বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-কে নিয়ে দৈনিক নবযুগ নামক একটি অনলাইন পত্রিকায় কটূক্তি ও হত্যার হুমকি প্রদানের দায়ে গত বৃহষ্পতিবার চট্টগ্রাম সাইবার ট্রাইবুন্যাল আদালতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে বাদী হয়ে আইনজীবী ও বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ (চট্টগ্রাম) এর সদস্য রাসেল সরকার মামলা দায়ের করেন (মামলার নংঃ ৩২/২০২১)। উক্ত মামলাতে লেখক, প্রকাশক ও সকল বক্তব্য প্রদানকারীকে আসামী করে মোট ২৯ জনের বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।
এ মামলায় অভিযুক্তরা হলেনঃ ইসরাত রশিদ (সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), আলী আমিন (প্রকাশক, দৈনিক নবযুগ), জনি জোসেফ ডি কস্তা (সহ-সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), নুরুল হুদা (সিনিয়র সহ সম্পাদক, দৈনিক নবযুগ), নূর মোহাম্মদ (উপদেষ্টা), মোঃ শহীদুল ইসলাম, শিপলু কুমার বর্মণ, আবু বকর সিদ্দিকী, মুকিত চৌধুরী, মোঃ আব্দুল রাজ্জাক, কাজী মোশাররফ হোসাইন, আহসানুল হুদা সরকার, এম ডি শাইম, মোঃ জাকির হোসাইন, মিজানুর রহমান, মুসা আহমেদ জায়গীরদার, আহসানুল কবির, নুরুল ফারুক শাকের, মোঃ রাজিম হোসাইন, আরিফুল হক আরিফ, মোঃ মারাজ মিয়া, মোঃ আশিফ হোসাইন, সুবর্ণা রহমান, মোঃ মাসুম সাজ্জাদ, মুমিনুর রাজা চৌধুরী, মোঃ শহীদুল ইসলাম জায়গীরদার, আবু সাঈদ, মোঃ আল-আমিন কায়সার, এবং আব্দুল ওয়াহিদ চৌধুরী ।
এ মামলার বিষয়ে বাদী রাসেল সরকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি আমাদের এ প্রতিবেদককে জানান, “এই মামলার আসামীরা প্রত্যেকে দীর্ঘদিন যাবত অনলাইনে সরকার তথা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা ধরনের ষড়যন্ত্র ও প্রোপাগান্ডা চালাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় তারা দৈনিক নবযুগ নামক একটি অনলাইন পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন ছাঁপায় মার্চ ২০২১-এ। সেখানে তারা যাবতীয় কুৎসিত বানোয়াট এবং অসত্য কথা লিখেছিল কিছু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে যে ব্যাপারে আমি কথা বলতে চাইনা এবং যার প্রেক্ষিতে বোধহয় তাদের বিরূদ্ধে যথোপযুক্ত একটা মামলাও হয়েছিল।
সে মামলার ব্যাপারে সঠিক আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়ে এই পত্রিকা আরো একটি লেখা ছাঁপে বেশ কিছু মন্তব্যসহকারে যেখানে সাধারণ মানুষ ও সংবাদমাধ্যমের বাকস্বাধীনতা রোধ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয় আগের মামলার জের ধরে। মামলা কোর্টে মোকাবিলা না করে গণমাধ্যমে বিচারালয় বসিয়ে দিয়েছে। আর সে লিখাগুলোতে এবং মন্তব্যে সরাসরি আমাদের মাননীয়া প্রধানমন্ত্রী ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে এবং আমাদের জাতির ঋণ যে পরিবারের কাছে – সে শেখ পরিবারকে নিয়ে যাচ্ছেতাই কথাবার্তা লিখা হয়েছে, প্রাণনাশের হুমকি দেয়া হয়েছে। এই প্রতিবেদনে আমাদের সকলের প্রাণপ্রিয়, জাতীর জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গবন্ধু কন্যা, দেশনেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে নানা ধরনের কটূক্তি ও মানহানিকর বক্তব্য প্রদান করেছে।
তারা শুধু কটূক্তিই করেনি, বরং দেশনেত্রী শেখ হাসিনার সরকার ও তাঁর সমগ্র পরিবারকে উচ্ছেদ করার ইচ্ছাও প্রকাশ করেছে। যা খুবই ভয়ঙ্কর, আমাদের বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের একটা অংশ ও এতে করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ণ হয়েছে। এসকল লেখকেরা দেশের বিরুদ্ধে নিরন্তর ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এবং এটি এক ধরনের মহামারি আকার ধারণ করার আগেই বন্ধ করে দিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করা উচিত। এজন্যই বিষয়টিতে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যই মামলাটি করেছি।”
আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলাটি দায়ের হওয়ার পর বিজ্ঞ আদালত সিএমপিকে আগামী জুলাই মাসের মধ্যে এ বিষয়ে তদন্তপূর্বক প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন ৬ই জুনের শুনানিতে।
সিএমপির -এর সাথে যোগাযোগ করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাদের প্রতিবেদককে জানান, “অভিযোগ আসার পর থেকেই আমরা দ্রুততার সাথে কাজ করছি। আদালতের নির্দেশ পাওয়ার পরপরই আমরা একটি ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। আশা করছি দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ তদন্ত সম্পন্ন করতে সক্ষম হবো। আমাদের কাছে বিস্তারিত তদন্ত রিপোর্ট আসলে গণমাধ্যমের মাধ্যমে সবাইকে এ বিষয়ে অবহিত করতে পারবো।”
এ বিষয়ে অভিযুক্তদের সাথে আমাদের এ প্রতিবেদক যোগাযোগ করে তাদের বক্তব্য তুলে ধরার চেষ্টা করলে তাদের কারো সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা সম্ভব হয়নি।