বাকশালী সরকারের তথ্য সন্ত্রাস ও অন্যান্য

মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য থেকে

দেশ নায়েক তারেক রহমানের ব্যক্তিগত তথ্য প্রকাশের সূত্র ধরে কিছু কথা বলবার প্রয়োজন রয়েছে। এই একনায়ক শেখ হাসিনা সরকার যেভাবে অবলীলায় মানুষের ব্যাক্তিগত তথ্য প্রকাশ করছে, পাচার করছে কিংবা ইতরামীর চূড়ান্ত করছে তা বর্ণনাতীত।

একটা পলিটিকালি ইনকারেক্ট কিংবা নৈতিকতার মাপকাঠিতে অন্যায় কাজকে যখন সঠিক বলে বার বার চেষ্টা করা হয় তখন এই সমাজ ব্যবস্থা, এই রাষ্ট্র এগুলো নিয়ে হতাশ হতেই হয়। বলছি দেশ নায়েক তারেক রহমানের প্রাইভেট ডকুমেন্ট প্রকাশের ব্যাপারটি নিয়ে। গতকাল এই বিষয়ে আমি একটি অনুষ্ঠানে এবং একই সাথে মাননীয় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ফেসবুকে আমি আমার বক্তব্য পেশ করেছি। তারপর যেই অভিজ্ঞতা আমার হয়েছে সেটির জন্য হয়ত আমি মানসিক ভাবে প্রস্তুত ছিলাম বলে সহজ ভাবে নিতে পারছি সব কিছু কিন্তু এই প্রজন্মের তরুন কিংবা পলিটিকালি সচেতন ব্যক্তিদের ভাবনা আমাকে রীতিমত ব্যাথা দিয়েছে।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ফেসবুকে আমি মন্তব্য করবার পর নুরুল টিপু নামে একজন আওয়ামী দাস যিনি লন্ডনে থাকেন, তিনি আমাকে খুব তীব্র ভাষায় আক্রমণ করে একটি মন্তব্য দিয়েছেন। আমাকে নোংরা সব গালাগালে নানাবিধ আখ্যায় আখ্যায়িত করেছেন। আমাকে তিনি অকথ্য ভাষায় গাল দিয়ে নিজের শিক্ষার প্রমাণ দিয়ে তার উপর আমাকে অশিক্ষিত ও মূর্খ বলেছেন। আমাকে তিনি মূর্খ বলেছেন, এতে করে আমার দুঃখ নেই। আমার তো মনে হয় এই অসীম পৃথিবীর অনেক কিছু না জানা আমি আসলে মূর্খই। কেন তিনি এইভাবে কথা বলছেন বা বলার চেষতা করেছেন আমি জানিনা। জানবার প্রয়োজন বোধ-ও করছিনা। টিপু ভাই তাঁর মগজের বা চিন্তার ধারনের বাইরে যেতে পারবেন না, বা সেটি তাঁর পক্ষে সম্ভব নয় হয়ত। ফলে আমার চিন্তাকে তিনি একটি সুনির্দিষ্ট উপমায় বেঁধে ব্যক্তিগত আক্রমণে যাবেন, এটা বুঝতে পারাটা খুব সম্ভবত কষ্টের নয়।

তিনি স্পস্ট করে বলেছেন যে রাজনীতি বিদ্দের ব্যাপারে প্রাইভেট বলে কিছু নেই। শুধু তিনিও নন, অনেকেই একটি কথা বার বার বলছেন যে বি এন পি চ্যালেঞ্জ করেছে বলেই ব্যাক্তিগত তথ্য প্রকাশ বাঞ্ছনীয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, আমি এসব শুনে ও পড়ে কি যুক্তি দেব সেটিও ভুলে গেছি।

দেশ নায়েক তারেক রহমান তার নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন বলে দাবী করেছিলেন। আর সেটির প্রতিবাদ করেছিলো বি এন পি। তারা এই প্রতিবাদের পাশাপাশি খুবই সঠিক উপায়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছে। আমি খুব এপ্রিশিয়েট করেছিলাম তাদের এই স্টেপ কে। আওয়ামীলীগের মত লগি বৈঠা দিয়ে মানুষ না মেরে, খুন না করে, পেট্রোল বোম না মেরে, তাদের মত হত্যা না করে, গ্রেনেড না ছুঁড়ে আইনী পথে মোকাবেলা করতে চাওয়াকে এপ্রিশিয়েট করাই উচিৎ।

আর এই আইনী চিঠিকে আইনী পথে মোকাবেলা না করে একেবারে টিপিকাল কলতলার ঝগড়ার মত প্রতি মন্ত্রী সাহেব, কয়েকজন ব্যাক্তির ব্যাক্তিগত তথ্য প্রকাশ করেছেন বি এন পি’র চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবার জন্য।

বিরোধী পক্ষের উষ্কানিতে যদি রাষ্ট্র তার গতিপথ বদলায়, অন্যায় করে তাহলে এটি অনেক বড় পরাজয়। রাষ্ট্র হবে সহনশীল, রাষ্ট্র তাঁর নিজের প্রনীত আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকবে। মনে রাখতে হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যেমন আওয়ামীলীগ সমর্থকের প্রধানমন্ত্রী ঠিক তেমনি করে বি এন পি বা জামাতের সমর্থকদেরও প্রধানমন্ত্রী। তিনি সকলের জন্য। তিনি রেগে গেলে, আমরা সবাই হেরে যাব। তিনি ভুল করলে আমরা সবাই লজ্জা পাব কিংবা ক্ষতিগ্রস্থ হব। এগুলো অনুধাবন করতেই হবে।

এই যে তথ্যগুলো প্রকাশ করা হোলো, সেটি কি শুধু তারেক রহমানের তথ্যই প্রকাশ করা হলো? উত্তর হচ্ছে না, তা নয়। এখানে তারেক রহমানের আন্ডার এইজ একটি মেয়ের হোম অফিসের রেফারেন্স রয়েছে, তার স্ত্রী রয়েছেন, মইনুল নামে আরেকজন ভদ্রলোক রয়েছেন।

সবচাইতে বড় কথা হচ্ছে হোম অফিসের এই এলেইজড চিঠি দিয়ে প্রতিমন্ত্রীর ভাষ্য একেবারেই প্রমাণিত হয়না। হোম অফিস যে চিঠি দিয়েছে, তাতে করে কখনোই প্রমাণিত হয়না তারেক রহমান নাগরিকত্ব বর্জন করেছেন কি করেন নি। আমি সেসব টেকনিকাল আলোচনায় একেবারেই যাচ্ছিনা। এসব নিয়ে মন্তব্য করবার রুচী আমার নেই।

আমি শুধু যে কথাটি বার বার বলবার চেষ্টা করছি তা হলো, আমরা এই প্রজন্ম আমাদের দেশের চলমান যে পলিটিকাল ট্রেন্ড, এটির পরিবর্তন চাই।

দেশ নায়েক তারেক রহমান সম্পূর্ণভাবে আমার পলিটিকাল আদর্শের নেতা, তিনি আমার আদর্শ। তার রাজনৈতিক বক্তব্য, তার চিন্তা, তার পলিটিকাল মুভমেন্ট আমি এসবের সকল কিছুর সাথেই আমি একমত এবং তাঁর পথেই আমার যাত্রা। কিন্তু অন্যদিকে আওয়ামীলীগের উঠতি নেতা প্রধানমন্ত্রী পূত্র সজীব ওয়াজেদ জয়কে আমি অপছন্দ করি, তার আদর্শ আমার ভালো লাগেনা। সে আমার বিরুদ্ধ স্রোতের যাত্রী। কিন্তু এই যে আমি একমত নই কিংবা তার বিরুদ্ধ স্রোতের যাত্রী, এটিকে আমি কিভাবে ট্যাকেল করব? কিভাবে আমি সজীবের সাথে লড়াই করব? আমি কি তার সাথে রিভলবার দিয়ে লড়াই করব? তলোয়ার দিয়ে করব? চাপাতি দিয়ে করব? পুলিশ দিয়ে করব? ছুরি দিয়ে করব? গালাগাল দিয়ে করব? তার ব্যাক্তিগত তথ্য প্রকাশ করে করব?

আমার উত্তর হচ্ছে, না। আমি সজীবের আদর্শের সাথে লড়াই করব আমার প্রজ্ঞা দিয়ে। আমার মেধা দিয়ে। আমার মঙ্গল বিবেচনাবোধ দিয়ে, আমার নৈতিকতা দিয়ে, আমার শিক্ষা দিয়ে।

আমরা যদি আমাদের দেশের চলমান পলিটিকাল ট্রেন্ড গুলো পরিবর্তন না করতে পারি, আমরা এত পড়াশোনা, এত বই পড়ে যদি টিপিকাল নোংরা রাজনীতি করি তাহলে এই দেশ আমাদের অভিশাপ দেবে।

এত বছর ব্রিটেনে থেকে, এত এত দেশে ঘুরে, এত এত অভিজ্ঞতা নিয়ে, এত এত বই পড়ে আমি তাহলে কি শিখলাম? আমি আমার শিক্ষার প্রতিফলন এই দেশের রাজনীতিতে রাখতে চাই। আমার মেধার প্রমাণ আমি দিতে চাই একটা সুস্থ রাজনীতির ধারা চালু করে।

আমি যদি লেখালেখি করে এই প্রজন্মের কাছে ঘৃণার বাণীই উগড়ে দেই, কাউকে পরিবর্তন করতে না পারি তাহলে কি প্রয়োজন এসব লেখালেখির? যদি তরুনরা আমাদের দেখে না শেখে তাহলে, আমাদের এই শিক্ষা, আমাদের এই অভিজ্ঞতার সামান্যতম মূল্য রইবে না।

উত্তর প্রজন্মে আমার নাম ঘৃণার অক্ষরে লেখা থাকবে। ঠিক যেমন এই মুহুর্তে আওয়ামীলীগের নাম ঘৃণার অক্ষরে লেখা হচ্ছে, ঠিক তেমন।

তবে কি সরকারী চাকুরী কেবল হাসিনার গুন্ডা ছাত্রলীগের একমাত্র সম্পত্তি?

মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য থেকে

একটি দেশের সরকারী চাকুরীতে শতকরা ৫৬ শতাংশ কোটাময়। এটা রীতিমত ভয়ংকর একটা তথ্য। এই নিয়ম রিভিউ করে এটিকে খুবই সহনশীল পর্যায়ে আনাটা কতটা জরুরী সেটি বলার অপেক্ষা রাখেনা। আওয়ামী বাকশালী একনায়ক সরকার অসভ্য ইতরের মত এটিকে আরো নোংরা পর্যায়ে নিয়ে যাচ্ছে। দিনে দিনে হাসিনার পালিত সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের জন্যই যেন হয়ে উঠছে এই বাংলাদেশ। তার স্তুতি গাইবার জন্য সরকারী চাকুরীতে শুধু ছাত্রলীগের পান্ডারা চাকুরী পাচ্ছে।

মহান মুক্তিযোদ্ধাদের নাতি ও পুতিদের জন্য ৩০% কোটা বরাদ্দের নিয়ম থাকলেও আমি পালটা প্রশ্ন উত্থাপন করতে পারি যে মুক্তিযুদ্ধে নিহত ৩০ লক্ষ কিংবা তারও বেশী শহীদ পরিবার,৪ লক্ষ কিংবা তারও বেশী নির্যাতিত নারীদের পরিবার, মুক্তিযুদ্ধে যান নি কিন্তু সে সময় পাকিস্তানী মিলিটারী ও তাদের সহযোগীদের হাতে পঙ্গু হয়েছেন এমন ব্যাক্তিদের পরিবারের জন্যও কি কোটা বরাদ্দ করা হয়েছিলো? আমি যতদূর জানি যে, না, এমন কোনো কোটা বরাদ্দ নেই। ভুল হলে আমাকে ধরিয়ে দেবেন।

আমি কোটা ক্যাটাগোরিতে জেলা কোটা ও নারী কোটা দেখেছি। এই দুইটি কোটা আমাকে বিষ্মিত করেছে। নারীদের কেন কোটার মধ্যে এনে রাখা হয়েছে? আমার অবজার্ভেশনে এটি নারীদের প্রতি অপমানের সামিল। আমাদের সংবিধানে পরিষ্কারভাবে বলা রয়েছে দেশের সকল নাগরিক সমান অধিকার পাবেন। সকল নারী ও পুরুষ তাঁদের মেধার ভিত্তিতে চাকুরী পাবেন। ইনফ্যাক্ট আমার অবজার্ভেশনে নারীরা পুরুষদের থেকে অনেক বেশী মেধাবী হয়ে থাকেন।

জেলা কোটা কেন থাকবে? এটির ব্যখ্যা কি? পিছিয়ে পড়া জেলা আবার কি? কোন জেলা পিছিয়ে পড়বার জন্য দায় সেক্ষেত্রে কার? এই দায় মেটাতে সরকারী চাকুরীতে ভর্তুকি দিতে হবে কেন?

সরকারী চাকুরী করবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ মেধাবী ব্যাক্তিরা। তাঁদের পরীক্ষাও হবে ঠিক তেমনই স্ট্যান্ডার্ডে।

উপজাতি কোটাই বা থাকবে কেন? এটির যৌক্তিকতা কি? সরকারী চাকুরী করতে এলে যে মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট সেটি সম্পূর্ন ফুলফিল করেই তবে একজন ব্যাক্তি সেই লাইনে এসে দাঁড়াবেন। উপজাতিরা যদি পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী হয়ে থাকে তবে সেই দায় নেবে বাংলাদেশ রাষ্ট্র। এর ক্ষতিপূরণও দেবে রাষ্ট্র। রাষ্ট্রকেই জবাব দিতে হবে যে কেন একটি জাতি পিছিয়ে থাকবে, কেন একটি অংশ পিছিয়ে থাকবে। কিন্তু সেটির কাফফারা দেবার জন্য সরকারী চাকুরীর সিটকে আপনি জিম্মি করতে পারেন না।

কোটা পদ্ধতির অনেকগুলো পাল্টা মানে বের করা যায়। এটিকে বলা যায় করুনা, অনুকম্পা, সুবিধা ইত্যাদি। একজন ব্যাক্তি, যিনি মনে করেন তিনি সরকারী চাকুরীর জন্য উপযুক্ত ও সে মেধা তাঁর রয়েছে তিনি কেন অনুকম্পা নেবেন? কেন তিনি অন্যদের থেকে বেশী সুবিধা নেবেন? এটি বরংচ সেই যোগ্য মনে করা ব্যাক্তির জন্য এক ধরনের অপমান।

মহান মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য এখন যেই সুযোগ সুবিধা রয়েছে সেটি এই চাকুরীর ক্ষেত্রে না বাড়িয়ে অন্য ভাবে দেয়া হোক। একজন মুক্তিযোদ্ধাকে যেমন এখন পেনশন দেয়া হচ্ছে দরকার হলে পেনশন বাড়িয়ে দেয়া হোক, তাঁর থাকবার জন্য ভালো আবাসন তৈরী করা হোক, তাঁর চিকিৎসার জন্য আরো বেশী সুযোগ ও সুবিধা দেয়া হোক কিন্তু তাঁদের নাতি-পুতিরা যুগের পর যুগ কোটা সুবিধা পাবে এটা আমার বিবেচনায় অন্যায় আবদার।

দেশের জন্য যিনি যুদ্ধ করেছেন তাঁকে এই বাংলাদেশ মাথায় তুলে রাখবে। তাঁকে রাষ্ট্র ব্যাক্তিগতভাবে সকল সুবিধা দিবে। দরকার হলে তাঁর পরিবারের কর্মক্ষম ব্যাক্তির জন্য সহজ শর্তে কিংবা একেবারে মিনিমাম লেভেলের রি-পেইমেন্ট শর্তে ব্যবসার জন্য লোন দিতে পারে সরকার কিন্তু সরকারী চাকুরীতে আসবার জন্য হতে হবে চূড়ান্ত রকমের স্মার্ট, মেধাবী, শিক্ষিত, রুচিসম্পন্ন তথা একেবারে সকল ধরনের যোগ্যতায় পরিপূর্ণ হয়ে।

এই যে আমি এই পদ্ধতির কথা বলছি সেটিও কিন্তু এই মহান মুক্তিযোদ্ধাদের-ই স্বপ্ন। এই দেশটিকে তাঁরা সকলের জন্য করে দিতেই ৯ টি মাস জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে গিয়েছিলেন। যে দেশটিকে গড়বার জন্য তাঁরা যুদ্ধে গেলেন, আহত হলেন, নিহত হলেন, সেই দেশে যদি শুধু ৫৬ পার্সেন্ট কোটা-ই থাকে তবে সেই দেশটি কি করে আগাবে?

একটি দেশের সিভিল প্রশাসন হচ্ছে সেই দেশের মেরুদন্ড। এই লেভেলে যত মেধাবী ব্যাক্তিরা থাকবেন বাংলাদেশ ঠিক ততটা আগাবে। এটা কোনো আবেগের কথা নয়, এটা যুক্তির কথা।

এই যে বর্তমানে যে আন্দোলন চলছে এই আন্দোলনটিকে স্বাধীনতাবিরোধীদের ছেলে মেয়েদের আন্দোলন, এটিকে জামাত-বি এন পির আন্দোলন, এটিকে সরকার পতনের আন্দোলন বলে ক্ষমতাশীন দলের অনেক সমর্থক অভিহিত করছেন। এই টেন্ডেন্সি খুবই ভয়াবহ।

১৯৯৬ সালে তত্বাবধায়ক সরকার প্রশ্নে আওয়ামীলীগ, জামায়াত আলাদা আলাদা ভাবে রাজপথে নেমেছিলো। কিন্তু সেদিন যদি সেই আন্দোলনকে বলা হোতো স্বাধীনতাবিরোধীদের আন্দোলন, তাহলে কেমন লাগতো শুনতে? একবার কি সেই প্রোপাগান্ডিস্টরা ভেবে দেখেছেন?

যে কোন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হলে কিংবা ১০ বারো জন লোক এক সাথে হয়ে প্রতিবাদ করলে এই খুনী সরকারের কেন হাঁটু কাপাকাপি শুরু হয় আমি বুঝতে পারিনা। এই তারুণ্যের এই যৌক্তিক দাবী দাওয়াকে অন্যায় ভাবে ঠেকিয়ে এদের দিকে টিয়ার শেল ছুঁড়ে মারা, এদেরকে গুলি করা কিংবা ছাত্রলীগের মাস্তান দিয়ে এদেরকে ঠেঙ্গানো রীতিমত ইতরামি পর্যায়ের কাজ।

আজকের রাজপথের ছেলেটি সামনের বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ। এই দেশের জন্য সামনের সময়ে সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা। তাঁরা কথা বলবেন বাংলাদেশের হয়ে।

আমি এই আন্দোলনরত সকল প্রতিবাদকারীদের পাশে আছি। তাঁদের দাবী দাওয়ার প্রতি আমি সম্পূর্ণ সহমত ব্যাক্ত করছি।

ফ্যাসিবাদী হাসিনা দেশটাকে শেষ করে দিচ্ছে

মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম, যুক্তরাজ্য থেকে

ছবিটা বাংলাদেশের। সাম্প্রতিক ছবি এটা। দেখা যাচ্ছে এক যুবক রাস্তার ধারে ফেলে দেয়া খাবার তুলে খাচ্ছে। পাশেই বাংলাদেশ পুলিশের লোগো ও বাংলায় “পুলিশ” লেখা সহ একটা গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে।

এটাই হাসিনার তথাকথিত উন্নয়ন। বাংলাদেশে অবাধ লুটপাট চলছে। আর একদল প্রতারক মাফিয়া জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে ক্ষমতায় অবৈধভাবে বসে থেকে ফ্যাসিস্ট শাসন চালাচ্ছে, এটা সারা দুনিয়ার মানুষ জানে।

আজ থেকে অনেক বছর পরে বলা হবে এটা একটা সাজানো ছবি এবং আওয়ামী লীগ সরকারকে বিপদে ফেলতে এই ছবি তুলে প্রচার করা হয়েছে। ঠিক যেভাবে আজকে বলা হয় ১৯৭৪ সালে দুর্ভিক্ষের সময় বাসন্তীকে জাল পরিয়ে ছবি তুলে শেখ মুজিব সরকারকে বিপদে ফেলা হয়েছিলো।

বাংলাদেশ রাষ্ট্রটাকে আওয়ামী লীগ গত দশ বছরে ধ্বংস করেছে। ধ্বংস করেছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠার দোহাই দিয়ে। যেভাবে সকল ফ্যাসিস্ট শাসক তার ক্ষমতা ও দমন পীড়নের বৈধতা দেয়ার জন্য কোন আদর্শ প্রতিষ্ঠার দোহাই দেয়। আওয়ামী লীগকে তার এই ফ্যাসিস্ট মিশনে সাহায্য করেছে বাংলাদেশের আরবান মিডল ক্লাস, বাংলাদেশের অধিকাংশ হিন্দু সম্প্রদায় আর সো-কল্ড কালচারাল এলিট এবং, দুর্ভাগ্যজনক ভাবে, বাংলাদেশের বামপন্থীদের বড় অংশ। বাংলাদেশের সেই বামপন্থীরা হাসিনার পিতা শেখ মুজিবের একদলীয় স্বৈরশাসন বাকশালে নিজেদের দলকে বিলীন করেছিলো।

যারাই আওয়ামী শাসনের সমালোচনা করেছে তাদের সবাইকে এই আওয়ামী সমর্থক গোষ্ঠী ইসলামী জঙ্গিবাদী ট্যাগ দিয়ে নির্মূল করেছে।

আওয়ামী শাসন বাংলাদেশকে ভারতের নয়া উপনিবেশ বানিয়েছে। আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসন দীর্ঘায়িত হলে বাংলাদেশ রাষ্ট্র তার স্বাধীন অস্তিত্ব নিয়ে টিকে থাকবে কিনা সন্দেহ।

বাংলাদেশকে বাঁচাতে, বাংলাদেশের মানুষকে বাঁচাতে, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বাঁচাতে সকল দেশপ্রেমিক মানুষের দল মত নির্বিশেষে ঐক্য দরকার। মাতৃভূমিকে ফ্যাসিস্ট দানবের কবল থেকে মুক্ত করা সকল দেশপ্রেমিকের কর্তব্য। সৃষ্টিকর্তা আমাদের এই মহান লড়াইয়ে কামিয়াব হবার তৌফিক দান করুন।