ইউক্রেনকে রকেট দেবে যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনকে আরও তিন হাজার কোটি ডলারের অস্ত্র দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন এই চালানে অত্যাধুনিক রকেট, হাউইটজার কামান ও গোলাবারুদ পাবে ইউক্রেন।

পেন্টাগনের এক কর্মকর্তা সংবাদসংস্থা এপি-কে জানিয়েছেন, ইউক্রেনকে এবার হাইড্রা ৭০ আনগাইডেড রকেট দেওয়া হবে। এই অস্ত্র যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া যায়।

এছাড়া হিমরাস রকেট সিস্টেম থেকে ছোড়া যায় এমন রকেটও দেওয়া হবে। ভবিষ্যতে রাশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা আক্রমণের কাজে তা ব্যবহার করা হবে।

মার্কিন কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই জরুরি ভিত্তিতে এই অস্ত্রগুলো দেওয়ার ক্ষমতা প্রেসিডেন্টের আছে। তাই ইউক্রেনের হাতে তাড়াতাড়ি এসব অস্ত্র পৌঁছে যাবে।

এছাড়া ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, তারা ১০৯ কোটি ডলারের গোলাবারুদ ইউক্রেনকে দেবে।

ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রেজনিকভ জানিয়েছেন, তারা প্রত্যাঘাতের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। এজন্য অস্ত্র, গুলি, গোলা পাওয়াটা খুবই জরুরি।

রাশিয়ার সিদ্ধান্ত

এদিকে রাশিয়াও ক্ষেপণাস্ত্রের উৎপাদন দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, ইউক্রেন প্রত্যাঘাত করতে পারে ভেবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

সেনা কর্মকর্তাদের তিনি বলেছেন, এখন খুব কম সময়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে আঘাত করতে পারে, এমন অস্ত্র বানানোটা খুবই জরুরি।

সূত্র- ডয়চে ভেলে

বিশ্বখ্যাত আরবি ক্যালিগ্রাফারের ইন্তেকাল

বিশ্বখ্যাত আরবি ক্যালিগ্রাফার আব্বাস শাকির জুদি আল-বাগদাদি (৭৫) ইন্তেকাল করেছেন। মঙ্গলবার (২ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়।

ইরাকভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-সুমারিয়া নিউজ চ্যানেল সূত্রে জানা যায়, আব্বাস আল-বাগদাদি ইরাকের মুদ্রা, জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সনদ ও নথিপত্রের নকশা করেছেন। মুসলিম বিশ্বে তিনি আরবি অক্ষরের প্রকৌশলী হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

ক্যালিগ্রাফার আব্বাস আল-বাগদাদি ১৯৪৯ সালে ইরাকের বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেন। ইসলামী অলঙ্করণ ও আরবি ক্যালিগ্রাফিতে তার দীর্ঘ পদচারণ রয়েছে। ১৯৮৮ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত তিনি আরবি লিপিশিল্পীদের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৭ সালে তাকে ‘মাসহাফে সাদ্দাম’খ্যাত পবিত্র কোরআনের অনুলিপি তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়। তখন তিনি নিজ শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় পুরো কোরআনের অনুলিপি তৈরি করেন। পরবর্তী সময়ে ইরাক সরকার কর্তৃক তা প্রকাশিত হয়।

ইউক্রেনের সাত গোয়েন্দা এজেন্টকে গ্রেপ্তার করেছে রাশিয়া: তাস

ক্রিমিয়ায় ইউক্রেনের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত সাতজনকে আটক করা হয়েছে।

বুধবার (৩ মে) রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের (এফএসবি) বরাত দিয়ে রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা তাস এ তথ্য জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে এফএসবি বলেছে, রুশ-সমর্থিত ক্রিমিয়ার গভর্নর সের্গেই আকসিওনভ এবং অন্যান্য কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালাতে তারা ব্যর্থ হয়েছে।

সিকিউরিটি সার্ভিসটি বলছে, ক্রিমিয়াতে বড় ধরনের নাশকতা ও সন্ত্রাসী হামলা চালানোর পরিকল্পনাকারী ইউক্রেনের সামরিক গোয়েন্দাদের একটি এজেন্ট নেটওয়ার্কের কার্যক্রম ভেঙে দিয়েছে এফএসবি।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন শুরুর পর থেকে ক্রিমিয়া বারবার আক্রমণের মুখে পড়েছে। কিয়েভ বারবার ক্রিমিয়ান উপদ্বীপ পুনরুদ্ধারে তার অভিপ্রায় ঘোষণা করেছে।

আরও ৫ জনের করোনা শনাক্ত

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এ পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৪৬ জনের।
এদিন নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন পাঁচজন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৩৮ হাজার ২৫০ জন।

মঙ্গলবার (২ মে) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা বিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আটজন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ পাঁচ হাজার ৬৭২ জন। সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৮৫টি ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৩৯১টি এবং মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৯০টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এক কোটি ৫৩ লাখ ৮৯ হাজার ৭৭৪টি।

গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার এক দশমিক ২৮ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় তিনজন আইসোলেশনে এসেছেন এবং আইসোলেশন থেকে তিনজন ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে এসেছেন চার লাখ ৫২ হাজার ২৯২ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন চার লাখ ২৩ হাজার ৯৮ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২৯ হাজার ১৯৪ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

আরও ১৬ ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে নতুন ১৬ জন রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

বুধবার (৩ মে) স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো ডেঙ্গু বিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন ১৬ জন ডেঙ্গুরোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকায় নয়জন এবং ঢাকার বাইরে সাতজন রোগী রয়েছেন।

বর্তমানে দেশে সর্বমোট ৭৪ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ৫৬ জন এবং ঢাকার বাইরে সারাদেশে ১৮ জন ডেঙ্গুরোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।

২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ৩ মে পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে মোট এক হাজার ৫৩ জন ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে ঢাকায় ৫৬৪ জন এবং ঢাকার বাইরে ৪৮৯ জন রয়েছেন।

একই সময়ে দেশে মোট ছাড়প্রাপ্ত ডেঙ্গুরোগী ৯৬৮ জন। এরমধ্যে ঢাকায় ছাড়প্রাপ্ত রোগী ৫০০ জন এবং ঢাকার বাইরে সারাদেশে ৪৬৮ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি এবং এবছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

গত বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা সর্বমোট ৬২ হাজার ৩৮২ জন এবং ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে মোট ২৮১ জন মারা যান।

জাহাঙ্গীরের বিষয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না আ.লীগ: মায়া

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, গাজীপুর সিটি নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলমের বিষয়ে মাথা ঘামাচ্ছে না আওয়ামী লীগ।

মঙ্গলবার দুপুরে আওয়ামী লীগের সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সমন্বয় টিমের বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ২৫ মে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। এই নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। জাতির নির্বাচনের আগে এ নির্বাচন দেশবাসীর জন্য আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ হওয়ার জন্য আমাদের সবার ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে, সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, গাজীপুরের ভোটার সংখ্যা প্রায় ১২ লাখের কাছাকাছি, ৯টি থানা, ৪৮০ টি কেন্দ্র, ৫৭ ওয়ার্ড। একটা বিশাল এলাকা। নির্বাচন সুষ্ঠু অবাধ করতে গেলে বিশাল কর্মীবাহিনী দরকার। তাই আমরা গাজীপুরে সর্বস্তরের জনগণ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতার পক্ষের সব মানুষকে আমরা ঐক্যবদ্ধ করে এই নির্বাচনে জয়লাভ করতে চাই। ভোটের মধ্য দিয়ে আমরা জয়লাভ করতে চাই৷ সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ, আগুন সন্ত্রাসের মধ্য দিয়ে কেউ যেন নির্বাচনে ক্ষতি করতে না পারে সেজন্য আমাদের কর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে।

গাজীপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের আওয়ামী লীগের সমন্বয় টিমের প্রধান সমন্বয়ক আরও বলেন, নির্বাচন পরিচালনার জন্য সেখানে আমাদের একটি কেন্দ্রীয় কার্যালয় থাকবে। সেখান থেকে আমরা এটা নির্বাচন পরিচালনা করব৷ নির্বাচন পরিচালনার জন্য থানা ভিত্তিক আমাদের কমিটি হবে। সেন্টার ভিত্তিকও কমিটি হবে। এবার স্তরে স্তরে আমরা কমিটিগুলো সাজাবো। ৪৮০ কেন্দ্রের মধ্যে বেশিরভাগ কমিটি হয়ে গেছে। আগামী ৯ তারিখের আগে নির্বাচনের সব কাজ আমরা শেষ করতে পারব বলে আশা করছি। প্রত্যেকে যেন ভোট দিতে পারে সেই ব্যবস্থা আমরা করতে চাই। আশা করি আমাদের নৌকার বিজয় হবে।

যুক্তরাষ্ট্র-সিঙ্গাপুর থেকে ৪ কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার

যুক্তরাষ্ট্র-সিঙ্গাপুর থেকে চার কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার। এই চার কার্গো এলএনজি কিনতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২০১৩ কোটি ৭৬ লাখ ৬৯ হাজার ২০৮ টাকা।

এর মধ্যে সিঙ্গাপুর থেকে তিন কার্গো এবং যুক্তরাষ্ট্র থেকে এক কার্গো এলএনজি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে কেনার অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।

বুধবার (৩ মে) দুপুরে ভার্চ্যুয়ালি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত পৃথক চারটি প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান বলেন, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের এমন/এস এক্সেলারেট এনার্জি এলপির কাছ থেকে এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ৫১৬ কোটি ৪৯ লাখ ৬০ হাজার ৭৩১ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সিঙ্গাপুরের ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ৫০৩ কোটি ৭৩ লাখ ৪০ হাজার ৮৬৫ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

সিঙ্গাপুরের একই প্রতিষ্ঠান থেকে আরেক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ৪৬৫ কোটি ১৭ লাখ ৬৯ হাজার ৫৫৫ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, সিঙ্গাপুরের আরেক প্রতিষ্ঠান এমন/এস গুনভোর সিঙ্গাপুর প্রাইভেট লিমিটেড থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ৫২৮ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৫৭ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

গত ১২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সুইজারল্যান্ডের টোটাল ইঞ্জিনিয়ারিং গ্যাস অ্যান্ড পাওয়ার লিমিটেড থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৫৬২ কোটি ১৫ লাখ ৭৮ হাজার ২৬০ টাকা।

ওই সভায় জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে সুইজারল্যান্ডের এই একই প্রতিষ্ঠান থেকে আরও এক কার্গো বা ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি ৫৬৪ কোটি ২৭ লাখ ৪৩ হাজার ৮৪১ টাকায় আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়।

এর আগে ৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সুইজারল্যান্ডের এই প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৬২৪ কোটি ৪০ লাখ ২৪ হাজার ২৬ টাকা।

এ ছাড়া ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় সুইজারল্যান্ডের এই প্রতিষ্ঠান থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। তখন ব্যয় ধরা হয় ৬১৮ কোটি ২১ লাখ ১৯ হাজার ৪১৯ টাকা। এই এলএনজি জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন পেট্রোবাংলার মাধ্যমে আমদানি করার সিদ্ধান্ত হয়।

চলতি বছরের ২৩ মার্চ অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় যুক্তরাষ্ট্রের এক্সিলারেট এনার্জি এলপি থেকে ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৫৭৮ কোটি ৬৫ লাখ ২৫ হাজার ১২২ টাকা।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি জাপানের জেরা কোম্পানি থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। তখন ব্যয় ধরা হয় ৬৯০ কোটি ৪২ লাখ ৯ হাজার ৩১২ টাকা। মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ এগ্রিমেন্ট বা মিলিত বিক্রয়-ক্রয় চুক্তিতে (এমএসপিএ) সই করা প্রতিষ্ঠান থেকে থেকে কোটেশন সংগ্রহ করে ওই এলএনজি আমদানি করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানিতে খরচ ধরা হয় ১৬ দশমিক ৫০ ডলার।

চলতি বছরের ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় স্পট মার্কেট থেকে এক কার্গো এলএনজি আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়। মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট বা মিলিত বিক্রয়-ক্রয় চুক্তিতে (এমএসপিএ) সই করা প্রতিষ্ঠান থেকে থেকে কোটেশন সংগ্রহ করে ওই এলএনজি আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

জানা গেছে, এলএনজি আমদানির জন্য বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে সরকারের দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি রয়েছে। কিন্তু সরকার খুব সংক্ষিপ্ত সময়ে এলএনজি আমাদিন করতে চায়। এ জন্য ২০১৯ সালে খোলা বাজার থেকে এলএনজি আমদানির লক্ষ্যে এমএসপিএ পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এরই অংশ হিসেবে ২০২১ সালে জাপান, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাজ্য এবং দুবাইয়ের চার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মাস্টার সেল অ্যান্ড পার্চেজ অ্যাগ্রিমেন্ট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না: আইনমন্ত্রী

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক। একইসঙ্গে আইনটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের জন্য নয়, বরং সাইবার অপরাধ দমনের জন্য করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

বুধবার (৩ মে) দুপুরে রাজধারীর ধানমন্ডি মাইডাস সেন্টারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) হলরুমে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস-২০২৩ উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজিত হয়।

মঙ্গলবার (২ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় সম্পাদক পরিষদের দাবির প্রেক্ষিতে জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী বলেন, আমি দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল হবে না। এখন এই আইনে কেউ অভিযোগ করলেই মামলা নেওয়া হয় না। এটি প্রথমে পর্যবেক্ষণের জন্য আমাদের নির্ধারিত সেলে পাঠানো হয়। সেখানে বিষয়টি যুক্তিযুক্ত মনে হলে পরে এটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয় বা আদালতে পাঠানো হয়। মামলা হতে পারে এমন কিছু প্রতিষ্ঠিত না হলে গ্রেপ্তার থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ ভবিষ্যতে প্রণয়ন করা প্রত্যেক আইনে সাংবাদিকদের অধিকার সুরক্ষিত থাকবে বলেও জানান তিনি।

মন্ত্রী বলেন, অনলাইন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দায়িত্বশীলতার ঘাটতি রয়েছে। যার মাধ্যমে সাইবার অপরাধ সংগঠিত হতে পারে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সাইবার অপরাধ দমনে আইন রয়েছে। বাংলদেশেও এর প্রয়োজনীয়তা দেখা দেওয়ায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। যখন ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করা হয় তখন গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন অংশীজনদের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করা হয়েছে। আমাদের কার্যকর পদক্ষেপের কারণে এখন আইনটির অপব্যবহার কমেছে। এটিকে আরও পরিশুদ্ধ করার উদ্যোগ আমরা নিয়েছি। আমরা একটা কমিটি গঠন করেছি, যাতে আইনটির সমস্যাগুলো সমাধান করে সকলের গ্রহণযোগ্য একটা আইন করা যায়।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের জন্য নয় দাবি করে আনিসুল হক বলেন, এ আইন প্রণয়ন করা হয়েছে সাইবার অপরাধ দমনের জন্য। প্রধানমন্ত্রী কখনো সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ করবেন না, তিনিও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চান। এখন ডাটা প্রোটেকশন অ্যাক্টের বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। স্বাধীনতা না থাকলে এগুলো নিয়ে আলোচনায় যেতাম না। আইন হচ্ছে ডাটা প্রোটেক্ট করার জন্য, নিয়ন্ত্রণের জন্য নয়। মুক্তগণমাধ্যম নিশ্চিত করতে আমরা অঙ্গিকারবদ্ধ।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন করার সময় মতামত নেওয়া হয়নি, সম্পাদক পরিষদের এমন দাবির প্রেক্ষিতে মন্ত্রী বলেন, আইনটি যখন করা হয় তখন তারা আমার সঙ্গে আলোচনা করতে আসে। যে পর্যায়ে আলোচনা করতে আসে তখন আইনটি সংসদে চলে যায়। কিন্তু স্ট্যান্ডিং কমিটিতে তারা তাদের বক্তব্য দিয়েছেন, তাদেরকে সে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তখন প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় সবাই আইনটির ব্যপারে ঐক্যমত ছিলেন। তাদের মতামত অনুযায়ী ২১ ধারায় শাস্তি কমানোর বিষয়টি গ্রহণ করা হয়, জামিনযোগ্য এবং অজামিনযোগ্যের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মন্ত্রী আরও বলেন, আমি নিজ উদ্যোগে ডাটা প্রোটেকশন অ্যাক্টের বিষয়ে সকলের সঙ্গে আলোচনা করে যাব। প্রেস কাউন্সিল অ্যাক্ট নিয়েও আলোচনা হবে। আমরা সবসময় আলোচনার দ্বার উন্মুক্ত রাখতে চাই, আলোচনা না করে কিছু হবে না।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধনের চেষ্টা করা হবে। এ আইনে কারো অভিযোগ পর্যবেক্ষণের জন্য যে সেল করা হয়েছে সেটি আইসিটি মন্ত্রণালয় বা আইন মন্ত্রণালয়ে পাবেন না, সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাবেন।

স্বাধীন সাংবাদিকতা করার অধিকার সবার আছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সত্য তুলে ধরার দায়িত্ব আপনাদের। প্রত্যেকটা জিনিসেরই দুইটা দিক থাকে, আপনারা দুটোই তুলে ধরবেন যাতে জনগণ বুঝে নিতে পারে।

মুক্তগণমাধ্যমের সূচকে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের নিচে অবস্থান করছে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যে নীর্ণায়কে বাংলাদেশ আফগানিস্তানের নিচে থাকে, আমার বিষয়ে সেই নির্ণায়কের বিষয়েই সকলের প্রশ্ন থাকা উচিৎ।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামানের সঞ্চালনায় এ সময় আরও বক্তব্য দেন সুইডেনের রাষ্ট্রদূত অ্যালেজান্ড্রা বের্গ ভন লিনডে, ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা ও গণযোগাযোগ বিভাগের অধ্যাপক ড. গীতিআরা নাসরিন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ, ইউনাইটেড ন্যাশনস ইন বাংলাদেশের রেসিডেন্ট কোঅর্ডিনেটর জিউন লিউইস, ইউনেস্কো ঢাকা অফিসের অফিসার ইন চার্জ সুজান ভিজ।

পদ্মা সেতু রেল সংযোগের পরামর্শক ব্যয় বাড়লো ৩০১ কোটি টাকা

পদ্মা সেতু রেল সংযোগের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এর ফলে ৩০১ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানো হয়েছে।

বুধবার (৩ মে) দুপুরে ভার্চ্যুয়ালি অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ মাহবুব খান সাংবাদিকদের বলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘পদ্মা সেতু রেল সংযোগ’ প্রকল্পে নিয়োজিত পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ আর্মি ইন অ্যাসোসিয়েশন উইথ বিআরটিসি, বুয়েটকে মেয়াদ ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ৩০১ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয় বাড়ানোর ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, এ ব্যয় বাড়ানোর ফলে এ খাতের মোট ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ২৪২ কোটি ২৭ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। মেয়াদ বাড়ানোর কারণেই এ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে।

এদিকে গত ৪ এপ্রিল পরীক্ষামূলকভাবে পদ্মাসেতু পার হয় ট্রেন। প্রথম যে ট্রেনটি পদ্মা সেতু পার হয়, তার ইঞ্জিন আনা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। সেটি টেনে নিয়ে গেছে চীন থেকে আনা সাতটি কোচ। ইঞ্জিন ও কোচ ফরিদপুরের ভাঙ্গা প্রান্ত থেকে রওয়ানা হয় দুপুর ১টা ২১ মিনিটে। এরপর প্রথম স্টেশন মালিগ্রামসংলগ্ন বগাইলে পৌঁছায় ১টা ৪১ মিনিটে।

ট্রেনটি গড়ে ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার বেগে চলে। ২টা ১০ মিনিটে শিবচরের পদ্মা স্টেশনে এসে পৌঁছায়। ২টা ৪০ মিনিটে পদ্মা সেতুতে ওঠে। পদ্মা সেতু পার হতে ১৬ মিনিট লাগে ট্রেনের। সব মিলিয়ে ভাঙ্গা থেকে মাওয়া স্টেশন—এই ৪২ কিলোমিটার রেলপথে আসতে ট্রেনের সময় লাগে প্রায় দুই ঘণ্টা। এর আগে ভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনে ফিতা কেটে পরীক্ষামূলকভাবে বিশেষ এ ট্রেন চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন।

পরীক্ষামূলক উদ্বোধনের দিন রেলমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, পুরো প্রকল্পের অগ্রগতি ৭৫ শতাংশের বেশি। আর পুরো প্রকল্পকে তিনটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে। ঢাকা থেকে মাওয়া অংশের অগ্রগতি ৭৪ শতাংশ, মাওয়া থেকে ভাঙ্গা অংশের অগ্রগতি ৯২ শতাংশ এবং ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত অগ্রগতি ৬৮ শতাংশ। তবে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৮২ কিলোমিটার অংশে আগামী সেপ্টেম্বর যাত্রীবাহী রেল চলাচলের আশা করছেন তিনি।

আগামী বছরের জুনে ঢাকা থেকে পদ্মা সেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৭২ কিলোমিটার রেল চলাচল করবে। লেভেল ক্রসিংবিহীন এই রেলপথে ৩২টি রেল কালভার্ট, ৩৭টি আন্ডারপাস এবং ১৩টি রেল সেতুর কাজ শেষ হয়েছে। পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের রেল স্টেশনসহ নতুন ১৪টি স্টেশন নির্মাণ এবং পুরোনো ছয়টি স্টেশন উন্নয়ন চূড়ান্ত পর্যায়ে।

ধর্ম অবমাননা সংক্রান্ত রাষ্ট্রীয় আইনকে কটাক্ষ করার অভিযোগে ফৌজদারী আইনে মামলা

গত ২০ নভেম্বর ২০২২ এ রাজধানীর চিফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে “এথিস্ট এরা” নামক ম্যাগাজিনের সাম্প্রতিক সংখ্যাকে কেন্দ্র করে ম্যাগাজিনের সম্পাদক মোঃ আরমান হোসাইন সহ আরো ১৯ জন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মামলা হয়েছে ফৌজদারী আইনের ২৯৫ ধারার অধীনে। মামলার বাদী মো ইয়াসিন আলম ভূঁইয়া। জানা গেছে এই ম্যাগাজিন দীর্ঘদিন ধরেই অনলাইন সহ অফলাইনে ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে ও বাংলাদেশের যে আইনসমূহ ইসলামী চেতনা ও মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেয় সে-সমস্ত আইন ও বাংলাদেশ সরকারের বিরূদ্ধে ষড়যন্ত্র ও কুৎসা রটিয়ে আসছিলো। চীফ মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের ১৬ নং আদালতে বিচারক জনাব আহমেদ হুমায়ূন কবীর এই মামলাটিকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে সঙ্গায়িত করে পুলিশ বুরো অফ ইনভেস্টিগেশনের পুলিশ সুপারের বরাবরে তদন্তের জন্যে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। জানা গেছে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দেবার তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০২২। এদিকে এই মামলাকে ঘিরে গত কয়েক দিন ধরে কিছু এলাকায় চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা লক্ষ্য করা গেছে। মামলার নম্বর – সি.আর – ২৩৪/২০২২।

মামলার অন্য আসামীরা হলেন- তানভীর আহমেদ, কমল চন্দ্র দাস, জিশান তারভীর মোস্তফা, জোবায়ের হোসেন, এম ডি আসাদুজ্জামান খান রণি, জনি চন্দ্র সাহা, এম ডি মহিউদ্দিন মাসুদ, ইমরুল কায়েস,  মোঃ জাকির হোসাইন,  এমডি জহিরুল ইসলাম, রেদোয়ানুর রহমান, এম ডি রাসেল মিয়া, মোহাইমিনুল বিশ্বাস পারভেজ, আসিফ ইসলাম, কে এম মাহফুজুর রহমান, আবু বকর সিদ্দিক, জনি জোসেফ কস্তা, মোহাম্মদ মইন উদ্দীন চৌধুরী, মোঃ আল আমিন কায়সার, এবং এম ডি আব্দুল রাজ্জাক।

এই ব্যাপারে মামলার বাদী মোঃ ইয়াসিন আলম ভূঁইয়ার সাথে কথা বলা হলে তিনি তাঁর আক্রোশ প্রকাশ করেন মামলার বিবাদীদের বিপক্ষে। তিনি বলেন, “আমরা দেশের আইন মেনে মামলায় এসেছি। এরা শুধু যে ইসলামের বিপক্ষে বলে ক্ষান্ত হচ্ছে তা কিন্তু না, এরা একই সাথে বাংলাদেশ সরকার ও আমাদের প্রাণপ্রিয় আওয়ামী সরকারের আইন ও সংবিধান নিয়ে আক্রমণ করছে বিশেষ করে নাস্তিক ও সমকামীদের বিরূদ্ধে বাংলাদেশে যে প্রচলিত সুন্দর আইন-ব্যবস্থা আছে সেটাকে নষ্ট করবার পায়তাঁরা এই কাফিরদের। আওয়ামী সরকারের একজন সমর্থক ও কর্মী হিসেবেই বলছি যে এদের বিরূদ্ধে কঠোর আইনী ব্যবস্থা না নিলে খুব বিপদে পড়ে যাবেন  আমাদের নেত্রী ভবিষ্যতে।” তিনি আরো ইঙ্গিত দেন যে পুলিশ ও আদালত এই ব্যাপারগুলোতে যথাযথ ব্যবস্থা না নিলে তৌহিদী জনতা নিজেরাই এই কুলাঙ্গারদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। “যথাযথ ব্যবস্থা” বলতে কী বোঝানো হচ্ছে জানতে চাইলে জনাব কাজী এই প্রশ্ন এড়িয়ে যান।

এইদিকে আদালত সূত্রে জানা যায় এই মামলাকে ঘিরে আদালত পাড়ায় ছিলো নিশ্চিদ্র নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও উপচে পড়া ভীড়। আদালত পাড়ায় বাদীর সাথে যুক্ত হওয়া অনেকেই “নারায়ে তাকবীর আল্লাহ হু আকবর” ধ্বনিতে আদালত প্রাঙ্গন মুখরিত করে রাখেন।

পুলিশ সূত্র বর্তমানে এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে অপারগতা জানান। আসামী পক্ষের এইথিস্ট এরা ম্যাগাজিনের সাথে যোগাযোগ করে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।