করোনায় আক্রান্তদের ক্ষতিপূরণ পাওয়া ‘অনিশ্চিত’

করোনায় আক্রান্তদের ক্ষতিপূরণ পাওয়া ‘অনিশ্চিত’

করোনায় আক্রান্ত হলে চিকিৎসক-নার্স-পুলিশ-সরকারি কর্মচারীরা বেতন স্কেলের গ্রেডভেদে ৫ থেকে ১০ লাখ টাকা এবং মারা গেলে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত পাবেন। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এমনই একটি পরিপত্র জারি করা হয়েছিল। কিন্তু এখন স্বাস্থ্য ও অর্থ মন্ত্রণালয় বলছে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হলেই শুধু ক্ষতিপূরণ পাবেন সম্মুখযোদ্ধারা। অন্যথায় নয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে পুলিশ অধিদপ্তরের মাধ্যমে করোনায় আক্রান্ত ১০ হাজার পুলিশ সদস্য ইতিমধ্যে ক্ষতিপূরণ পেতে আবেদন করেছেন। এসব আবেদন অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে কি না, তা মন্ত্রণালয়টির কাছে জানতে চেয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেছেন, ‘ওই সিদ্ধান্ত আর বলবৎ নেই।’ একই কথা বলেছেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কিছু কর্মর্কতাও।

কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত রোগীদের সেবায় সরাসরি নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীসহ মাঠ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, সশস্ত্র বাহিনী ও অন্য সরকারি কর্মচারীদের ক্ষতিপূরণ দিতে গত ২৩ এপ্রিল একটি পরিপত্র জারি করেছিল অর্থ বিভাগ। পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারি চাকরিজীবী যাঁরা নিজেরা আক্রান্ত হবেন বা মারা যাবেন, তাঁদের জন্য গ্রেড অনুযায়ী ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এর পরিমাণ ৫ লাখ থেকে ৫০ লাখ টাকা। অর্থাৎ ১৫ থেকে ২০তম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে ৫ লাখ ও মারা গেলে ২৫ লাখ, ১০ম থেকে ১৪তম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে ৭ লাখ ৫০ হাজার এবং মারা গেলে ৩৭ লাখ ৫০ হাজার; ১ম থেকে ৯ম গ্রেডের কেউ আক্রান্ত হলে ১০ লাখ এবং মারা গেলে ৫০ লাখ টাকা পাবেন।

এদিকে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, করোনায় গুরুদায়িত্ব পালনকালে যেসব সরকারি চিকিৎসক মারা গেছেন তাঁদের অনেকের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো ক্ষতিপূরণের আবেদন করা হয়নি। ফলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের টাকা সংশোধিত বাজেটে ফেরত চলে যাবে। এই ক্ষতিপূরণ শুধু সরকারি চিকিৎসকদের জন্য বলেও জানান তাঁরা।

গত বছরের ৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক ভিডিও কনফারেন্সে বলেছিলেন, ‘মার্চ থেকে যাঁরা কোভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধ করছেন, সরকার তাঁদের উৎসাহ দিতে বিশেষ প্রণোদনা দেবে। এ ছাড়া দায়িত্ব পালনের সময় কেউ কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হলে তাঁদের জন্য ৫–১০ লাখ টাকার স্বাস্থ্যবিমা থাকবে। কেউ মারা গেলে স্বাস্থ্যবিমার পরিমাণ পাঁচ গুণ বেশি হবে।’

প্রসঙ্গত, করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরুর দিকে করোনা চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও অন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের সরকারি খরচে হোটেলে থাকা ও খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কিন্তু হোটেলের ভাড়া ও খাবারের অস্বাভাবিক ব্যয় নিয়ে বেশ হইচই হলে পরবর্তী সময়ে সরকার তাঁদের হোটেলে থাকার ব্যবস্থা বাতিল করে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *