আশ্রয়দাতাদের খোঁজে গোয়েন্দারা

আশ্রয়দাতাদের খোঁজে গোয়েন্দারা

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে ধরা পড়া ছিনতাইকারীদের জামিনে বের করতে তৎপর আশ্রয়দাতারা। গ্রেফতারের কিছুদিন পরই নিজস্ব আইনজীবীদের মাধ্যমে গ্রেফতার হওয়াদের ছাড়িয়ে নেয় তারা।

এ কারণে আরও বেপরোয়া হয়ে ওঠে ছিনতাই চক্রের সদস্যরা। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ১০টি আশ্রয়দাতা গ্রুপ রয়েছে। প্রতিটি গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে ৫ থেকে ১০টি ছিনতাই চক্র রয়েছে। সম্প্রতি নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে একাধিক ছিনতাই চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারের পর এমন তথ্য পাওয়ার কথা জানিয়েছেন ডিবি কর্মকর্তারা। তাদের দেয়া তথ্য যাচাই-বাছাই করে এরই মধ্যে মাঠে নেমেছে সংস্থাটির একাধিক টিম। ইতোমধ্যে দুই আশ্রয়দাতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ডিবির এক কর্মকর্তা জানান, জানুয়ারির শেষ ১০ দিনে একজন আশ্রয়দাতাসহ বিভিন্ন ছিনতাই চক্রের অন্তত ৬৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা বলেছে, ‘গ্রেফতার হলেও তাদের চিন্তার কারণ নেই। কারণ আশ্রয়দাতারা তাদের ছাড়িয়ে নেবে।’

ডিবির রমনা বিভাগের এডিসি মিশু বিশ্বাস যুগান্তরকে বলেন, নগরীর বিভিন্ন এলাকায় একাধিক আশ্রয়দাতা গ্রুপ ৮-১০টি ছিনতাই চক্র নিয়ন্ত্রণ করে। চক্রের কোনো সদস্য গ্রেফতার হলে আশ্রয়দাতারা জামিনে বের করতে তৎপর হয়ে ওঠে। এরই মধ্যে কোহিনুর বেগম ওরফে মালা নামে একজন আশ্রয়দাতাকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। মালা এবং তার স্বামী ইয়াসিনের নিয়ন্ত্রণে কয়েকটি ছিনতাই চক্র রয়েছে। ইয়াসিন এখনো পলাতক। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

ডিবির কর্মকর্তারা জানান, সম্প্রতি হাইকোর্ট মাজারসংলগ্ন এলাকায় ছিনতাই চক্রের হাতে খুন হন ডিশ ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম। এ চক্রের ৫ জনকে গ্রেফতারের পর জানা যায়, তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে অন্তত ১০টি করে মামলা রয়েছে। তারা বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হলেও আশ্রয়দাতারা ছাড়িয়ে নেয়।

ডিবি জানায়, মালা ও তার স্বামী ইয়াসিন মুগদা এলাকায় একটি বাসা ভাড়া করে থাকত। তাদের বাসায় ডাকাত ও ছিনতাইকারীরা আশ্রয় নিত। ওই বাসাতেই ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের মালামাল ভাগ-বাটোয়ারা হতো। মালার নিয়ন্ত্রণে থাকা ছিনতাই চক্রের হাতেই খুন হন ডিশ ব্যবসায়ী হামিদুল হক। ডিবির এক কর্মকর্তা জানান, কেউ একবার ছিনতাই চক্রে জড়ালে আর বের হতে পারে না।

বিভিন্ন সময় গ্রেফতার হওয়া ছিনতাই চক্রের সদস্যরা জানিয়েছে, ছিনতাই ছেড়ে দিতে চাইলেও তারা আশ্রয়দাতাদের চাপে পারে না। অনেক টাকা খরচ করে আশ্রয়দাতারা তাদের জামিনে ছাড়িয়ে নেয়। এ কারণে তাদের কথার বাইরে যাওয়া যায় না। তাদের খরচ করা অর্থ পরিশোধের একটা চাপ থাকে।

আশ্রয়দাতাদের কথা না শুনলে আরও বড় ধরনের ঝামেলায় পড়তে হয়। বিশেষ করে মামলায় জড়িয়ে পড়ার কারণে তাদের ফেরার পথ থাকে না। ছিনতাই ছেড়ে দিলে তাদের হত্যার হুমকিও দেয়া হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *