বয়সের ভাড়ে নুয়ে হওয়া আমেনা বেগম জীবনের ঘানি টানছেন অন্যের বাড়িতে আশ্রিত হয়ে। জায়গা জমি নেই, নেই নিজের মাথা গোঁজার ঠাই। জমিসহ পাকা ঘর পেয়ে আনন্দে অঝোরে কেঁদে ফেলেন। এমন অনেক আনন্দাশ্রু দেখা গেল অনেকের চোখে। বুধবার সকালে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতিকুল ইসলামের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পরিদর্শন করেন।
আমেনা বেগম ইউএনও আতিকুল ইসলামকে কাছে পেয়ে সন্তানের মমতায় জড়িয়ে ধরে বলেন, ‘আমরা তো বাবা গরিব অসহায়। ভাত আনতে পান্তা ফুরায়। আমাগো জমিন অইবো ঘর অইবো এইডা স্বপ্নেও চিন্তা করি নাই। মুজিববর্ষ উপলক্ষে জমিসহ ঘর পেতে যাওয়া সোনারগাঁ উপজেলার বৈদ্যের বাজার ইউনিয়নের খামারগাঁও গ্রামের আমেনা বেগম এমনভাবেই কথাগুলো বলছিলেন।
মুজিববর্ষ উপলক্ষে আমেনা বেগমের মত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই উপহার পাচ্ছেন সোনারগাঁ উপজেলার মোট ১০০ পরিবার। মাথা গোঁজার স্থায়ী আবাসন পেয়ে আনন্দে অশ্রুসজল ভূমিহীন হতদরিদ্র পরিবারগুলো।
জহির মিয়া বলেন, কোনোদিন ভাবিনি পাকা ঘরে বসবাস করব। প্রধানমন্ত্রীর ঘর পেয়ে আমি ও আমার সন্তানেরা খুব খুশি। দুই রুমের এই ঘরে পরিবার-পরিজন নিয়ে ঝড়বৃষ্টিতেও শান্তিতে ঘুমাতে পারব।
প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ উদ্যোগে সোনারগাঁয়ে এসব ঘর নির্মাণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। সরকারি খাস জমির ওপর ভূমিহীনদের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আধুনিক আবাস। এসব অসহায় পরিবারদেরকে শুধু ঘর নয়, ঘরের সঙ্গে রয়েছে রান্নাঘর, টয়লেট ও সামনে খোলা বারান্দা।
ঘর নির্মাণে মান নিশ্চিত করার কথা বিবেচনা করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিয়োগ না করে উপজেলা প্রশাসন নিজেদের তদারকির মাধ্যমে তা নির্মাণ করে দিচ্ছে। ফলে কম খরচে ভাল মানের ঘর নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। প্রতিটি ঘরের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম জানান, আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার- এই স্লোগানকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন প্রকল্প ২-এর আওতায় সোনারগাঁ উপজেলায় ১০০টি ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনের তদারকিতে ঘরগুলোর নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে। প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগে উপজেলার সংশ্লিষ্টরা যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা রেখেছেন। মহান এই কর্মযজ্ঞে সম্পৃক্ত হতে পেরে ধন্য মনে করছি। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরেই এই ঘরগুলো হস্তান্তর করা হবে উপকারভোগীদের মাঝে।