‘জামায়াত-বিএনপির বি-টিম হেফাজত’

হেফাজতে ইসলামকে বিএনপি-জামায়াতের বি-টিম বলে আখ্যায়িত করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ।তিনি বলেছেন, আজকে হেফাজত, জামায়াত ও বিএনপি এরা এক এবং অভিন্ন। হেফাজত হলো জামায়াত-বিএনপির বি-টিম। এরা প্রত্যেকে স্বাধীনতাবিরোধী।আজকে বিএনপি ও জামায়াত ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। আর এজন্য কিন্তু হেফাজত এই আস্ফালন দেখানোর সুযোগ পেয়েছে।

শনিবার সাংবাদিকদের হানিফ এসব কথা বলেন। এর আগে ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে মেহেরপুরের মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয় এবং মুজিবনগরে নির্মিত শেখ হাসিনা মঞ্চে দাঁড়িয়ে হানিফ জাতীয় পতাকা এবং জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন।

এ সময় জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, জেলা প্রশাসক (ডিসি) মুনসুর আলম খান এবং পুলিশ সুপার (এসপি) এসএম মুরাদ আলী উপস্থিত ছিলেন।

পরে সাংবাদিকদের হানিফ বলেন, ২০১৩ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে যেভাবে মাজা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এই ধর্মব্যবসায়ী এবং যারা এ দেশের রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করে এদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায় তাদের আইনের আওতায় এনে বিষদাঁত উপড়ে ফেলতে হবে। এরপর কণ্টকমুক্ত করে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাব।

হেফাজতকে নিয়ে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, আজকে হেফাজতের নামে যারা আছে, তারা বাংলাদেশের সংবিধানকে মানতে চায় না। তারা জাতীয় সংগীত গাইতে চায় না।তারা জাতীয় পতাকাকে সম্মান করতে চায় না। এরা কারা? যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে এখনো মনে-প্রাণে ধারণ করতে পারেনি, তারাই শুধু এই সংবিধানকে মানতে চায় না। এই অপশক্তি বিএনপির নেতৃত্বে আজকে শক্ত অবস্থায় দানা বেধেছে।

আল জাজিরা সম্পর্কিত প্রবন্ধ প্রকাশের অভিযোগে রাষ্ট্রদোহীতার মামলায় অভিযুক্ত ২৮ঃকঠোর ব্যবস্থা নেয়ার আহবান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়কে

আল-জাজিরা ও মুশতাক আহমদ এর কারাগারে মৃত্যুকে কেন্দ্র করে প্রতিক্রিয়া দেশে-বিদেশে  এখনো চলমান। এ-দুটো বিষয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের মন্তব্য আহবান করে অনলাইন সংবাদপত্রিকা দৈনিক নবযুগ ফেব্রুয়ারীর ২৭ তারিখে। ২২শে মার্চ  ‘আল জাজিরার তথ্যচিত্র, কারাগারে মুশতাকের মৃত্যু ও প্রবাসীদের ভাবনা’ প্রকাশ করে দৈনিক নবযুগ যেখানে অশ্রাব্য ভাষায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিচার বিভাগের বিচারকদের বিশেষ করে সাইবার ট্রাইনবুন্যালের বিচারককে আক্রমণ করা হয় এবং হত্যার হুমকি দেয়া হয়। সবচেয়ে আতঙ্ক-জাগানিয়া ব্যাপার ছিল এই লেখায় অনেকেই মত প্রকাশ করেন যে বাংলাদেশে বহির্বিশ্বের বহিরাক্রমণ করা উচিত আওয়ামী সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করবার জন্যে যা নিশ্চিতভাবেই রাষ্ট্রের স্বাধীনতা খর্ব করবে এবং রাষ্ট্রদোহীতার দোষে এরা প্রত্যেকেই দোষী।
 
 

এই পর্যবেক্ষণের সাথে সম্পূর্ণভাবে সহমতকারী এডভোকেট মোঃ রবিউল আলম জুয়েল, যিনি বঙ্গবন্ধু আইন ছাত্র পরিষদ এর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক, বাদী হয়ে গত ২৮ মার্চ রাজধানীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে  রাষ্ট্রদোহীতা ও অন্যান্য অভিযোগে ফৌজধারী আইনের আওতায়  দৈনিক নবযুগ-এর প্রকাশক, সম্পদাক ও উক্ত প্রবন্ধে প্রমুখ মন্তব্যকারীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন।

মামলার অভিযোগ প্রসঙ্গে বাদীপক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আপেল সাহেব বলেন – ‘এধরণের প্রকাশিত বক্তব্য বাংলাদেশের জন্যে খুবই ক্ষতিকর। বাংলাদেশীদের বিভিন্ন ইস্যুতে অভিযোগ থাকতেই পারে। কোনো সরকার-ই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। কিন্তু বহিরাক্রমণের জন্যে আন্তর্জাতিক মহলকে এভাবে উন্মুক্তভাবে তদবির করা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা অসীম নয়। এটি একটি কোয়ালিফায়েড অধিকার। রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব এইক্ষেত্রে সবসময় অগ্রাধিকার পাবে। আমি মনে করি এটী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি মামলা এবং আমরা আনন্দিত যে বিজ্ঞ আদলাত এই মামলা গুরুত্ব অনুধাবন করে এটি আমলে নিয়েছেন এবং আমরা এখন ডিসি অফিসের সহযোগিতায় এই মামলার তদন্ত পর্যায়ে যাবো আশা করছি।’

আদালত সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে বাদীর জবানবন্দী গ্রহণ করে এবং প্রাসঙ্গিক অভিযোগ পর্যালোচনা করে অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটান  ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ হাসিবুল হক মামলাটি আমলে নেন (সি.আর. – ১২০/২০২১) এবং  বাদীপক্ষকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয়কে অন্তর্ভুক্ত করে অভিযোগ পুনর্গঠন ও জমা দেয়ার আদেশ দিয়েছেন।  

  দৈনিক নবযুগ এর সম্পাদক ইসরাত রশিদ সংক্ষিপ্ত জবাবে জানান – ‘আমরা একটি মন্তব্য জরিপ চালিয়েছি এবং এই মন্তব্য জরিপে প্রবাসী বাংলাদেশীদের দৃষ্টিভঙ্গী উঠে এসেছে। নিজের দেশের নাগরিকদের মন্তব্য আওয়ামী সরকার ও এর সমর্থকদের ভালো না-ই লাগতে পারে, কিন্তু এর মানে তো এ নয় যে – সরকার ও বাংলাদেশের বিভিন্ন বিষয়ে মানুষ তাদের নিজেদের চিন্তা মুক্তভাবে তুলে ধরতে পারবেনা! বাংলাদেশে মুক্তচিন্তার স্বাধীনতা তীব্রভাবে সঙ্কুচিত এবং এই ধরণের মামলা সুস্থ ও অবাধ সাংবাদিকতার পরিপন্থী!’  

এটি পরিলক্ষিত যে এই প্রবন্ধে বেশ কিছু বিএনপি-জামায়াত এর নেতা-কর্মী-সমর্থকদের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে মন্তব্য-জরিপে এবং আওয়ামী লীগ বা সরকার-সমর্থিত কোনো মন্তব্য দেখা যায়নি।  আদালত ফাইলের নথি ঘেটে দেখা যায়  মামলার বিবাদীরা হলেন – শিপলু কুমার বর্মণ, ইসরাত রশিদ (সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), আলী আমিন (প্রকাশক, দৈনিক নবযুগ), জনি জোসেফ ডি কস্তা (সহ-সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), নুরুল হুদা (সিনিয়র সহ সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), মুকিত চৌধুরী, মোঃ ইমরান হোসাইন, বিপ্লব পাল, নূর মিয়া, আহসানুল হুদা সরকার, মোঃ জাকির হোসাইন, মিজানুর রহমান, উম্মা কুলসুম নার্গিস বানু, আহসানুল কবির, নুরুল ফারুক শাকের, মো; বিন রাজিম, মোঃ রুকন মিয়া, মোঃ আশিফ হোসাইন, মোঃ মাসুম সাজ্জাদ, মোঃ আরাথ হোসেন রনি, মোঃ শহীদুল ইসলাম জায়গীরদার, মোঃ ওবায়দুর রহমান খান, মোঃ আল-আমিন কায়সার, মোঃ সাব্বির হোসাইন প্রমুখ।

মামলার পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করা হবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়-এর জবাব প্রাপ্তির পর। 

নিউইয়র্ক স্টেট ও সিটি যুবলীগের অনুষ্ঠানে ব্যাপক হট্টগোল

নিউইয়র্ক স্টেট যুবলীগ ও নিউইয়র্ক সিটি যুবলীগের যৌথ উদ্যোগে নিউইয়র্কের ওজোন পার্কে একটি রেস্টুরেন্টে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করে থাকে । সেখানে প্রধান অতিথির আসন নিয়ে কেন্দ্র করে ব্যাপক হট্টগোল, হাতাহাতি-মারামারি বাঁধার উপক্রম হয় । নিউইয়র্ক স্টেট যুবলীগের আহবায়ক মহি উদ্দীন চৌধুরী ও যুগ্ম আহবায়ক ফরহাদ হোসেন চেয়েছিলেন প্রধান অতিথি করতে চেয়েছিলেন আব্দুল হাসিব আল মামুন যিনি সাংগঠনিক সম্পাদক যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের অপর পক্ষ নিউইয়র্ক সিটি যুবলীগর আহবায়ক রেজাউল আলম অপু ও যুগ্ম আহবায়ক জুনেদ আহমেদ চেয়েছিলেন মোহাম্মদ মোজাহিদুল ইসলাম কে প্রধান অতিথি করতে যিনি মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামীলীগের। এসব নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি, মারামারি বাধার উপক্রম হয়েছিল । সে অনুষ্ঠানের মোট অতিথির সংখ্যা ছিল আনুমানিক ১৫ জনের বেশি না । যুবলীগ করে সে ১৫ জনের মধ্য মাত্র ৫ জন হাতেগোনা পদধারী মাত্র ।অথচ তাদের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি করার কথা ছিল গঠন তন্ত্র অনুযায়ী সে সংগঠনের প্রধানের যিনি জানাব তারিকুল হায়দার চৌধুরী যিনি আহবায়ক যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের আহবায়ক আর প্রধান বক্তা হবার কথা ছিল যুগ্ম আহবায়ক জনাব বাহার খন্দকার সবুজ কে তারা সেটি না করে সিটি যুবলীগ ও স্টেট যুবলীগ করেছেন উনাদের মনগরা অন্যদেরকে যা কিনা একটি সংগঠনের নিয়মনীতি বিরোধী। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগের আহবায়ক জনাব তারিকুল হায়দার চৌধুরীরকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন এ বিষয়ে আমি অবগত নই এবং সিটি ও স্টেট যুবলীগ দীর্ঘদিন ধরে অসহযোগীতা করে আসছে আমাদের এমনকি সাংগঠনিক ভাবে পুরোপুরি নিষ্ক্রীয় । তারা আওয়ামীলীগের গ্রুপিংয়ে জরিয়ে যায় নিজেরা যার ফলশ্রুতিতে দুটি কমিটিই গতিহীন । দুটিকমিটিকে তিন বছর ধরে বলার পরেও সম্মেলনের আয়োজন করতে পারে নি তাদের নিষ্ক্রিয়তার ও কোন্দলের কারণে। এবং যুগ্ম আহবায়ক জানাব বাহার খন্দকার সবুজের সাথে যোগাযোগ করতে পারে নি কারণ উনার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় ।

বিদেশি অতিথিদের স্বাগত জানাতে গিয়ে ছাত্রলীগের মারামারি, আহত ১৪

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঢাকায় সফরে আসা বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধানদের স্বাগত জানাতে ছাত্রলীগ কর্তৃক আয়োজিত আনন্দ র‌্যালিতে মারামারির ঘটনা ঘটেছে।

শুক্রবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার এলাকায় সাউন্ড সিস্টেমে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদের নেতাকর্মীদের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে। এতে প্রায় ১৪ জন আহত হয়েছেন।

শুক্রবার বিকাল চারটায় পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী আনন্দ র‌্যালি করার জন্য কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে জড়ো হতে থাকেন কেন্দ্রীয়, ঢাবি, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তর ছাত্রলীগসহ বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে সাউন্ড বক্সে গান বন্ধ করে স্লোগান দেওয়াকে কেন্দ্র করে হাতাহাতিতে জড়ান সাদ্দাম হোসাইন ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদের অনুসারীরা। এ ঘটনায় দক্ষিণ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদসহ উভয়পক্ষের ১৪ জন আহত হয়েছেন।

হাতাহাতির ঘটনার পর সাদ্দাম হোসাইন তার অনুসারীদের নিয়ে ঢাবির ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের (টিএসসি) ভেতরে অবস্থান নেন এবং র‌্যালিতে যোগ না দিয়ে শেষ মুহূর্তে রাজু ভাস্কর্যের সমাবেশে যোগ দেন। তবে জুবায়ের আহমেদ র‌্যালি ও সমাবেশের কোনোটিতেই যোগ দেননি।

এ বিষয় জুবায়ের আহমেদ যুগান্তরকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে করোনার কারণে ক্যাম্পাস বন্ধ। তাই ক্যাম্পাসের বিভিন্ন প্রোগ্রাম সফল করার জন্য ওদের (ঢাবিকে) সাহায্য করে থাকি। সেই ধারাবাহিকতায় আজও গিয়েছি। যখন সবাই শহিদ মিনারে জড়ো হচ্ছে তখন সাউন্ড সিস্টেমে গান বাজতে ছিল। তাই আমি পাঁচ মিনিটের জন্য সেটি বন্ধ করতে বলেছি। যাতে করে আমার ছেলেদের স্লোগান দিয়ে উজ্জীবিত রাখতে পারি। তাই আমার দুইটি ছেলে অনুরোধ করার জন্য গেলে তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে পাঠিয়ে দেয়। তারপর আমি গিয়ে সাউন্ড বক্সটা বন্ধ রাখার জন্য বললে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা আমাকে হিট (আক্রমণ) করে। তখন ওরে থামাতে গেলে পেছন থেকে এসে আরেকটা ছেলে আমাকে ধরে। এতে আমার গাল কেটে যায়। আর আমাকে সেইভ করতে আসলে আমার প্রায় ৭ জন নেতাকর্মী আহত হয়।

এদিকে হাতাহাতির ঘটনায় আহত ঢাবি ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, জুবায়ের আহামেদ কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের ওপর হামলা চালায়। তখন আমাদের আরও নেতাকর্মীরা গেলে ধস্তাধস্তি হয় এবং জুবায়ের আহমেদও এর মধ্যে পড়ে। আর আমরা যখন ফিরছিলাম তখন সাদ্দাম ভাইয়ের ওপর হামলার চেষ্টা করে তারা।

ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন বলেন, যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের শিক্ষার্থীদের ওপর আক্রমণ করেছে, আমাদের সাউন্ড সিস্টেম ধ্বংস করেছে, কর্মসূচির ব্যানার পোস্টার নষ্ট করেছে তাদের বিরুদ্ধে যাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আমাদের ওপর যে হামলা হয়েছে তাতে সাতজন আহত হয়েছে। আর বিষয়টি আমরা কেন্দ্রকেও জানিয়েছি যাতে তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেয়।

হাতাহাতির ঘটনায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না- জানতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যকে  একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তারা রিসিভ করেননি।

স্বামী-স্ত্রী দুজনই চেয়ারম্যান প্রার্থী

বরগুনার বেতাগীতে একই ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান স্বামীর বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে স্ত্রী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুব আলম সুজন মল্লিক ও তার স্ত্রী জিনাত জাহান দুজনে ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তাদের মনোনয়ন পত্র দাখিল করেন। তারা দুজনই স্বতন্ত্র প্রার্থী।

সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা মো.জাহাঙ্গির আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জানা যায়, উপজেলার মোকামিয়া ইউনিয়নে পরপর দু’বার মাহবুব আলম সুজন আ’লীগের প্রার্থীকে হারিয়ে বিপুল ভোটে চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন। এর মধ্যে প্রথমবার ২০১১ সালে স্বতন্ত্র ও ২০১৬ সালে বিএনপি থেকে মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিজয়ী হন তিনি।
এবারের নির্বাচনে আ’লীগের নতুন মনোনীত প্রার্থী মোকামিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি গাজী জালাল আহম্মেদের সাথে নির্বাচনে প্রতিযোগিতায় মাঠে নেমেছেন তিনি।

এদিকে স্বস্ত্রীক নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করায় এলাকায় ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেশ গুঞ্জন উঠেছে।

তবে বর্তমান চেয়ারম্যান মাহবুব আলম সুজনের স্ত্রী জিনাত জাহান যুগান্তরকে বলেন, স্বামীর সহযোগীতার কারনেই আমি চেয়ারম্যান পদে ফরম ক্রয় করেছি ও দাখিল করেছি। যদি কোন কারনে আমার স্বামীর দাখিলকৃত কাগজপত্রে ত্রটির কারনে বাছাইকালে সমস্যা হয় তবে যাতে পরিবার থেকে আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারি। যদি তার বাছাইকালে কোন সমস্যা না হয় তবে আগামী ২৪ তারিখ আমি প্রার্থীতা প্রত্যাহার করবো।

প্রথম ধাপের ইউপি নির্বাচনে ১১ এপ্রিল ভোটগ্রহন হবে।

এছাড়া এ ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ থেকে জালাল গাজী, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে গাজী নফিজুর রহমান চুন্নু ও আমজাদ হোসেন খানসহ মোট ৫ জন মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।

খোকা থেকে বঙ্গবন্ধু

১৯২০ সালের ১৭ মার্চ। বৃহত্তর ফরিদপুর জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে এক শিশুর জন্ম হলো। নাম খোকা। গ্রামের মানুষ ছাড়া কেউ তার জন্মের কথা জানেনি।

এর পঞ্চান্ন বছর পর যখন সেই খোকার মৃত্যু হলো, স্বাভাবিক মৃত্যু নয়, ঘাতকদলের হাতে মর্মান্তিক মৃত্যু, তখন সারা বিশ্ব শোকে আচ্ছন্ন হয়েছে। তিনি তখন টুঙ্গিপাড়ার খোকা নন, সারা বিশ্বের কাছে পরিচিত একটি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু।

তার মৃত্যুতে ব্রিটেনের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী হ্যারল্ড উইলসন লন্ডনে বসবাসকারী এক বাংলাদেশি নেতার কাছে লেখা চিঠিতে বলেছেন, ‘It is a great national tragedy for you, but a personal tragedy for me.’ (এটা তোমাদের জন্য এক বিরাট জাতীয় ট্র্যাজেডি; কিন্তু আমার কাছে একটি ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি)। ব্রিটিশ হাউজ অব লর্ডস-এর এক মানবতাবাদী সদস্য বলেছেন, ‘পৃথিবীর বহু নেতা তার দেশকে স্বাধীন করেছেন; কিন্তু শেখ মুজিব তার দেশকে দুবার স্বাধীন করেছেন।’

বিশ শতকের সত্তরের দশকের বিশ্বনেতাদের কাছে টুঙ্গিপাড়ার সেই খোকা হয়ে উঠেছিলেন এক অপরাজেয় বীর। ফিদেল ক্যাস্ত্রো তার সম্পর্কে বলেছেন, ‘আমি হিমালয় দেখিনি, শেখ মুজিবকে দেখেছি।’

লন্ডনের সানডে অবজারভারে তাকে বলা হয়েছে ‘পোয়েট অব পলিটিকস’-রাজনীতির কবি। এ কবির ডাকে সাড়ে সাত কোটি মানুষ ঐক্যবদ্ধ হয়ে স্বাধীনতালাভের যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। মধ্যযুগীয় একটি ধর্মীয় রাষ্ট্রের কাঠামো ভেঙে বেরিয়ে এসেছিল স্বাধীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ। যার চারটি রাষ্ট্রীয় ভিত্তি-গণতন্ত্র, জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।

এক মার্কিন সাংবাদিক বিস্ময় প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘আমার কাছে বিস্ময় লাগে, উপমহাদেশটির রাজনীতির ভিত্তিই যেখানে ধর্ম, গান্ধী ও জিন্নার মতো পাশ্চাত্য শিক্ষিত নেতারাও যেখানে ধর্মীয় রাজনীতির প্রভাব এড়াতে না পেরে তার কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন, দেশটাকে ধর্মের ভিত্তিতে ভাগ করেছেন, সেখানে দেশ দুটিতে ধর্মীয় জাতীয়তার উন্মাদনা শেষ না-হতেই নিুমধ্যবিত্ত পরিবারের এক যুবক কী করে ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তার ডাক দিয়ে তার দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করলেন এবং একটি ধর্মনিরপেক্ষ জাতিরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা ঘটালেন। সাবেক মুসলিম লীগপন্থিদের প্রতিষ্ঠান বিএনপি এবং মধ্যপ্রাচ্যের সবচেয়ে প্রতিক্রিয়াশীল আরব শেখদের অর্থে পরিচালিত জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশে একটি গৃহযুদ্ধ বাধাতে সক্ষম বলে অনেকে ভেবেছিলেন। কিন্তু বাঙালি মুসলমানরা তাদের ডাকে সাড়া দেননি। ফলে বিএনপি ও জামায়াতকে গোপন ষড়যন্ত্র ও গোপন হত্যাকাণ্ডের পথে যেতে হয়েছে। তাতে তারা সাময়িক সাফল্য পেয়েছে; কিন্তু স্থায়ী কোনো সাফল্য পায়নি। বাংলাদেশের রাজনীতিতে তারা এখন পরাজিত শক্তি। শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র এখনো একটি নাম সাড়া জাগায়-শেখ সাহেব।’

মার্কিন সাংবাদিকের এ পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত সঠিক। টুঙ্গিপাড়ার খোকা পরে হলেন বাংলাদেশের শেখ সাহেব। তারপর বিশ্বনেতা। এক পর্যায়ে হলেন বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধু থেকে বিশ্ববন্ধু। জুলিও কুরি বিশ্ব শান্তিপদক লাভের সময় টুঙ্গিপাড়ার খোকাকে সম্বোধন করা হলো বিশ্ববন্ধু হিসাবে।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফজলুল হক পরিচিত হয়েছিলেন ‘হক সাহেব’ নামে। হক সাহেব বলা হলে একমাত্র ফজলুল হককে বোঝানো হতো। তেমনি পরবর্তীকালে একটি নাম সারা বাংলায় পরিচিত ও প্রচারিত হয়েছিল, সেটি শেখ সাহেব। শেখ সাহেব বললে আর কোনো শেখকে নয়, একমাত্র শেখ মুজিবুর রহমানকেই লোকে চেনে।

তার জীবনকাল মাত্র পঞ্চান্ন বছর। এ পঞ্চান্ন বছরে তিনি ধর্মনিরপেক্ষ বাঙালি জাতীয়তাবাদকে সুপ্রতিষ্ঠা দিয়েছেন। অবলুপ্ত বাংলাদেশ ও বাঙালি এ দুটি নামের পুনঃপ্রতিষ্ঠা ঘটিয়েছেন। বাংলাদেশ নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্ম দিয়েছেন। বাঙালি নামে একটি স্বাধীন সার্বভৌম বাঙালি জাতির অস্তিত্ব উদ্ধার করেছেন।

কবে কোন পালরাজাদের আমলে বাংলাদেশ স্বাধীন ছিল, তারপর হাজার বছর ধরে বাঙালি দাস জাতি পরাধীন। কখনো দিল্লির ব্রাহ্মশক্তি, কখনো তুর্কি, পাঠান, মোগল, ইংরেজরা; শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের পাঞ্জাবি শাসকরা দেশটাকে তাদের শোষণ ও শাসনের লীলাভূমি করে রেখেছিল। বাংলাদেশের জাতীয় নেতৃত্ব এদিকে বহুদিন দৃষ্টি দেননি। তারা তুরস্কের মধ্যযুগীয় খেলাফত উদ্ধার, অসহযোগ দ্বারা ইংরেজ রাজত্ব উচ্ছেদ ইত্যাদি স্বপ্নে বিভোর ছিলেন।

লক্ষ করার বিষয়, শেখ মুজিবুর রহমান যে বছর (১৯২০) জন্মগ্রহণ করেন, তার আগের বছর (১৯১৯) প্রথম মহাযুদ্ধ শেষ হয়। কথা ছিল যুদ্ধ শেষে ইংরেজরা ভারতবাসীকে স্বায়ত্তশাসনাধিকার দেবে।

তারা প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করায় গান্ধীর নির্দেশে কংগ্রেস অসহযোগ আন্দোলন শুরু করে। অন্যদিকে এ অসহযোগ আন্দোলনকে সহায়তাদানের জন্য ভারতের মুসলমানরা খেলাফত আন্দোলন শুরু করেন। অসহযোগ ও খেলাফত এ যুগপৎ আন্দোলনে অবিভক্ত ভারতের অন্যান্য অংশের মতো অবিভক্ত বাংলাদেশও উত্তপ্ত, সেই উত্তাপের মধ্যে টুঙ্গিপাড়ার খোকার শৈশব ও কৈশোর কাটে। এ রাজনৈতিক উত্তাপ তাকেও স্পর্শ করে।

কৈশোরে নিজের অজান্তেই তিনি মানুষকে ভালোবাসতে শেখেন। সমাজের স্বার্থান্ধ শোষকদের ঘৃণা করতে শেখেন। জমিদার ও জোতদার এবং মহাজনদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে শোষিত গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে তখন থেকেই তাকে দেখা যায়। এ জন্য তিনি কারাবরণও করেছেন। কিশোর মুজিবের মধ্যে এ তেজস্বিতা দেখেই শহীদ সোহরাওয়ার্দী তার প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলেন এবং কলকাতায় তাকে ডেকে এনে তার রাজনীতিতে দীক্ষা দিতে চেয়েছিলেন।

এটা সাধারণ্যে প্রচারিত, বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক গুরু ছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। কথাটা সর্বাংশে সঠিক নয়। শহীদ সোহরাওয়ার্দী শেখ মুজিবের রাজনৈতিক অভিভাবক ছিলেন। কিন্তু শেখ মুজিবের রাজনৈতিক মানস তৈরি হয়েছিল মূলত ফজলুল হক, আবুল হাশিম, সুভাষ বসু ও মওলানা ভাসানীর চিন্তাধারা ও কার্যক্রম দ্বারা। ফজলুল হক সেই সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ডামাডোলের মাঝখানেও প্রথম যে রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন, তার নাম দিয়েছিলেন নিখিল বঙ্গকৃষক প্রজা পার্টি।

ফজলুল হক পরে সাম্প্রদায়িক রাজনীতি করেছেন, কিন্তু প্রথম রাজনৈতিক দল গঠন করেছিলেন অসাম্প্রদায়িক নামে। দলের উদ্দেশ্য ছিল দরিদ্র কৃষক প্রজার দারিদ্র্য মোচন।

ফজলুল হকের প্রথমদিকের রাজনৈতিক চিন্তাধারা কিছুটা হলেও শেখ মুজিবকে প্রভাবিত করেছে। তার প্রমাণ, সুযোগ পাওয়া মাত্র মওলানা ভাসানীর সহযোগিতায় আওয়ামী লীগকে অসাম্প্রদায়িক করা এবং পরে আওয়ামী লীগের নামের সঙ্গে কৃষক শ্রমিক কথাটার মিলও ঘটানো। শেখ সাহেবের রাজনীতিরও মূল উদ্দেশ্য ছিল শোষিতের পক্ষ নিয়ে লড়াই করা। আমার ধারণা, তিনি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ এবং সুভাষ বসুর অসাম্প্রদায়িক জাতীয়তাবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতার আদর্শ দ্বারা প্রভাবিত হন।

১৯৪৭ সালে ভারতভাগের প্রাক্কালে মুসলিম লীগের প্রগতিশীল অংশের আবুল হাশিম এবং কংগ্রেসের শরত বসু মিলে ভারত ও পাকিস্তান ডমিনিয়নের বাইরে যে স্বাধীন যুক্তবাংলা গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন, তা শেখ সাহেবকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে। তিনি তখন থেকেই স্বাধীন বাংলা গঠনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন এবং কলকাতার ইসলামিয়া কলেজে (বর্তমানে মওলানা আবুল কালাম আজাদ কলেজ) ছাত্র থাকাকালেই বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করাসহ স্বাধীন বাংলা গঠনের কথা বিভিন্ন বক্তৃতা-বিবৃতিতে প্রকাশ করেছেন।

পূর্ব পাকিস্তানের রাজনীতিতেও লক্ষণীয়, শেখ মুজিব কখনো শহীদ সোহরাওয়ার্দীর রক্ষণশীল রাজনীতির অভিভাবকত্ব ত্যাগ করেননি, বৃহত্তর রাজনৈতিক কৌশল ও স্বার্থের জন্য। কিন্তু শুরু থেকেই মওলানা ভাসানীর প্রগতিশীল রাজনীতিতে সহযোদ্ধা ছিলেন। রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন, রবীন্দ্রসংগীত রক্ষার আন্দোলন, বাংলা হরফ রক্ষার আন্দোলন, যুক্ত নির্বাচন প্রবর্তনের আন্দোলন ইত্যাদি প্রতিটি আন্দোলনে শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নীতি ও নির্দেশ মানলে এই আন্দোলনগুলোয় তিনি নেতৃত্ব দিতে পারতেন না এবং এই আন্দোলনগুলোও সম্ভবত সফল হতো না।

তিনি যে পরবর্তীকালে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তিদাতা হবেন তার প্রমাণ দেন তার দুই অর্থনীতির আন্দোলনে। তিনিই পাকিস্তান আমলের প্রথম বাঙালি নেতা যিনি ঘোষণা করেন, পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনীতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। সুতরাং পাকিস্তানের দুই এলাকার জন্য দুই পৃথক অর্থনীতি গ্রহণ করতে হবে।

পূর্ব পাকিস্তানে যেহেতু চাষের জমি কম, সে জন্য এই এলাকায় শিল্পোন্নয়নের ওপর জোর দিতে হবে। অন্যদিকে পশ্চিম পাকিস্তানে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ অনেক বেশি, সে জন্য সেখানে কৃষি উন্নয়নের ওপর জোর দিতে হবে। এ দাবির পক্ষে আন্দোলন পরিচালনার জন্য তিনি ‘নতুন দিন’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশ করেন এবং ঢাকার মাহবুব আলী ইনস্টিটিউটে একটি অর্থনৈতিক সম্মেলন করেন। তার এই দুই অর্থনীতির দাবিই কালক্রমে ছয় দফার দাবিতে রূপান্তরিত হয়, যা বাংলাদেশের ম্যাগনাকার্টা বা মুক্তিসনদ নামে আজ পরিচিত। সশস্ত্র মুক্তিসংগ্রামের সূচনা এই ছয় দফা থেকেই।

এটা অত্যুক্তি নয়, ক্ষুদিরামের মতোই তিনি ফাঁসির মঞ্চকে ভয় পাননি। আজকাল অনেক ডান ও বামপন্থি নেতা অভিযোগ তোলেন, শেখ মুজিব তার ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে স্বাধীনতা ঘোষণা করেননি। এ অভিযোগ যারা তুলছেন, সেসব নেতা সেদিন স্বাধীনতা শব্দটি উচ্চারণেও ভীত ছিলেন। বঙ্গবন্ধু সেখানে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছেন: ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

এটা স্বাধীনতার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা না-হতে পারে; কিন্তু এর চেয়ে পরিষ্কারভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা আর কী হতে পারে?

আওয়ামী লীগের জন্ম একটি সাম্প্রদায়িক বুর্জোয়া রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান হিসাবে। মওলানা ভাসানীর সহযোগিতায় শেখ মুজিব সেই দলকে অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলে রূপান্তর করেন।

তারপর আওয়ামী লীগের আবারও চারিত্রিক রূপান্তর ঘটে, যখন সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতাকে আওয়ামী লীগের লক্ষ্য বলে ঘোষণা করা হয়। স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের চরিত্রে আবারও রূপান্তর ঘটান। তার পেটি-বুর্জোয়া চরিত্র ভাঙার জন্য দলের নামে কৃষক শ্রমিক কথা দুটি গ্রহণ করেন এবং দলের বুর্জোয়া চরিত্র সংশোধনের চেষ্টা করেন।

এখানে এসেই বাংলাদেশের রাজনীতিতে বিষাদসিন্ধুর অবতারণা। বঙ্গবন্ধু ও তার সহযোদ্ধাদের নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। নতুন রাষ্ট্রের ধর্মনিরপেক্ষ ও সমাজতন্ত্রী চরিত্র ধ্বংস করা হয়। প্রতিবিপ্লবী শক্তি বাংলাদেশে ক্ষমতা দখল করে। এক্ষেত্রেও একটি বিশেষ ব্যাপার লক্ষণীয়। স্বাধীন বাংলাদেশে মওলানা ভাসানী এবং তার শক্তিশালী ন্যাপ দল তখন বেঁচে থাকা সত্ত্বেও তারা বঙ্গবন্ধুর শূন্য আসনটি দখল করতে পারেননি।

পারেননি মণি সিংহ কমিউনিস্ট পার্টি বা তাদের কোলের মুজাফ্ফর ন্যাপ। স্বৈরাচারবিরোধী সংগ্রামে এবং দেশে অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব দিতে হয়েছে মুজিবকন্যা শেখ হাসিনাকে। সব প্রতিবিপ্লবী চক্রান্ত ব্যর্থ করে; ষড়যন্ত্র, সন্ত্রাস মোকাবিলা করে আওয়ামী লীগই আজ ক্ষমতায়।

গত বছর ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীর বছর। মুজিববর্ষ। এ বছর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী। দুটি ঐতিহাসিক উৎসবই পালিত হয়েছে এবং হচ্ছে আওয়ামী লীগ সরকারের তত্ত্বাবধানে। বঙ্গবন্ধু আজ জাতির পিতার মর্যাদায় সগৌরবে অধিষ্ঠিত। বাংলাদেশ আজ আর তলাবিহীন ঝুড়ি নয়, ভারতসহ প্রতিবেশী দেশগুলোকে টেক্কা মারা একটি দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতির দেশ। শেখ হাসিনা আজ আর শুধু বাংলাদেশের নেতা নয়, সারা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একজন প্রভাবশালী নেতা।

ইতিহাস কী বলে? বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এ দুটি নাম আজ অচ্ছেদ্য। বাংলাদেশের রাজনীতিতে টুঙ্গিপাড়ার খোকা আজ বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতা। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ আত্মাহুতি দিয়েছেন তার নামে, লক্ষ বীরনারী সম্ভ্রম বিসর্জন দিয়েছেন তার ডাকে। ইতিহাসের নিজের হাতে গড়া নেতা তিনি। আবার তিনি নিজের হাতে নতুন ইতিহাস তৈরি করে গেছেন।

ঘড়ি নিয়ে ফখরুলের বক্তব্যে যা বললেন ওবায়দুল কাদের

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ইস্যু খুঁজে না পেয়ে বিএনপি এখন ব্যক্তিগত বিষয়াদি নিয়ে কথা বলছে- যা রাজনৈতিক সৌজন্যবোধের মধ্যে পড়ে না।

তিনি বলেন, তাদের দৃষ্টি এখন কে কী পোশাক পরল, কে কত টাকার ঘড়ি পরল ইত্যাদি। বিএনপি রাজনীতি ভুলে এখন ব্যক্তিগত আক্রমণ শুরু করছে।

ওবায়দুল কাদের রোববার তার সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংকালে এসব কথা বলেন।

বিএনপি জনবিচ্ছিন্ন হয়ে এখন গভীর হতাশায় নিমজ্জিত উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, হতাশার কারণে বিএনপি এখন তীব্র মনপীড়ায় ভুগছে, রাজনীতি ভুলে ব্যবহার্য বিষয় এখন তাদের আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, অন্যের বিরুদ্ধে বলার আগে নিজেদের চেহারা আয়নায় দেখুন।

আওয়ামী লীগ নাকি দেশে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে- বিএনপি নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবও দেন ওবায়দুল কাদের। বলেন, আওয়ামী লীগ নয়, রাজতন্ত্র আর পরিবারতন্ত্র চর্চা বিএনপিরই রাজনৈতিক সংস্কৃতি।

বিএনপির শাসনামলে খালেদা জিয়ার পাশাপাশি এক যুবরাজ সরকারের সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করত, গড়ে তুলেছিলেন বিকল্প ক্ষমতাকেন্দ্র, যাকে বলা হতো দুর্নীতির বরপুত্র।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, অপরদিকে জনগণ চাইলেও প্রধানমন্ত্রী তার সন্তানদের সক্রিয় রাজনীতিতে আনেননি।

রাজতন্ত্র কিংবা পরিবারতন্ত্র তো তারাই প্রতিষ্ঠা করেছে, যারা দলে দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নেতাদের বাদ দিয়ে একজন অপরাধিকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান করে রেখেছে বলে মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।

বিএনপি নেতারা অদৃশ্য সুতার টানে নাচেন বলে মনে করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। বিএনপি সমালোচনার নামে প্রতিদিন সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার এমনকি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে মিথ্যাচার চালাবে, আর এর জবাব দিলে বিএনপির কেন এত গাত্রদাহ হয়- তা জানতে চান, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক।

পরে ওবায়দুল কাদের বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে টাঙ্গাইল মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন। এ সময় তিনি বলেন, ৭ মার্চকে ছোট করার জন্যই বিএনপি ৭ মার্চ পালন করছে।

সুবর্ণজয়ন্তী পালনে তাদের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে ইতিহাসের ফুট নোটকে ইতিহাসের মহানায়ক বানানোর অপচেষ্টা, জাতি এ ষড়যন্ত্র কোনো দিন বরদাশত করবে না বলে মনে করেন তিনি।

ইতিহাসের মীমাংসিত সত্যকে বিকৃত করতে বিএনপি স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করছে বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।

শেখ হাসিনা মানুষের আস্থার বাতিঘর

বিএনপি দেশের জনগণের জন্য এখন কৃত্রিম দরদ দেখাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

দেশের মানুষ বেঁচে থাকার জন্য হিমশিম খাচ্ছে- বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনাকালে অসহায় ও কর্মহীন মানুষের পাশে না দাঁড়িয়ে তারা এখন মায়াকান্না কাঁদছে।

ওবায়দুল কাদের বৃহস্পতিবার তার সরকারি বাসভবন থেকে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।

দেশের মানুষের প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা আছে বলেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মানুষের আস্থার বাতিঘরে পরিণত হয়েছেন, মাদার অব হিউম্যানিটি হয়েছেন উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পক্ষান্তরে বিএনপি জীবন্ত মানুষকে আগুনে পুড়িয়ে মারে আর এখন কৃত্রিম দরদ দেখায়।

তিনি বলেন, বিএনপি আমলে দুর্নীতি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছিল, সে সময়ের সরকার দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকতা করেছিল। বর্তমান সরকারের আমলে দুর্নীতি করে কেউ ছাড় পায় না। যে যত বড় নেতা হোক, এমনকি জনপ্রতিনিধি হলেও জবাবদিহি করতে হয়।

এর আগে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে বাস্তবায়নাধীন বিভিন্ন প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্যালোচনা সভায় তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে যুক্ত হন।

এ সময় তিনি দেশের যেসব এলাকায় নির্মাণাধীন সড়কের কাজ ঢিলেঢালাভাবে চলছে সেসব সড়কগুলো দ্রত শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন। পাশাপাশি বর্ষার আগেই সারা দেশে চলমান সংস্কার কাজগুলোও শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।

বাস রেপিড ট্রানজিট-বিআরটি প্রকল্প নিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্প আমাদের দুর্ভাবনার একটি প্রকল্প। এই প্রকল্প অনেক অর্জনকে ম্লান করে দিচ্ছে। ২০১২ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের সওজ অংশের অগ্রগতি মাত্র ৩৫%। আমি এই ব্যর্থতা সম্মিলিত বলে মনে করি।

তিনি সংশ্লিষ্ট সবাইকে সৎ ও নিষ্ঠার সঙ্গে এই প্রকল্পসহ বিভিন্ন চলমান কাজ মানসম্মত রেখে দ্রুত শেষ করার কঠোর নির্দেশ দেন।

‘আমাদের দেশ একটা তাজ্জবের দেশ’

কারাগারে মৃত্যু হওয়ার ঘটনা নিয়ে বিদেশিদের উদ্বেগ প্রকাশ নিয়ে বাংলাদেশকে তাজ্জবের দেশ বলে আখ্যায়িত করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আবদুল মোমেন।

তিনি বলেন, আমেরিকাতেও বহু লোক জেলে মারা যায়। কিন্তু সেখানে এ ধরনের মৃত্যু নিয়ে কোনো দিন কোনো প্রশ্ন আসে না। আমাদের দেশ একটা তাজ্জবের দেশ। একজন মারা গেলেই, সে কী কারণে মারা গেল, আমরা কিন্তু জানি না, মারা গেলেই তখন এটা নিয়ে বিদেশিরা খুব উদ্বেগ প্রকাশ করেন। দেশের লোক করুক, তাতে আমার কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু বিদেশের লোকগুলো এ ব্যাপারে খুব উদ্বেগ প্রকাশ করেন, এটা একটা তাজ্জবের জায়গা।

যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে সোমবার (১ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কোনো মলে বা বিশ্ববিদ্যালয়ে লোক মারা গেলে যদি বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত উদ্বেগ প্রকাশ করে, তাহলে কোনো মিডিয়া এটা প্রকাশ করবে না। আমাদের দেশে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। আপনারা মিডিয়ার এগুলো বর্জন করা ‍উচিত। ওই লোক এসে এখানে মাতব্বরি করবে কেন? এ ধরনের বিষয় প্রকাশ করা থেকে আপনাদের বিরত থাকা উচিৎ।

সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হবে কি না- সাংবাদিকরা জনতে চাইলে তিনি বলেন, ”আপনারা দিবেন, আমরা সরকারিভাবে এগুলো দিতে পারি না। আমরা যখন বিদেশিদের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করি, তখনও তারা এ নিয়ে সরকারিভাবে কিছু বলে না। পাবলিক নিজে নিজে বুঝে।”

আল-জাজিরার প্রতিবেদন নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র সরকার কিংবা জাতিসংঘের কর্মকর্তারা কোনো প্রশ্ন তুলেছে কি না- প্রশ্ন করা হলে মোমেন বলেন, “বাংলাদেশি টিভি যারা, তারা আমার সাথে এটা নিয়ে আলাপ তুলেছে। আর তুলেছে ভয়েস অব আমেরিকা। বাকি কোনো লোক এটা নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি, আলাপও করেনি। এগুলো বাঙালিদের মাথাব্যথার কারণ,” মন্তব্য করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রে ক্ষমতায় পালাবদলের পর প্রথম সফরে ২২ ফেব্রুয়ারি দেশটিতে যান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন। রোববার রাতে দেশে ফেরেন তিনি।

বঙ্গবন্ধুর সততা থেকে শিক্ষা নিয়ে এগোতে হবে: কাদের

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সততা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। তাঁর সততা থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামীর সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে এগিয়ে যেতে হবে।’
ওবায়দুল কাদের আজ মঙ্গলবার সকালে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী’ উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। তিনি তাঁর সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভায় যুক্ত হন।
সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুরের সভাপতিত্বে সভায় ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদ্‌যাপন জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী, কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়াসহ সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অন্য কর্মকর্তারা।

এদিকে পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের পাবনার চাটমোহর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতিতে বিএনপির আন্দোলন ভাবনায় সংকটের কালো ছায়া ফেলেছে। নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই মানুষের স্বস্তি নষ্ট করার পাঁয়তারা করছে বিএনপি।

আন্দোলন ও নির্বাচনে ব্যর্থতার মতো করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা নিয়েও বিএনপির অপরাজনীতি জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তারা টিকা নিয়ে সংশয় সৃষ্টি এবং দুর্নীতির যে গল্প তৈরির অপচেষ্টা করেছিল, তা হালে পানি পায়নি। ১৩ দিনে ২৩ লাখ মানুষের টিকা গ্রহণ শেখ হাসিনার সুদক্ষ ও দেশপ্রেমিক নেতৃত্বের সোনালি বার্তা।

দেশ–বিদেশে অপপ্রচারের বাক্স খুলে বসা বিএনপি আন্দোলনের নামে আগুন–সন্ত্রাস এবং দেশ ও সরকারবিরোধী আল–জাজিরার অপপ্রচার একই সূত্রে গাঁথা বলে মন্তব্য করেন এই নেতা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে হবে, পকেট কমিটি করা যাবে না। নেতা বানাতে হবে কর্মীদের সমর্থন ও মতামতের ভিত্তিতে।