এস এম ইকবাল মাহমুদ,যুক্তরাজ্য
বাংলাদেশে মেঘদল ব্যান্ডের নামে ধর্ম অনুভূতিতে আঘাতের একটা মামলার আবেদন আদালত গ্রহণ করে বাংলাদেশের ‘এলিট’ তদন্তকারী সংস্থা পিবিআইকে সেই মামলা তদন্তের নির্দেশ দিছে যেইটা নিয়ে বাংলার সুশীল সমাজ মামলার আবেদন নিয়ে যে গেছে আদালতে তাকে তুলোধুনা করতেছে।
ধরেন ছোটবেলায় আমরা অসুস্থ হইলে স্কুলে আবেদন করতাম প্রধান শিক্ষক বরাবর ছুটির জন্য। স্যার যদি মনে করতেন যে ছুটি দেয়া যায় দিতেন, যদি মনে করতেন ব্যাপারটা সিরিয়াস না ছুটি দিতেন না।
আবেদন আপনি করতেই পারেন, সেইটা গ্রহণ করা হবে, নাকি হবে না, এইটা তো আদালতের ব্যাপার। এই আদালতপাড়ায় গত দশ বছরে বিএনপি নেতাদের হাজারের উপর আবেদন, রিট পত্রপাঠ খারিজ হয়ে গেছে। বেগম খালেদা জিয়ার জামিনের আবেদন তো শোনারও প্রয়োজন মনে করে না অনেক বিচারক। সেইখানে আদালত এই মামলা গ্রহণ করে পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দিছে।
এইবার আসা যাক মামলার ব্যাপারে। মামলা গ্রহণ করা হইছে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ২৯৫(ক) ধারা এবং ১০৯ ধারায়। এইখানে ২৯৫(ক) ধারাটা হচ্ছে ধর্মীয় অবমাননার। এই ধারাটা বাংলাদেশের আইনে ১৯৭৩ সালে, মানে হচ্ছে আমাদের আম-বাম (আওয়ামী-সিপিবি জোট) আমলে, যখন বাংলাদেশে আম-বামদের ভাষায় “ধর্মনিরপেক্ষতার স্বর্ণযুগ” ছিল।
তাহলে ব্যাপারটা খেয়াল করি। বাংলাদেশের ব্যান্ড মেঘদলের বিরুদ্ধে একটা মামলা হইছে, মামলার আইন শেখ মুজিবের আমলে করা। মামলা নিছে শেখ হাসিনার আমলের আদালত। কিন্তু এইখানে শেখের বাড়ির কোন দোষ নাই। দোষ হচ্ছে সব অ্যাডভোকেট ইমরুল আর ধর্মান্ধদের। “প্রগতিশীল বাংলাদেশ” রক্ষায় যাদেরকে নাকি আবার “নির্মূল” অর্থাৎ তাদের মূল উৎপাটন করে দুনিয়া থেকে নিশ্চিহ্ন করতে হবে।
মেঘদল ব্যান্ডের প্রধান ব্যক্তি হইতেছে আওয়ামী লীগের বেতনভোগী কর্মচারী, মুজিব কমিক্সের সম্পাদক শিবু কুমার শীল। আপনাদের আসলেই মনে হয় যে এই লোকের নামে মামলা করে সেইটা এই আইনজীবী চালাইতে পারবে?
তাহলে ঘটনাটা এইখানে কী?
ঘটনাটা আমি যেইটা বুঝি তা হলো এই মামলাটাকে পুঁজি করে আওয়ামী লীগ মূলত এক ঢিলে দুই পাখি মারবে। ০১) প্রগতিশীলরা এখন শিবু শীলকে বাঁচাতে দৌড়ঝাঁপ করবে, তাদেরকে বুঝানো হবে আওয়ামী লীগ না থাকলে তাদের অস্তিত্ব হুমকিতে পড়বে। ০২) এই সুযোগে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান জনগোষ্ঠীকে দুইটা গালি দেয়ার ব্যবস্থা করে দেয়া হবে। তাই খেয়াল করে দেখেন, সুশীলরা এখন সর্বশক্তি নিয়ে পুরোদমে পিছনে লাগছে এক উঠতি আইনজীবীর যার দায় হয়ত এখানে ৫% আর কথিত ধর্মান্ধদের, যারা হয়তো ফেসবুকে দুই-চারটা কমেন্ট করছে।
অন্যদিকে ৯৫% দায় হচ্ছে যেই শেখ হাসিনা এবং তার নিয়ন্ত্রণে থাকা আদালতের, তাদের নিয়ে আপনি সুশীলদের কোন টু শব্দও করতে দেখবেন না। কারণ এদের চোখে এই দেশে আল্লাহ-রসূল-কালেমা নিয়ে সমালোচনা করা যায়, জিয়া পরিবারের নামে গালাগালি করা যায়, নোবেল বিজয়ীকে সংসদে সুদখোর গালি দেয়া যায়, একজন সাংবাদিককে পাগল বলা যায়- শুধু শেখ পরিবারকে নিয়ে কিছু বলা যায় না। তখন সুশীলদের প্রশ্ন কমন পড়ে না।