ে যদি টিপিকাল নোংরা রাজনীতি করি তাহলে এই দেশ আমাদের অভিশাপ দেবে।

এত বছর ব্রিটেনে থেকে, এত এত দেশে ঘুরে, এত এত অভিজ্ঞতা নিয়ে, এত এত বই পড়ে আমি তাহলে কি শিখলাম? আমি আমার শিক্ষার প্রতিফলন এই দেশের রাজনীতিতে রাখতে চাই। আমার মেধার প্রমাণ আমি দিতে চাই একটা সুস্থ রাজনীতির ধারা চালু করে।

আমি যদি লেখালেখি করে এই প্রজন্মের কাছে ঘৃণার বাণীই উগড়ে দেই, কাউকে পরিবর্তন করতে না পারি তাহলে কি প্রয়োজন এসব লেখালেখির? যদি তরুনরা আমাদের দেখে না শেখে তাহলে, আমাদের এই শিক্ষা, আমাদের এই অভিজ্ঞতার সামান্যতম মূল্য রইবে না।

উত্তর প্রজন্মে আমার নাম ঘৃণার অক্ষরে লেখা থাকবে। ঠিক যেমন এই মুহুর্তে আওয়ামীলীগের নাম ঘৃণার অক্ষরে লেখা হচ্ছে, ঠিক তেমন।

পদত্যাগে বাধ্য করার কৌশল হিসেবে ডি জি এফ আই অপহরণ করলো প্রধান বিচার পতি এস কে সিনহার বন্ধু অনিরুদ্ধ রায় কে

মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য থেকে

পারিবারিক বন্ধু অনিরুদ্ধ রায়কে ডি জি এফ আই অপহরণ করেছে সরকারের সাথে প্রধান বিচার পতি এস কে সিনহার বিরোধের কারণে। অনিরুদ্ধ রায় বাংলাদেশে বেলারুশ প্রজাতন্ত্রের অনারারি কনসাল এবং একই সাথে তিনি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আর এম এম গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সরকারের সর্বোচ্চ কতৃপক্ষের নির্দেশে এই অপহরন। জানা গেছে, প্রধান বিচারপতিকে ফাঁসাতে তার নামে দুর্নীতি, টাকা পাচারের গল্প ও দলিল তৈরী করতেই অনিরুদ্ধকে অপহরন। খুব সহসাই সেগুলো তৈরী করে প্যদান বিচারপতিকে ব্লাকমেল করার চেষ্টা করা হবে। তবে সিনহা বাবু যেভাবে ক্ষেপে আছেন এবং তিনি যে কঠের প্রকৃতির মানুষ, তাতে কতটা কাজ দিবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। তবে একজন কূটনীীতককে এভাবে অপহরনের শিকার হওয়ায় কূটনৈতিক পাড়ায় তোলপাড় পড়ে গেছে।

গত রবিবার বিকেলে অনিরুদ্ধ কুমার রায়কে গুলশান থেকে অপহরন করার ২৪ ঘণ্টা পার হলেও তার কোন সন্ধান দিতে পারেনি পুলিশ। অনিরুদ্ধ রায়ের ভাগ্নে কল্লোল রায় ওই ঘটনায় গুলশান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। পরিবারের একটি সূত্র জানায়, রোববার বিকালে গুলশান-১-এ নিজের গাড়িতে ওঠার সময় ৭-৮ জন লোক এসে নিজেদের একটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য পরিচয় দিয়ে অনিরুদ্ধ কুমার রায়কে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়।

গুলশান থানার ওসি আবু বকর সিদ্দিক জানান, বিকাল ৪টার দিকে গুলশান-১ থেকে অনিরুদ্ধ কুমার রায় নিখোঁজ হয়েছেন বলে জিডিতে বলা হয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত তার অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে তাকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। ব্যবসায়ী অনিরুদ্ধ রায়কে ৭২ গুলশান এভিনিউতে ইউনিয়ন ব্যাংকের সামনে থেকে ২৭ আগস্ট ধরে নেওয়া হয়। ইউনিয়ন ব্যাংকের কার্যালয় থেকে ৯০ মিটার দূরেই গুলশান ১ নম্বর গোলচত্বর। গুলশান-১-এ সিগন্যাল পড়লেই এই রাস্তার গাড়ির সারি ব্যাংকের সামনে পর্যন্ত চলে আসে। ব্যাংকের সামনে দাঁড়ানো নিরাপত্তাকর্মী ফকরুল বলেন, তিনি দেখেননি তবে শুনেছেন এখান থেকে এক সাহেবকে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।

এদিকে পুলিশের একটি সূত্র বলছে, ব্যবসায়িক বিরোধের জের ধরে তাঁকে অপহরণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সরকারদলীয় একজন সাংসদের সঙ্গে অংশীদারের ভিত্তিতে তাঁর ব্যবসা ছিল। সম্প্রতি সেই ব্যবসা নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হয়। পরে ব্যবসার অংশীদারত্ব ভেঙে যায়। তদন্তে বিষয়টিকে সামনে আনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এ ঘটনারও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ রয়েছে। তবে কোনো পেশাদার অপরাধী চক্র তাঁকে ধরে নিয়ে যায়নি বলেই মনে করছেন তদন্তকারী কর্মকর্তারা। অপহরণের ধরন-ধারণ দেখে তাঁদের মনে হয়েছে, বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত লোকদেরই এ ক্ষেত্রে কাজে লাগানো হয়েছে। আর অপহরণকারীরা অপহরণের সময় নিজেদের একটি বিশেষ সংস্থার সদস্য হিসেবেও দাবি করেছিলেন।

জানতে চাইলে গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, ব্যবসায়িক ঝামেলার একটা ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এ ঘটনায় দায়ের করা সাধারণ ডায়েরিতে (জিডি) উল্লেখ করা হয়েছে, বিকেল ৪টা ১৯ মিনিটে তিনি ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে বের হওয়ার সময় গুলশান-১-এ দাঁড়িয়ে থাকা রুপালি রঙের একটি মাইক্রোবাসে থাকা তিনজন লোক তাকে তুলে নেন। অনিরুদ্ধর গাড়িচালক শাহ আলমসহ অন্যরা পুরো বিষয়টি দেখেছেন এবং ইউনিয়ন ব্যাংকের সিসি টিভি ক্যামেরায় এই ফুটেজ ধরা পড়েছে।

স্বাস্বতি রায়, অনিরুদ্ধ রায়ের সহধর্মিণী, এই ব্যাপারে বিস্তারিত কোন কিছু বলতে আগ্রহ দেখান নি। তবে তিনি উল্লেখ করেন, অনিরুদ্ধ রায় সেই সময়ে ব্যাংক এ গিয়েছিলেন একটি ঋণ অনুমোদনের ব্যাপারে কথা বলতে। স্বাস্বতি কাঁদতে শুরু করেন যখন টাকে প্রশ্ন করা হয় যে, এই ব্যাপারে কাউকে সন্দেহ করেন কি না? তিনি শুধু বলতে থাকেন, “আমি কোন কিছু বিস্তারিত প্রকাশ করতে চাই না। আমরা যে ভয়াবহ অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি তা শুধু আমরাই জানি। আপনাদের সহ পুলিশ প্রশাসনের কাছে আমার একটাই অনুরোধ আপনারা অনিরুদ্ধ কে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিন”।