সামিউজ্জামান সিদ্দিকি, যুক্তরাজ্য
কুমিল্লায় যেই মণ্ডপে পবিত্র কোরান শরিফ পাওয়া নিয়ে সারাদেশে দুর্গা পূজার সময় সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা এবং হতাহতের ঘটনা ঘটে সেই মণ্ডপটি গড়ে ওঠে বিএনপির সাবেক মন্ত্রী ও প্রয়াত নেতা আকবর হোসেনের বাড়ির সামনে তাঁর উৎসাহে। (১)
প্রথম আলো লিখেছে, “স্থানীয় লোকজন জানান, ২০০১ সালে তৎকালীন মন্ত্রী আকবর হোসেন তাঁর বাড়ির সামনে নানুয়া দীঘির পাড়ে প্রথম পূজামণ্ডপ স্থাপনের বিষয়ে উৎসাহ দেন। তাঁর দীর্ঘদিনের বন্ধু সুধীর চন্দ্র রায় কর্মকার পূজার আয়োজনের দায়িত্ব পান। এরপর থেকে প্রতিবছরই সেখানে দুর্গাপূজার সময় মণ্ডপ স্থাপিত হতো।”
এই মণ্ডপের সামনে থেকে সেদিন লাইভে গিয়ে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করে মো. ফয়েজ আহমেদ। (২) এই ফয়েজ আহমেদ হচ্ছে ঐ এলাকার আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদ একেএম বাহারউদ্দীনের অনুসারী। কুমিল্লাতে এই সাম্প্রদায়িক হামলার পেছনে একেএম বাহারউদ্দীনের মদদ থাকার বিষয়টা স্পষ্ট করতে ফয়েজের সাথে একেএম বাহারউদ্দীনের একটি ছবি যুক্ত করা হলো।
কুমিল্লা থেকে লাইভ করার পর চাঁদপুরে যে হামলার চেষ্টা চালানো হয় সেটাও হয় স্থানীয় ছাত্রলীগের কর্মীদের নেতৃত্বে। (৩)
এই ব্যাপারে প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়,
“কুমিল্লার ঘটনা নিয়ে ১৩ অক্টোবর বিকেলে ফেসবুকে ঘোষণা দেওয়া হয়, সন্ধ্যায় হাজীগঞ্জ বিশ্বরোড থেকে ‘আন্দোলন’ হবে (…) খোঁজ নিয়ে স্থানীয় সূত্রগুলো থেকে জানা গেছে, চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ পৌর এলাকার বাসিন্দা হৃদয় হাসান ওরফে জাহিদ (২০) ওই স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। তিনি হাজীগঞ্জ পৌর ছাত্রলীগের কর্মী। তাঁর মা শাহিদা বেগম ২০১৪–২০১৯ মেয়াদে হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নারী কাউন্সিলর ছিলেন। আওয়ামী লীগের সমর্থনে তিনি নির্বাচনে জিতেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা অভিযোগ করেছেন, মিছিলে নেতৃত্ব দেওয়া কিশোর ও তরুণেরা পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসানের অনুসারী। জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করে মেহেদী হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘হাজীগঞ্জ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খোকন বলির অনুসারী ও পরিবারের সদস্যরা হামলায় অংশ নিয়েছেন, সেই প্রমাণ আমাদের কাছে আছে।’
স্থানীয় সূত্র জানায়, খোকন বলির পরিবারের একাধিক সদস্য ছাত্রলীগের সঙ্গে জড়িত। তাঁরা হামলায় অংশ নিয়েছিলেন বলে স্থানীয়ভাবে অভিযোগ আছে। তাঁরা বর্তমানে পলাতক।”
অর্থাৎ, দেশে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সাম্প্রদায়িক হামলার পেছনে ছিল আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ। রানা দাশ গুপ্তের মত কট্টর আওয়ামী লীগারও দি ডেইলি স্টারের কাছে স্বীকার করে নিয়েছে এই বলে, “দুঃখজনক হচ্ছে আওয়ামী লীগের স্থানীয় পর্যায়ের অধিকাংশ নেতা-কর্মী এই হামলায় অংশ নেয়।” (৪)
অন্যদিকে পুলিশ কোন তদন্ত ছাড়াই আওয়ামী লীগের নেতাদের নির্দেশে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিচ্ছে। ছয় মাস ধরে কারাবন্দী ছাত্রদলের তিন নেতাকেও সাম্প্রদায়িক হামলার মামলায় আসামী করেছে পুলিশ। (৫)