আরও ৫ জনের করোনা শনাক্ত

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে করোনা আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। এ পর্যন্ত দেশে করোনায় মোট মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৪৪৬ জনের।
এদিন নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন পাঁচজন। সব মিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২০ লাখ ৩৮ হাজার ২৫০ জন।

মঙ্গলবার (২ মে) বিকেলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো করোনা বিষয়ক এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, ঢাকা সিটিসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ও বাড়িতে উপসর্গ বিহীন রোগীসহ গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আটজন। এ পর্যন্ত মোট সুস্থ হয়েছেন ২০ লাখ পাঁচ হাজার ৬৭২ জন। সারা দেশে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৮৮৫টি ল্যাবে ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৩৯১টি এবং মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৩৯০টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে এক কোটি ৫৩ লাখ ৮৯ হাজার ৭৭৪টি।

গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষায় শনাক্তের হার এক দশমিক ২৮ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ২৪ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৯৮ দশমিক ৪০ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার এক দশমিক ৪৪ শতাংশ।

এতে আরও জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় তিনজন আইসোলেশনে এসেছেন এবং আইসোলেশন থেকে তিনজন ছাড়পত্র পেয়েছেন। এ পর্যন্ত মোট আইসোলেশনে এসেছেন চার লাখ ৫২ হাজার ২৯২ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়পত্র পেয়েছেন চার লাখ ২৩ হাজার ৯৮ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে আছেন ২৯ হাজার ১৯৪ জন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য মতে, ২০২০ সালের ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের প্রথম রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।

সোহরাওয়ার্দীতে পরিচালকের কক্ষ ঘেরাও চিকিৎসকদের, ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম

শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে দায়িত্ব পালনকারী চিকিৎসকরা নিরাপদ আবাসনের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় কোভিড-১৯ রোগীদের সেবা দেয়া সম্ভব হবে না। এই দাবিতে তারা ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

শনিবার সকালে তারা এই অলটিমেটাম দেন। এ সময় নিরাপদ আবাসনের দাবিতে কোভিড-১৯ রোগীদের সেবায় নিযুক্ত চিকিৎসকরা হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, উপ-পরিচালক ডা. মামুন মোর্শেদ এবং মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও কোভিড ইউনিটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. শাহাদাৎ হোসেন রিপনের কক্ষ ঘেরাও করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক চিকিৎসক বলেন, আমাদের কোনো আবাসনের ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষ করতে পারেনি। অথচ দৈনন্দিন দায়িত্বপালন শেষে বাসায় ফিরতে হবে। একাধিক চিকিৎসকের পরিবারের একাধিক সদস্য আমাদের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়েছেন। অনেক চিকিৎসকের পরিবারের সদস্যরা এভাবে সংক্রমিত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তারপরেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না। আমরা এভাবে আমাদের পরিবারের সদস্যদের ঝুঁকিতে ফেলতে পারি না। তাই আমরা কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছি। এর ভেতরে কোয়ারেন্টিনের কোনো সমাধান না হলে, আমরা কোভিড ইউনিটে আর ডিউটি করব না। তবে হাসপাতালের স্বাভাবিক স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাব।

এ প্রসঙ্গে শহীদ সোহারাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ ও কোভিড ইউনিটের সমন্বয়ক অধ্যাপক ডা. শাহাদাৎ হোসেন যুগান্তরকে বলেন, এমনিতেই আমাদের লোকবল কম। তারপর কোভিডের পাশাপাশি ননকোভিড চিকিৎসাও চলছে। যেহেতু কিছু চিকিৎসক কোভিড চিকিৎসায় নিযুক্ত তাই তাদের নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা থাকা দরকার। কিন্তু মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বাস্থ্যকর্মীদের হোটেলে থাকার ব্যবস্থা বাতিল করেছে। তাই বাধ্য হয়ে তাদের বাসায় থাকতে হচ্ছে। এতে তাদের পরিবারের সদস্যরা স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছেন। তিনি বলেন, চিকিৎসকদের বিষয়টি আমরা কর্তৃপক্ষকে জানাব। পাশাপাশি অন্যান্য হাসপাতালে কী ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে সেটি দেখে পরবর্তীতে করণীয় নির্ধারণ করার চেষ্টা করব।

হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া গণমাধ্যমকে বলেন, চিকিৎসকরা আমাদের ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন, তাদের আবাসিক সমস্যা সমাধানের জন্য। চিকিৎসকদের দাবি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। ইতোমধ্যে আমি স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছি এবং মন্ত্রণালয়কেও এটা জানাব।

প্রসঙ্গত, গত ১২ এপ্রিল রাজধানীর ছয় হাসপাতালে কোভিড-১৯ রোগীদের সেবায় যুক্ত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার জন্য ১৯টি হোটেল নির্ধারণ করে স্বাস্থ্য অধিদফতর। কিন্তু গত ২৯ জুলাই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান স্বাক্ষরিত পরিপত্রে কোভিড রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসকসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের আবাসিক হোটেলের সুবিধা বাতিল করা হয়।

পরিপত্রে বলা হয়, রাজধানী ঢাকার মধ্যে দায়িত্বপালনকারী একজন চিকিৎসক দৈনিক দুই হাজার টাকা এবং ঢাকার বাইরে এক হাজার ৮০০ টাকা, একজন নার্স ঢাকার মধ্যে এক হাজার ২০০ ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে এক হাজার টাকা এবং একজন স্বাস্থ্যকর্মী ঢাকার মধ্যে ৮০০ টাকা এবং ঢাকার বাইরে ৬৫০ টাকা ভাতা পাবেন।